আজকাল ওয়েবডেস্ক: বাংলাদেশের জেলে বিচারাধীন অবস্থায় কাকদ্বীপের মৎস্যজীবীর মৃত্যু। মৃত্যুকে ঘিরে ড
দানা বেঁধেছে রহস্য! ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক জলসীমা অতিক্রম করে ঢুকে পড়াই কাল হয়েছিল। বাংলাদেশ জলসীমায় ঢুকে পড়ার দায়ে সেদেশে আটক হয়েছিলেন কাকদ্বীপের পশ্চিম গঙ্গাধরপুর এলাকার মৎস্যজীবী যুবক বাবলু দাস (২৫)। 

বাবলু জন্ম থেকেই বিশেষভাবে সক্ষম। শনিবার তাঁর পরিবারের কাছে মৃত্যুর খবর এসে পৌঁছয়। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, বিচারাধীন ওই বন্দি মৎস্যজীবীর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে বাংলাদেশ হাই কমিশন মৃতের পরিবারকে জানায়। যদিও মৃত্যুর কারণ নিয়ে ঘোর সন্দেহ প্রকাশ করেছে মৃতের পরিবার। 

স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৩ জুলাই রবিবার বাংলাদেশ জলসীমা অতিক্রম করে মাছ ধরার অভিযোগে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর হাতে আটক হয় 'এফবি মঙ্গলচণ্ডী' ও 'এফবি ঝড়' নামে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের দু'টি ট্রলার ও ৩৪ জন ভারতীয় মৎস্যজীবী। ট্রলার দু'টি কাকদ্বীপ থেকেই গভীর সমুদ্রে ইলিশ ধরতে বেরিয়েছিল। আটক হওয়া মৎস্যজীবীদের বাংলাদেশ নৌবাহিনী মংলা পোর্ট থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয়। 

গত ১৫ জুলাই ধৃত মৎস্যজীবীদের গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশের ওই থানায় মামলা রুজু হয় এবং বাগেরহাট আদালত ধৃতদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। সেই থেকেই বাংলাদেশের জেলে বিচারাধীন বন্দি হিসেবেই রয়েছেন তাঁরা। শনিবার ওই বিচারাধীন বন্দিদের মধ্যে আটক হওয়া ট্রলার মঙ্গলচণ্ডী-৩৮ এর মৎস্যজীবী বাবুল দাস ওরফে বোবার মৃত্যুর খবর আসে কাকদ্বীপে তাঁর পরিবারের কাছে। 

মৃতের ভাই বাসুদেব দাস জানান, এদিন দুপুরে হারউড পয়েন্ট কোস্টাল থানার পুলিশ মারফত তাঁরা প্রথম খবর পান। পরে বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকেও ফোন করে মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়। তিনি বলেন, "দাদা বোবা ও কালা হলেও অন্য কোনও শারীরিক অসুস্থতা ছিল না। বরং বেশ সুস্থ সবলই ছিলেন দাদা। এই মৃত্যু সন্দেহজনক। আমরা আশঙ্কা করছি, জেলের মধ্যে তাঁর উপর অত্যাচার করে তাঁকে মেরে ফেলা হয়েছে।' মৃতদেহ কাকদ্বীপে এনে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তও করাতে চান। 

সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র বলেন, মৃত ওই মৎস্যজীবী কাকদ্বীপের হারউড পয়েন্ট উপকূল থানার গঙ্গাধরপুরের ৮ নম্বর পশ্চিম কালিনগরের বাসিন্দা ছিলেন। বাংলাদেশে জেলবন্দি থাকা ওই মৎস্যজীবীর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবর খুবই দুঃখজনক। 

মৃত মৎস্যজীবীর শোকগ্রস্ত পরিবারকে সংগঠনের পক্ষ থেকে তিনি সমবেদনা জানান। ওই পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাসও দেন তিনি। এদিকে মৃত মৎস্যজীবীর দেহ কাকদ্বীপে ফিরিয়ে আনতে শুরু হয়েছে তৎপরতা। জানা গিয়েছে, ট্রলার মালিক ও মৎস্যজীবী সংগঠনের সম্পাদক সতীনাথ পাত্রের উদ্যোগে কাকদ্বীপে বাবুলের দেহ ফিরিয়ে আনা হবে।