আজকাল ওয়েবডেস্ক: দশভুজা মা দুর্গার মহিষাসুর বিনাশিনী রূপের কথা সর্বজনবিদিত। দুর্গার এই রূপের আরাধনার মধ্য দিয়েই পালিত হয় শারদীয়া উৎসব। রীতি অনুযায়ী, দেবী দুর্গার বিসর্জনের পর আসে কোজাগরি পূর্ণিমা।
সেই তিথিতে ঘরে ঘরে পূজিতা হন দেবী লক্ষ্মী। এক হাতে ঝাঁপি, অন্য হাতে গাঁছকৌটৌ নেওয়া শ্রী ও সম্পদদায়িনী দেবী লক্ষ্মীর এই রূপের সঙ্গে পরিচিতি রয়েছে সবারই। কিন্তু এই বাংলাতেই দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা হয় অষ্টাদশভুজা রূপে।
পশ্চিমবঙ্গে একমাত্র মালদার বামনগোলায় গাঙ্গুরিয়া শ্রী শ্রী সারদা তীর্থম আশ্রমে পূজিতা হন ১৮ হাতের দেবী মহালক্ষ্মী। এই রূপে মহালক্ষ্মীর এক হাতে থাকে নারায়ণের সুদর্শন চক্র, বাকি সতেরোটি হাতে থাকে ত্রিশূল, গদা, তীর, ধনুক, কুঠার, বজ্র। দেবীর হাতে অস্ত্র ছাড়াও রয়েছে জপের মালা, শঙ্খ,পদ্ম। দেবী মহালক্ষ্মীকে এখানে শক্তিরূপেই পুজো করার রীতি প্রচলিত। পুজোর নিয়মেও রয়েছে বিশেষত্ব।
১৬ রকম উপাচারে মহালক্ষ্মীর পুজো হয় এই আশ্রমে। দেবী মহালক্ষ্মীকে নিবেদন করা হয় আলতা, কাজল, চিরুনি, ধুনুচি, সহ নানা সামগ্রী। পাঁচ রকমের ভাজা, তরকারি, ডাল, অন্ন, মিষ্টি সহযোগে দেবীর ভোগেও থাকে রাজকীয় আয়োজন। দেবীর পুজোয় আয়োজন করা হয় বিশাল যজ্ঞের। করা হয় বিশেষ আরতিও।
১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই আশ্রমের কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় অষ্টাভুজা মহালক্ষ্মীর পুজোর সূচনা হয় দু’হাজার সালে। তারপর থেকে প্রতি বছরই অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটিয়ে শুভশক্তির প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আশ্রমে শক্তিরূপে পুজো পেয়ে আসছেন দেবী মহালক্ষ্মী। এই আশ্রমে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় রয়েছে আরও বিশেষত্ব।
এই বিশেষদিনে সকালে দেবী লক্ষ্মী মহালক্ষ্মী রূপে শক্তিমতে পূজিতা হন। আবার রাতে কোজাগরী লক্ষ্মী রূপে পূজিতা হন দেবী কমলা। রাতে চিত্র পটের কোজাগরী রূপে মায়ের পুজো দেওয়া হয়। সেই সময় আবার লক্ষ্মীকে লুচি, সুজি, মিষ্টি দেওয়া হয়। বামনগোলার এই আশ্রমের লক্ষ্মীপুজো দেখতে দূরদূরান্ত থেকে ভিড় জমান ভক্তরা।
