আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫–এ ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ)-এর সম্ভাব্য বিপুল জয়ের ইঙ্গিত মিললেও, তা আপাতত ভারতীয় শেয়ারবা জারকে চাঙ্গা করতে পারেনি। কিন্তু ভোটগণনার ট্রেন্ড বাজারের মনোভাবকে উজ্জ্বল করতে ব্যর্থ হয়েছে। সেনসেক্স এদিন ৪০০ পয়েন্টেরও বেশি পড়ে গিয়ে ৮৪,০৪২.৭৫–এ দিনান্তরের নিম্নস্তর স্পর্শ করে। নিফটি ৫০ সূচকও অর্ধ শতাংশ নেমে ২৫,৭৫১.৭০–এ পৌঁছায়। আগের সেশনে নির্বাচন ফলের আগে লাভবুকিংয়ের কারণে সূচকদুটি প্রায় স্থিতিশীল অবস্থায় শেষ হয়েছিল।


দেশীয় বাজার নিম্নমুখী হলেও তা এখনও বিশ্বের বাজারের তুলনায় অনেক বেশি দৃঢ়। মার্কিন বাজারে রাতারাতি ব্যাপক ধস নামে—এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ১.৭ শতাংশ এবং নাসডাক ২.৩ শতাংশ পড়ে যায়। এশিয়ার বাজারগুলিতেও রক্তক্ষয়ী দিন দেখা যায়: জাপানের নিক্কেই ১.৭৭ শতাংশ, হংকংয়ের হ্যাং সেং ১.৫ শতাংশ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার কোস্পি প্রায় ৩.৬০ শতাংশ হ্রাস পায়।


এমন আতঙ্কের মাঝেও ভারতীয় বাজারের তুলনামূলক ছোট ক্ষতি বাজারের দৃঢ়তার ইঙ্গিত দেয়। দেশীয় বাজার আজ অন্যান্য এশীয় বাজারের তুলনায় অনেক ভালো পারফর্ম করছে। মার্কিন বাজারের দুর্বল সংকেত এবং এশিয়ার সামগ্রিক পতন না হলে, উন্নত নির্বাচনী ফলাফলের কারণে বাজারে হয়তো আরও বড় র্যা লি দেখা যেত।


বাজারকে চাপে রাখছে মূলত দুটি কারণ—বিশ্বের বাজারের দুর্বলতা এবং ভারত–মার্কিন সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তিতে দেরি। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই চুক্তি “নিকটবর্তী” বলে মন্তব্য করেছিলেন, তবু এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সতর্কতা দেখা দিচ্ছে। একইসঙ্গে বাজারও খুঁটিয়ে দেখছে চুক্তিতে ভারত কতটা সুরাহা পাবে এবং কোথাও অতিরিক্ত আপস করা হয়েছে কি না।


তবে বাজারের মৌলিক চিত্র বেশ উন্নত হয়েছে। দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের ফলাফল প্রত্যাশার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল এবং বিশ্লেষকদের মতে তৃতীয় ত্রৈমাসিক থেকে আয় আরও উন্নত হতে পারে। বড় কোম্পানির শেয়ারের মূল্যায়ন কিছুটা কমেছে এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ধারাবাহিক বিক্রির চাপও কিছুটা শান্ত হয়েছে।


মার্কিন বাজারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই–ভিত্তিক শেয়ারের সম্ভাব্য বুদবুদ নিয়েও উদ্বেগ দেখা দিচ্ছে। তবে এই আশঙ্কা অতিরঞ্জিত হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সামগ্রিকভাবে, বাজার এখনো চাপের মধ্যে থাকলেও দেশীয় রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সুদূরপ্রসারী নির্বাচন ফলাফল এবং উন্নত কর্পোরেট আয়ের সম্ভাবনা মধ্যমেয়াদে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশ্লেষকদের মত।