আজকাল ওয়েবডেস্ক: দুর্গাপুজোর ছুটি শেষে শনিবার স্কুল খুলতেই বিক্ষোভের মুখে পড়লেন মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা ব্লকের মুস্কিনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওবাইদুর রহমান।
জেলা শিক্ষা দপ্তর থেকে তাঁর বদলির নির্দেশিকা জারি হয়ে যাওয়ার পরও প্রধান শিক্ষক কেন স্কুলে ঢুকছেন এই প্রশ্ন তুলে শনিবার বিক্ষোভ দেখান মুস্কিনগরের কয়েকশো বাসিন্দা। প্রধান শিক্ষককে স্কুল চত্বর থেকে বেরিয়ে যেতে বললেও তিনি রাজি না হওয়ায় বিক্ষোভরত গ্রামবাসীরা স্কুলের দরজায় তালা লাগিয়ে দেন। যদিও পরবর্তীকালে অন্যান্য গ্রামবাসীদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
ফরাক্কা ব্লকের মুস্কিনগর প্রাথমিক বিদ্যালয় বর্তমানে প্রধান শিক্ষক ছাড়াও তিনজন সহকারী শিক্ষক এবং দু'জন প্যারা টিচার রয়েছেন।
ফরাক্কা ব্লকের শাসক দলের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি তথা মুস্কিনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওবাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে স্কুলের মিড ডে মিলের টাকা তছরুপ-সহ আরও একাধিক আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় মাস সাতেক আগে জেলা শিক্ষা দপ্তর তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। শিক্ষা দপ্তরের আভ্যন্তরীণ তদন্তে প্রধান শিক্ষক দোষী প্রমাণিত হওয়ায় ফরাক্কা ব্লকের গাজীনগর-মহাদেবনগর এলাকার বাসিন্দা ওবাইদুর রহমানকে বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে সাগরদিঘি ব্লকের একটি প্রাথমিক স্কুলে বদলি করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ফের মুখ পুড়ল পাকিস্তানের, প্রাক্তন সিআইএ কর্তার বিস্ফোরক মন্তব্য
শিক্ষা দপ্তর সূত্রের খবর, ওই বদলির নির্দেশিকা পাওয়ার পর ওবাইদুর রহমান সাগরদিঘির স্কুলে যোগদান করেননি। নিজের বদলির নির্দেশিকা বের হওয়ার পর ওই শিক্ষক অসুস্থতার কারণে ছুটিতে চলে যান। তারপর থেকে শিক্ষা দপ্তরের নির্দেশে শরিফুল হক নামে মুস্কিনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক,ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বভার সামলাচ্ছিলেন। দীর্ঘদিন ওবাইদুর রহমান স্কুলে না আসায় স্থানীয় মানুষের মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ জমা হয়েছিল। শনিবার স্কুল খুলতে হঠাৎই ওবাইদুর রহমান সেখানে এসে হাজির হন। তাঁকে স্কুলে ঢুকতে দেখে এলাকার বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। গ্রামবাসীরা দাবি জানাতে থাকেন, ওবাইদুর রহমান একজন দুর্নীতিগ্রস্ত প্রধান শিক্ষক। তিনি থাকলে স্কুলে ছাত্রদের পঠন পাঠন হচ্ছিল না। তাই তাঁরা ওবাইদুর রহমানকে স্কুলে কোনওরকম কাজ করতে দেবেন না।
সূত্রের খবর, শিক্ষা দপ্তরের বদলির নির্দেশিকা চ্যালেঞ্জ করে ওবাইদুর রহমান কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলাও করেছেন। গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের পর ওবাইদুর রহমান বলেন, 'শিক্ষা দপ্তরে তরফ থেকে আমার বদলির নির্দেশিকা বের হলেও আমার রিলিজ অর্ডার এখনও বার হয়নি। আমি এই স্কুলের দায়িত্বভার এখনও কোনও শিক্ষকের হাতে তুলেও দিইনি।'
তিনি জানান, 'এতদিন আমি চিকিৎসার জন্য ছুটিতে ছিলাম। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী যে কোনও ছুটি থেকে আসার পর আগে নিজের পুরনো কর্মক্ষেত্রে যোগদান করতে হয়। তারপরে নতুন কর্মক্ষেত্রে যাওয়া যায়। সেই কারণেই আমি মুস্কিনগর প্রাথমিক বিদ্যালয় যোগদান করছি। যোগদানের এই কাগজ আমাকে শিক্ষা দপ্তরে জমা করতে হবে। এরপর শিক্ষা দপ্তর বুঝবে আমাকে এই স্কুলেই রেখে দেবে না অন্যত্র বদলি করবে।'
