আজকাল ওয়েবডেস্ক: দিল্লি বিস্ফোরণ-কাণ্ডের তদন্তভার হাতে নিয়েছে জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)। সেই তদন্তেই পশ্চিমবঙ্গে এসে পৌঁছল এনআইএ-র তদন্তকারী দল। সূত্রের খবর, লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজনদের জেরা করে একটি ফোন নম্বর পেয়েছে এনআইএ। সেই নম্বরের সূত্র ধরে বাংলায় আগমন তাঁদের।

এনআইএ সূত্রে খবর, বুধবার সকালে মুর্শিদাবাদ জেলার নবগ্রাম থানার অন্তর্গত নিম গ্রামে অভিযান চালায় তদন্তকারী দল। সেখানে মইনুল হাসান নামে এক পরিযায়ী শ্রমিকের বাড়ি যান তদন্তকারীরা। তাঁকে দীর্ঘক্ষণ সেখানে জেরা করা হয়। আরও জানা গিয়েছে, কর্মসূত্রে কখনও দিল্লি, কখনও মুম্বইতে থেকেছেন মইনুল। সেই সময় এক বাংলাদেশি ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। সেই সময় কিছু জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে মইনুলের যোগাযোগ হয়েছিল কি না তা খতিয়ে দেখছে এনআইএ। 

তদন্ত সংস্থা সূত্রে খবর, সারাদিন ধরেই তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। সন্দেহভাজনদের জেরার পর প্রাপ্ত ফোন নম্বরের ভিত্তিতেই এই তল্লাশি। মইনুলের বাড়ি ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি জায়গায় যায় তদন্তকারীদের দল। দিল্লি বিস্ফোরণের সঙ্গে মুর্শিদাবাদের এই বাসিন্দারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনায় এলাকাবাসীরা আতঙ্কিত।

এর আগেও মুর্শিদাবাদে পাওয়া গিয়েছে জঙ্গি যোগ। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আনসারুল্লা বাংলা টিমের কয়েকজন জঙ্গিকে মুর্শিদাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে অসম-সহ বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে এবিটি জঙ্গিদের ডেরার খোঁজ পান গোয়েন্দারা। উদ্ধার হয় প্রচুর অস্ত্র।

প্রসঙ্গত, সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিট নাগাদ দিল্লির লালকেল্লার কাছে লাল কেল্লা মেট্রো স্টেশনের ১ নম্বর গেটের কাছে একটি হুন্ডাই আই২০ গাড়ি বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। বিস্ফোরণে জড়িত থাকার সন্দেহে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বিস্ফোরণের পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, কাউকে রেয়াত করা হবে না। দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।

দিল্লি পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে জানিয়েছে, বিস্ফোরণের আগে সুনহেরি মসজিদের পার্কিং লটে তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করছিল ঘাতক গাড়িটি। বিস্ফোরণের আগের দিন ফরিদাবাদের আল ফালহা মেডিক্যাল কলেজ থেকে ৩৫০ কেজি বোমা তৈরির রাসায়নিক এবং অস্ত্র উদ্ধার হয়েছিল। এক ডাক্তারকে গ্রেপ্তার করে জম্মু এবং কাশ্মীর পুলিশ এবং ফরিদাবাদ পুলিশ। তদন্তকারীদের সন্দেহ ওই রাসায়নিক অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট। তদন্তে জানা গিয়েছে, বিস্ফোরণের দিন সকালেও ফরিদাবাদ হয়ে দিল্লিতে প্রবেশ করেছিল ঘাতক গাড়িটি। এখনও পর্যন্ত কোনও জঙ্গি সংগঠন হামলার দায় স্বীকার করেনি। তদন্ত চালাচ্ছে এনআইএ।