আজকাল ওয়েবডেস্ক: বন্ধুদের সঙ্গে মেলায় নাগরদোলা চড়তে গিয়ে সেখান থেকে পড়ে মৃত্যু হল এক নাবালিকার। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাতে মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান পুরসভার অন্তর্গত লালপুর এলাকায়। 


পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই নাবালিকার নাম আসরিন খাতুন (১২)। বাড়ি ধুলিয়ান পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের লালপুরে। মৃত ওই নাবালিকা স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি ধর্মীয় গানের অনুষ্ঠান উপলক্ষে শুক্রবার লালপুরের একটি মাঠে ছোট একটি মেলা বসেছিল। গতকাল রাতে আসরিন খাতুন নামে ওই নাবালিকা নিজের পরিবারের কয়েকজন সদস্য এবং বন্ধুদের সঙ্গে মেলায় যায়। 

মেলায় যাওয়ার পর সেখানে নাগরদোলা দেখে কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে ওই নাবালিকা চড়ে বসে। নাগরদোলায় কয়েক পাক ঘোরার পর হঠাৎই ওই নাবালিকার চুল নাগরদোলার কোনও একটি অংশের সঙ্গে জড়িয়ে যায়। 
ঘটনার কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করেন, নাগরদোলায় চুল জড়িয়ে যাওয়ার পরেই আসরিন খাতুন চিৎকার করতে থাকে। মেলার হট্টোগোলের মধ্যে নাগরদোলার চালক ওই নাবালিকার আর্তনাদ শুনতে পাননি। এর ফলে নাগরদোলাটি চলতেই থাকে। চুল আটকে থাকা অবস্থায় ওই নাবালিকা প্রচন্ড জোরে উপর থেকে মাটিতে ছিটকে পড়ে। 

সংজ্ঞাহীন অবস্থায় তাঁকে স্থানীয় অনুপনগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। ইতিমধ্যেই ওই নাবালিকার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য জঙ্গিপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

এই ঘটনার পর মেলার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনার পর থেকে ওই নাগরদোলার চালক পলাতক বলে সূত্রের খবর। সামশেরগঞ্জ থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই তাঁরা মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছেন। তবে এই ঘটনায় এখনও কোনও  লিখিত অভিযোগ জমা হয়নি। তাই কেউ গ্রেপ্তার বা আটক হয়নি। 

জঙ্গিপুর পুরসভার চেয়ারম্যান ইনজামামুল ইসলাম বলেন, ‘‌একটি ধর্মীয় গানের অনুষ্ঠান উপলক্ষে গতকাল গঙ্গা নদীর চরে পুরসভা এলাকার মধ্যেই ওই মেলার আয়োজন করা হয়েছিল। তবে এই মেলা আয়োজন করার জন্য পুরসভা কোনওরকম অনুমতি দেয়নি বা কোনও ব্যক্তির তরফে মেলা বসানোর জন্য আমাদের কাছে আবেদন জমা করা হয়নি। সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে ওই মেলা চলছিল বলে আমরা জানতে পেরেছি।’‌
 
আকসার শেখ নামে দুর্ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘‌ধর্মীয় গানের অনুষ্ঠান উপলক্ষে মেলায় প্রচুর লোকের সমাগম হয়েছিল এবং জোরে মাইক বাজছিল। নাগরদোলাতে চুল আটকে যাওয়ার পর ওই নাবালিকা চিৎকার করতে থাকে কিন্তু চালক নাগরদোলা থামায়নি। ওই নাবালিকা নাগরদোলার উপর থেকে মাটিতে ছিটকে পড়লে চালক এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।’‌