আজকাল ওয়েবডেস্ক: গ্রামের নাম শিবরামবাটি। গ্রামটি বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ থানার বোয়াইচন্ডীর পাশে। আছে বেশ কয়েকঘর লোকের বাস। বিরাট কিছু না হলেও গ্রামের লোকেরা মোটামুটি বর্ধিষ্ণু। উৎসব, আনন্দ, পালা পার্বণ সবই হয়। হয় না শুধুই দুর্গোৎসব। কেন হয় না বা কী কারণে হয় না তা জানা নেই কারোর। ফলে পুজোর চারদিন এই গ্রামের লোকেরা পাশের গ্রামের ঢাকের আওয়াজ শুনেই সন্তুষ্ট থাকেন বা যোগ দেন সেই গ্রামের পূজায়। দীর্ঘদিন ধরেই গ্রামে এই রীতি প্রচলিত। 

 

গ্রামের মেয়ে পূজা মণ্ডল বলেন, 'আমাদের গ্রামে মনসা পুজো হয়। ভাল করেই হয়। সেই পুজোতেই আমরা আনন্দ করি। দুর্গাপুজোর সময় আমরা অন্য গ্রামে যেতে হয়। কী আর করা যাবে!' 

 

প্রতি বছর অশ্বিন মাসেই হয় মনসা পুজোর। যে পুজোয় হৈহৈ করে যোগ দেয় গোটা গ্রাম। পুজো উপলক্ষে আসেন গ্রামের মানুষের আত্মীয় পরিজনরা। গ্রামবাসী সঞ্জয় মণ্ডল বলেন, 'রীতি মেনে চলা হচ্ছে বহুদিন ধরে। নতুন করে গ্রামে একটা পুজোর আয়োজন করা যথেষ্টই খরচসাপেক্ষ।' গ্রামের বাসিন্দা প্রায় সকলেই বলেন, পুজো হলে তো ভালই হয়। কিন্তু এতবড় খরচের দায় কে নেবে? 

 

অথচ এঁরাই জানিয়েছেন, পুজো হলে খুবই ভাল লাগবে। ছেলেমেয়েরা পুজো দেখতে অন্য গ্রামে যায়। আশেপাশের সমস্ত গ্রামেই পুজো হয়। গোটা পূর্ব বর্ধমান মেতে ওঠে পুজোর আনন্দে। কিন্তু কিছু করার নেই। অন্য গ্রামের হৈহৈ শুনেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়। এই রীতিই পালিত হচ্ছে বহুদিন ধরে। ফলে মহালয়া এলেই তৈরি হয় একটা অদ্ভুত শূন্যতা। বোধন থেকে বিসর্জন, এই গ্রামে নেই কোনও আচারের বালাই। তাই যেটুকু আনন্দ সেটা মনসা পুজোতেই উপভোগ করেন তাঁরা। 

 

তবে পুজো এলে কিন্তু বাড়ির লোকের জন্য জামাকাপড় কিনতে হয় তাঁদের। বাচ্চা বা বড়রা নাড়ু, মোয়া খেতে চায়। আব্দার মেনে তাও বানাতে হয়। কিন্তু শূন্যতা যেন পিছু ছাড়ে না।