আজকাল ওয়েবডেস্ক: দুর্গাপুরে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে পড়ুয়াকে নির্যাতন কাণ্ডের মামলায় বড় অগ্রগতি। মঙ্গলবার দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে মামলার শুনানিতে বিচারক অভিযুক্তদের শনাক্তকরণে টেস্ট আইডেন্টিফিকেশন বা টিআই প্যারেডের নির্দেশ দেন। আগামী ২৪ অক্টোবর জেলেই টিআই প্যারেড হবে। পাশাপাশি অভিযুক্তদের জামিনের আবেদন খারিজ করে আগামী ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন তিনি। এই মামলায় সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “তদন্তের স্বার্থে আমরা ধর্ষণের ঘটনা ঘটার আগে চিকিৎসক পড়ুয়ার সঙ্গে সহপাঠীর কথোপকথনের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট বার করে বিচারকের সামনে পেশ করার আবেদন করেছি। টিআই প্যারেডের জন্য আবেদন করা হয়েছিল। বিচারক ২৪ তারিখ টিআই প্যারেডের নির্দেশ দেন।” তিনি জানিয়েছেন, সহপাঠী ছাড়া বাকি পাঁচজনকে টিআই প্যারেডে হাজির করানো হবে। 

এই মামলায় তিনজন অভিযুক্ত দশ দিনের পুলিশি হেফাজতে ছিল। দু’জন ন’দিনের এবং নিগৃহীতার সহপাঠী আরও এক ডাক্তারি পড়ুয়া ও অভিযুক্ত সাত দিনের পুলিশি হেফাজতে ছিল।  বুধবার এই তিনজন ছাড়াও এই মামলায় অভিযুক্ত আরও একজনকে আদালতে পেশ করা হয়। শুনানি শেষে বিচারক তাঁদের জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বিচারকের নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী ২৪ অক্টোবর জেলেই টিআই প্যারেড হবে। এই মামলার তদন্তে পুলিশের দাবি, টিআই প্যারেডের ফলাফল তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। 

আরও পড়ুন: মিরিকের রাস্তায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা, যাত্রী নিয়ে ১৫০ ফুট নীচে গড়িয়ে পড়ল গাড়ি, মৃত ৩

অন্যদিকে, অভিযুক্ত সহপাঠীর উকিল প্রজ্ঞাদীপ্ত রায় বলেন, “দু’জনের মধ্যে ভালবাসার সম্পর্ক ছিল। কোনওভাবেই অভিযুক্ত সহপাঠী দোষী নয়।”

এর আগে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছিল, দুর্গাপুরে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া ধর্ষণের ঘটনায় একজনই ধর্ষণ করেছে বলে জানিয়েছিলেন নির্যাতিতা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত বাকিদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছিল পুলিশ।  
 
এই বিষয়ে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কমিশনার সুনীল চৌধুরী জানিয়েছিলেন, তদন্তপ্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত কত জন ওই ডাক্তারি পড়ুয়াকে ধর্ষণ করেছে সেই বিষয়টি এই মুহূর্তে জোর দিয়ে বলা সম্ভব নয়। পুলিশ সব দিক খতিয়ে দেখছে।

আরও পড়ুন: বাজি থেকেই বিজেপি নেতার বাড়িতে দাউদাউ আগুন, খবর পেয়েই ছুটে এলেন তৃণমূল নেতা, কয়েক ঘণ্টায় নেভালেন

ঘটনার পর পুলিশের বিরুদ্ধে যে নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছিল তা খন্ডন করে পুলিশ কমিশনার জানিয়েছিলেন, “অভিযুক্তদের দু’দিনের মধ্যে ধরে ফেলেছি। রাত ১টা ৫ মিনিটে মৌখিকভাবে খবর পেয়ে অন ডিউটি পুলিশের মোবাইল ভ্যান ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। তারপরেই ৩টে ৩৮ মিনিটে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লিখিত অভিযোগ জমা দেয়। আমরা তদন্ত শুরু করি। ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলা হয়েছে। তিন জনকে সেই দিনই গ্রেপ্তার করা হয়। পরের দিন আরও দু’জনকে গ্রেপ্তার করি।”

সুনীল চৌধুরী জানিয়েছিলেন, “যে পাঁচজন ওইখানে ছিল তাদের সবাইকে আমরা গ্রেপ্তার করে ফেলেছি দু’দিনের মধ্যে। তাদের হেফাজতে নিয়ে আমরা তদন্ত অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে গিয়েছি।” এর পাশাপাশি তিনি বলেন, “যদি নির্যাতিতা ও নির্যাতিতার পরিবারের কোনও নিরাপত্তারক্ষী লাগে আমরা সেটা দিতেও রাজি আছি। নির্যাতিতার পরিবারকে আমাদের সমস্ত আধিকারিকদের মোবাইল নম্বর দেওয়া আছে।”