তীর্থঙ্কর দাস: পেশায় সিভিক ভলেন্টিয়ার। গত এক বছর ধরে নিজের হাতে বানানো পাট কাঠির ঘরেই চলছে পাঠশালা। বিনামূল্যে আদিবাসী সম্প্রদায়ের পিছিয়ে পড়া বাচ্চাদের শিক্ষা দিয়ে আসছেন হুগলির সিভিক ভলেন্টিয়ার হীরালাল।

 

হুগলি জেলার বলাগড় অন্তর্গত সোমরা ব্লকের ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে নাটাগড় আদিবাসী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করেন হীরালাল। হীরালাল বলেন, আদিবাসী সম্প্রদায়ের শিশুরা পিছিয়ে পড়া শ্রেনী, বাড়িতে শিক্ষা দেওয়ার মতন কেউ নেই। তাই নিজের হাতে তুলে নিয়েছে শিক্ষকতার দায়িত্ব। ডিউটি জয়েন করার আগে প্রতিদিন সকালে ১ ঘণ্টা করে নিয়মিত ক্লাস করান সিভিক ভলেন্টিয়ার হীরালাল।

 

সকাল ৯:৩০-১০:৩০ পর্যন্ত চলে পাঠশালা। ২০১০ সালে বলাগড় কলেজ থেকে বিএ পাস করেন হীরালাল সরকার। হীরালাল জানিয়েছেন, 'কিছুটা হলেও ওরা শিখতে পারবে, তাই আমি চেষ্টা করি ডিউটির ফাঁকে ওদের একটু দেখিয়ে দি। নিম্ন শ্রেনীর বাচ্চাদের পড়াশোনার প্রতি ঝোঁক থাকেনা, তাই চেষ্টা করি যদি ওদের মধ্যে পড়াশোনার প্রতি ভালবাসা আনতে পারি।' ১৫-২০ জন আদিবাসী শিশু রোজদিন পড়তে আসে নিয়মিত।

 

প্রত্যেকদিন পড়ানো হয় গেলে তাঁদের হাতে তুলে দেন চকলেট এবং বিস্কুট। পাশে পেয়েছেন পরিবারের লোকজন এবং পুলিশের আধিকারিকদের। হুগলি গ্রামীণ পুলিশের ডিএসপি অভিজিৎ সিনহা মহাপাত্র জানিয়েছেন, 'ওর এই মহৎ কাজের পেছনে আমরা সবসময় আছি। প্রতিদিন সকালবেলায় বাচ্চাগুলোকে নিজের মতো করে পড়ায়। একজন সিভিক ভলেন্টিয়ারের এরকম কাজ আমাদের মধ্যে অনুপ্রেরণা জাগায়।'

 

 ইচ্ছে থাকলে মানুষ কত কিছুই করতে পারে তারই প্রমাণ হীরালাল সরকার।