রণবীর সিংয়ের বহু প্রতীক্ষিত ছবি ‘ধুরন্ধর’ অবশেষে ৫ ডিসেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। আদিত্য ধর পরিচালিত এই ছবিকে ঘিরে মুক্তির আগেই তৈরি হয়েছিল তীব্র কৌতূহল। স্টারকাস্ট, বিষয়বস্তু এবং ছবির ব্যাপ্তি সব কিছুর কারণেই। এবং বিতর্কের পসরা তো ছিলই! বড়পর্দায় নামার সঙ্গে সঙ্গেই আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে ‘ধুরন্ধর’।
ছবিটিতে রণবীর সিংয়ের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা যাচ্ছে সঞ্জয় দত্ত, অর্জুন রামপাল, অক্ষয় খান্না, আর মাধবন এবং সারা অর্জুনকে। জানা যাচ্ছে, ছবির গল্প বাস্তব ঘটনাপ্রবাহ, রাজনৈতিক সংঘাত এবং ভারতীয় সেনার গোপন অভিযানের অনুপ্রেরণায় নির্মিত। ফলে শুরু থেকেই ছবিটিকে দেখা হচ্ছিল একেবারে ‘হাই-স্টেকস’ প্রজেক্ট হিসেবে।
তবে মুক্তির আগের দিন কিছুটা অস্বস্তি তৈরি হয়। ৪ ডিসেম্বর দিল্লি ও মুম্বইয়ে নির্ধারিত প্রেস শো প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে বাতিল হয়ে যায়। এর প্রভাব কিছুটা পড়েছিল অ্যাডভান্স বুকিংয়েও। প্রাথমিকভাবে শুরুটা ছিল মাঝারি। যদিও অঘোষিত নানান খবর বলছে, মুক্তির প্রথম দিনের সন্ধ্যার শোগুলিতে দর্শকসংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে।
এর মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবিটি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জমতে শুরু করেছে। একাধিক দর্শক দাবি করেছেন, ‘ধুরন্ধর’ পুরোপুরি 'মাস এন্টারটেনমেন্ট' প্যাকেজ। বিশেষ করে প্রশংসায় ভাসছেন আর মাধবন ও অক্ষয় খান্না। একজন দর্শক এক্স-এ লিখেছেন, “আমি যেটা আশা করিনি, সেটা বলতেই হচ্ছে, ধুরন্ধর-এ আর মাধবনই আসল হিরো। তাঁর সংলাপ উচ্চারণ আর স্ক্রিন প্রেজেন্স দুর্দান্ত।” অন্য এক পোস্টে বলা হয়েছে, “প্রথমার্ধ পুরোপুরি অক্ষয় খান্নার। অন্য পর্যায়ের পারফরম্যান্স।”
যদিও সব প্রতিক্রিয়া সমান প্রশংসামুখর নয়। রণবীর সিংয়ের একটি বাইক চেজ দৃশ্য নিয়ে অনেকে মনে করছেন, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক আরেকটু শক্তিশালী হলে দৃশ্যটি আরও প্রভাব ফেলতে পারত।
মুক্তির দিনে জুহুর এক জনপ্রিয় প্রেক্ষাগৃহে দর্শকদের সঙ্গে দেখা করতেও পৌঁছে যান রণবীর সিং। এই উপস্থিতি ছবির প্রচারে বাড়তি উন্মাদনা জুগিয়েছে। একই সঙ্গে ছবিটি নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন রণবীরের স্ত্রী দীপিকা পাড়ুকোন এবং পরিচালক আদিত্য ধরের স্ত্রী ইয়ামি গৌতম।
এদিকে বিতর্কও মাথাচাড়া দিয়েছে। ছবিতে সঞ্জয় দত্ত অভিনীত করাচির পুলিশ অফিসার চৌধুরী আসলাম চরিত্রের উপস্থাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তাঁর বিধবা স্ত্রী নওরিন আসলাম। তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, চরিত্র বিকৃত করা হলে আইনি পদক্ষেপ নেবেন।
আরও বড় চমক অপেক্ষা করছে ছবির শেষে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ‘ধুরন্ধর’ প্রায় চার মিনিটের পোস্ট-ক্রেডিট দৃশ্যসহ মুক্তি পেয়েছে, যা একে সাম্প্রতিক কালের দীর্ঘতম ভারতীয় ছবিগুলোর মধ্যে ফেলেছে, ‘অ্যানিমাল’ ও ‘পুষ্পা ২’-কেও ছাপিয়ে। এই অংশেই ঘোষণা করা হয়েছে ‘ধুরন্ধর পার্ট ২’, যার মুক্তির তারিখ ১৯ মার্চ ২০২৬।
থিয়েটার রান শেষ হলে ছবিটি জানুয়ারি ৩০, ২০২৫ নাগাদ নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেতে পারে বলে খবর। সব মিলিয়ে, ‘ধুরন্ধর’ শুধু একটি ছবি নয়, এ একটি নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি শুরুর ইঙ্গিত। এখন প্রশ্ন একটাই, বক্স অফিসে শেষ পর্যন্ত কতটা ‘ধুরন্ধর’ প্রমাণ করতে পারেন রণবীর সিং?
