পরিচালক এস এস রাজামৌলিকে নিয়ে শুরু হল তীব্র বিতর্ক। তাঁর আগামী ছবি ‘বারাণসী’-র নামপ্রকাশ অনুষ্ঠানে তাঁরই করা এক মন্তব্যকে কেন্দ্র করে হায়দরাবাদের সারুরনগর থানায় রাজামৌলির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে! অভিযোগ, পরিচালক নাকি হনুমানকে অপমান করেছেন এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছেন।
ঘটনাটি ঘটে হায়দরাবাদের রামোজি ফিল্ম সিটিতে। অনুষ্ঠান শেষে ‘বানর সেনা’ ও ‘গো রক্ষক সংঘ’ সহ কয়েকটি সংগঠন লিখিত অভিযোগ জমা দেয় থানায়। অভিযোগে বলা হয়েছে, রাজামৌলি নাকি “ইচ্ছাকৃতভাবে হিন্দু দেবতাদের অপমান” করেছেন এবং তাঁর মন্তব্য “ধর্মীয় বিদ্বেষ উস্কে দিতে পারে।”
তা ঠিক কী বলেছিলেন রাজামৌলি?
মঞ্চে দাঁড়িয়েই রাজামৌলি বলেন, “আমি ভীষণ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছি... যাই হোক, আমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করি না। আমার বাবা বলেছিলেন, হনুমানজি সব সামলে নেবে। তাহলে আমার এই সমস্যায় কেন তা হলে হনুমানজি সাহায্য করলেন না? তা এভাবে সামলায়? এটা ভেবেই আমার রাগ হচ্ছে।” আসলে, ওই অনুষ্ঠানে একের পর এক নানান প্রযুক্তিগত নানান সমস্যা হচ্ছিল, যার জেরেই সম্ভবত এই মন্তব্য করেন পরিচালক। বলাই বাহুল্য, রাজামৌলির এমন মন্তব্যেই চারদিকে শোরগোল পড়ে যায়। এরপর তিনি আরও বলেন,“আমার স্ত্রীও হনুমানজিকে খুব ভালবাসে। বন্ধুর মতো কথা বলে ওঁর সঙ্গে। ওকেও রাগ করে বলেছি। তিনি আদৌ দেবতা তো?”
আর এই বাক্যটাই এখন বিতর্কের কেন্দ্রে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ব্যক্তিগত বিশ্বাস নাকি প্রচারের কৌশল?
রাজামৌলি ‘বাহুবলী’ ও ‘আরআরআর’-এর মতো পুরাণ-অনুপ্রাণিত ছবির নির্মাতা। তাই তাঁর মুখ থেকে এমন মন্তব্য শুনে অনেকেই বিস্মিত। কেউ বলছেন, “এটা তাঁর ব্যক্তিগত রাগ”, কেউ বলছেন, “ছবির প্রচারের জন্য ইচ্ছাকৃত বিতর্ক তৈরি করা হয়েছে।”
এস এস রাজামৌলি পরিচালিত এই ছবিতে অভিনয় করছেন মহেশ বাবু, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া জোনাস ও পৃথ্বীরাজ সুকুমারন। ‘বারাণসী’তে ‘টাইম ট্রাভেল’-এর গল্প উঠে আসবে। মুক্তি পেতে পারে ২০২৭-এর মাঝামাঝি সময়ে। তার শুরুর আগেই এমন বিতর্ক ছবিকে ঘিরে উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে তাঁর নামে অভিযোগপত্র জমা পড়লেও এখনও মুখ খোলেননি রাজামৌলি। সমাজমাধ্যমেও এখনও কোনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানাননি। পুলিশও এই অভিযোগ খতিয়ে দেখছে। এদিকে, অনলাইনে বিতর্ক ও তর্ক-বিতর্ক আরও উত্তাল হচ্ছে -শিল্পীর স্বাধীনতা, ব্যক্তিগত বিশ্বাস আর ধর্মীয় সংবেদনশীলতার সীমা কোথায়?
