‘প্রজেক্ট প্রমিথিউস’ দলের প্রযোজনায় মঞ্চস্থ হতে চলেছে ‘এমন মানবজমিন’। সুপ্রিতম রায়ের লেখা এই নাটকে এসে মিশেছে টি এস এলিয়ট-এর বিখ্যাত রচনা ‘দ্য ওয়েস্টল্যান্ড’-এর নির্যাস। ডঃ ইন্দুদীপা সিনহা পরিচালিত এই নাটক একদিকে যেমন বলে নারীদের সংগ্রামের কথা, নারীশক্তির অবমাননার কথা, বলে রাষ্ট্রযন্ত্রের দমনপীড়ন নীতির কথা, তেমনই অন্যদিকে ছুঁয়ে থাকে প্রকৃতির কথা-ও। তবে নাটকজুড়ে আঁধার, বিষাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকার পাশাপাশি হদিস রয়েছে আশার আলোর-ও। নাটকে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে শিরিণ পাল, অভ্র ব্যানার্জি সহ দেখা যাবে আরও ১৮জন অভিনেতা-অভিনেত্রীকে। ১৬ নভেম্বর রবিবার সন্ধ্যায় সিএলটি অবন মহলে মঞ্চস্থ হবে ‘এমন মানবজমিন’।
তবে এই নাটকের তৈরি হওয়া পর্বের বীজেই এক দারুণ ঘটনা মিশে রয়েছে। এই নাটক প্রযোজনার নেপথ্যে নেই কোনও প্রাতিষ্ঠানিক অনুদান। বরং একটি গ্রামের প্রান্তিক সীমানায় বসবাসকারী বাসিন্দাদের সৌজন্যেই পথ চলা শুরু হয়েছিল ‘এমন মানবজমিন’-এর। নাটকের পরিচালক ডঃ ইন্দুদীপা সিনহা-র কথায়, “এই নাটকটির ক্ষেত্রে কিন্তু কোনও প্রাতিষ্ঠানিক অনুদানের মুখাপেক্ষী ছিলাম না আমরা। নিজস্ব ব্যক্তিগত উদ্যোগ এবং ক্রাউড ফান্ডিংয়ের সুবাদেই এগিয়েছে এই নাটকের কাজ।” তিনি আরও বলেন, “পূর্ব বর্ধমানের দেবীপুর গ্রামে আমার পৈতৃক বাড়ি। সেখানে আমার একটি চিকিৎসালয় আছে। মান্থলি ফ্রি ক্লিনিক। সেখানে নিখরচায় গ্রামের মানুষদের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে, কারণ সেখানকার অধিকাংশ মানুষেরই টাকা খরচ করে ডাক্তার দেখানোটা তাঁদের পক্ষে রীতিমতো অসম্ভব। তাঁদের কাছে তা প্রায় বিলাসিতার মতোই। সেই গ্রামের মানুষজন কিন্তু আর্থিকভাবে আমাদের এই নাটকের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এই কঠিন সময়েও তাঁদেরও ইনভল্ভমেন্ট রয়েছে এমন মানবজমিন-এ। এই কথাটুকু না স্বীকার না করলে আমাদের এই নাটক সার্থক হবে না।”
নাট্যকার সুপ্রতিম রায়ের কথায়, “প্রশ্ন উঠতেই পারে, কেন এই নাটকটা এই সময়ে আমরা সবাই মিলে মঞ্চস্থ করতে চলেছি? কারণ এই সময়ে যে আগ্রাসনটা আসছে তা প্রান্তিক স্তরের মানুষ এবং মহিলাদের উপরেই আসছে। আমরাও তাঁদের এই শ্রমটাকে পাত্তাই দিই না। এই সমস্যাগুলো কিন্তু প্রতিনিয়ত হচ্ছে এবং তা আমরা দেখতে পাই না। তাই এই বিষয়গুলি নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলতে চেয়েছি আর আমরা এটা একটি শাশ্বত গল্পের মাধ্যমেই তুলে ধরতে চেয়েছি।”
