আজকাল ওয়েবডেস্ক: পয়লা ডিসেম্বর বিশ্ব জুড়ে পালিত হয় বিশ্ব এইডস দিবস। সচেতনতার এই বিশেষ দিনে পশ্চিম মেদিনীপুরের সর্বশেষ পরিসংখ্যান উদ্বেগ বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্য মহলে। রাষ্ট্রীয় স্তরে সংক্রমণের হার কিছুটা কমলেও, রাজ্যের জেলার চিত্র ততটা স্বস্তিদায়ক নয়। বিশেষত গত সাত মাসে শুধুমাত্র পশ্চিম মেদিনীপুরে সংক্রমণের যে সংখ্যা উঠে এসেছে, তা নতুন করে দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে।
রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী, চলতি বছর এপ্রিল থেকে অক্টোবর, এই সাত মাসে পশ্চিম মেদিনীপুরে ৩২ হাজার ৪৫৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তার মধ্যে ১০৬ জনের শরীরে পাওয়া গিয়েছে এইচআইভি পজিটিভ জীবাণু। আক্রান্তদের প্রায় সকলেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সংক্রমণের তালিকায় সাধারণ মানুষের পাশাপাশি গর্ভবতী মহিলারাও রয়েছেন, যা পরিস্থিতিকে আরও উদ্বেগজনক করেছে।
এই সময়কালে চার হাজার ৭২০ জন গর্ভবতীর রক্ত পরীক্ষা করা হয়। তাঁদের মধ্যে ১৩ জনের নমুনায় এইচআইভি সংক্রমণ ধরা পড়ে। পাশাপাশি ছ'জন গর্ভবতীর শরীরে সিফিলিস মিলেছে। মাতৃ-স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর এর প্রভাব নিয়ে স্বভাবতই চিন্তায় স্বাস্থ্য দপ্তর।
বিভিন্ন ব্লক ও মেডিক্যাল কলেজের তথ্যও উদ্বেগজনক।
২০২৪–২৫ অর্থবর্ষে: ডেবরায় এইডস আক্রান্ত ১৬ জন , ঘাটালে ২৪ জন, খড়গপুরে আক্রান্ত ২৮ জন।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ৭৩ জন এইচআইভি আক্রান্তের হদিশ পাওয়া যায়। অন্যদিকে চলতি বছর অক্টোবর পর্যন্ত ডেবরায় আক্রান্ত পাঁচজন, ঘাটালে ১৮ জন এবং, খড়গপুরে আক্রান্ত ১৫ জন। মেদিনীপুরে ৩৫ জন নতুন আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতবছর এপ্রিল থেকে চলতি বছর মার্চ পর্যন্ত পশ্চিম মেদিনীপুরে ১৯৭ জন এইডস আক্রান্ত ছিলেন। এই সময়কালে ১৯ জন গর্ভবতী এইডস আক্রান্ত ছিলেন। ন'জন গর্ভবতীর শরীরে সিফিলিস ধরা পড়েছিল। অর্থাৎ গতবছরের তুলনায় চলতি বছরে পশ্চিম মেদিনীপুরে এইডস আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে।
স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, সংক্রমণের হার সামগ্রিকভাবে খানিকটা কমলেও ঘাটাল, মেদিনীপুর এবং খড়গপুর মহকুমায় সংক্রমণের প্রভাব বেশি। সামাজিক সচেতনতার অভাব, অনিরাপদ যৌন আচরণ এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতি উদাসীনতাকে বিশেষজ্ঞরা প্রধান কারণ হিসেবে দেখছেন।
