আজকাল ওয়েবডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গে যে কোনও সময় ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য বিশেষ নিবিড় সংশোধনী (এসআইআর) চালু করতে পারে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। রাজ্যের সব বিএলও-দের সেই সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে ভোটার তালিকা সংশোধনের ফলে বহু নাম বাদ গিয়েছে। তারপরেই চূড়ান্ত তালিকা পেশ করা হয়েছে। ভোটের দিনক্ষণও ঘোষণা করা হয়েছে। বিহারে একমাসের মধ্যে এসআইআর সম্পন্ন করা হলেও, বাংলায় তা তিন মাসে সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। নভেম্বর থেকে শুরু হতে পারে এসআইআর। এই জল্পনার মাঝেই নির্বাচন কমিশনকে তুলোধনা করলেন শিল্প, নারী এবং শিশুকল্যাণ মন্ত্রী তথা তৃণমূল বিধায়ক শশী পাঁজা। তাঁর প্রশ্ন,  “২০২৬ সালের নির্বাচনের আগে বাংলার ভোটার তালিকাকে হঠাৎ ভুল ঘোষণা করা হচ্ছে কেন?”

শনিবার একটি সাংবাদিক সম্মেলনে শশী বলেন, “২০০২-২০০৩ সাল থেকে যে সরকারই ক্ষমতায় থাকুক না কেন নির্বাচন কমিশন এক রকম ভাবে কাজ করে চলেছে। তারা কি এখন দাবি করতে চাইছে যে সমস্ত কমিশন ভুল ছিল? বিজেপিকে অবশ্যই এই বিষয়টি স্পষ্ট করতে হবে।” এখানেই থেমে না থেকে তাঁর আরও প্রশ্ন, “আর যদি সত্যিই তাই হয়, তাহলে কেন ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন সেই একই ভোটার তালিকা ব্যবহার করে করা হয়েছিল? যদি সেই তালিকাগুলি তখন ভুল না হত, তাহলে ২০২৬ সালের নির্বাচনের আগে হঠাৎ করে বাংলার ভোটার তালিকা কেন ভুল ঘোষণা করা হল?”

?ref_src=twsrc%5Etfw">October 25, 2025

খুব দ্রুত দেশ জুড়ে ভোটার তালিকার বিশেষ আমূল সংশোধন (এসআইআর) করার ঘোষণা করতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। গত বৃহস্পতিবার দিল্লিতে রাজ্যগুলির নির্বাচনী আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার-সহ অন্য নির্বাচনী কর্তারা। যে কোনও সময় এসআইএর-এর দিনক্ষণ ঘোষণা করতে পারে কমিশন। সেই অনুযায়ী রাজ্যগুলিকে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে, সব রাজ্যে এক সঙ্গে এসআইআর নাও করতে পারে কমিশন। আগামী বছরে পশ্চিমবঙ্গ, অসম, তামিলনাড়ু, পুদুচেরি ও কেরলের মতো পাঁচটি রাজ্যে ভোট। কমিশন সূত্রে খবর, বৈঠকে পুরনো তালিকার ভিত্তিতে ভোটারদের ম্যাপিং-এর কাজ এবং প্রতিটি রাজ্যে বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও), বুথ লেভেল এজেন্ট (বিএলএ), জেলা ইলেকশন অফিসার (ডিইও)-দের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণের কাজ কতটা এগিয়েছে তা আলোচনা হয়েছে।

আরও পড়ুন: এবার রেলপথে জুড়ছে ভারত ও ভুটান, আপাতত বরাদ্দ ৪০৩৩ কোটি, শুরু জমি অধিগ্রহণের কাজ

কমিশন জানিয়েছে, এসআইআর ঘোষণার সাত দিনের মধ্যে বিএলওদের প্রশিক্ষণ সেরে ফেলতে হবে। তালিকা সংশোধনের কাজ ঘোষণার ৩০ দিনের মধ‍্যে বিএলও-দের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে ‘এনুমারেশন’ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ সেরে ফেলতে হবে। ভোটার তালিকা সংশোধনের সময়ে ম‍্যাপিংয়ে যাঁদের মিল থাকবে না, তাঁদের নোটিস দিয়ে নথি চাইবে কমিশন। যে নথি যাচাইয়ের দায়িত্বে থাকবেন ইলেকটোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ইআরও) এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট ইলেকটোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (এইআরও)। কোনও ব্যক্তির নাম শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত তালিকায় থাকবে কি না সেই সিদ্ধান্ত নেবেন ইআরও এবং এইআরও।

রাজ্য কমিশনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, মোটের উপরে ২০০২ সালের নথির ভিত্তিতে রাজ্যে ম্যাপিং-এর কাজ প্রায় শেষ। পশ্চিমবঙ্গে দু’দশক আগের তালিকা ও সর্বশেষ ভোটার তালিকার মিল প্রায় ৫৫%। বাকিদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় নথি নোটিসের মাধ্যমে চেয়ে পাঠিয়ে তা যাচাই করে দেখা হবে। এই রাজ্যে ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে, এমন ব্যক্তিদের কোনও নথিই দিতে হবে না। ওই তালিকায় নাম দেখাতে পারলেই এ বারের এসআইআরে তাঁদের নাম উঠে যাবে। এসআইআরে ১১টি নথি নির্দিষ্ট করে দিয়েছে কমিশন। সুপ্রিম কোর্ট পরিচয়পত্র হিসাবে আধার কার্ড গ্রহণ করতে বলেছে। কমিশন জানিয়েছে, ওই ১১টির মধ্যে যে কোনও একটি নথি এবং ২০০২ সালের তালিকায় বাবা অথবা মায়ের নাম রয়েছে প্রমাণ করতে পারলেই নতুন তালিকায় নাম উঠবে।