২৬-এর ভোটে নন্দীগ্রাম থেকে প্রার্থী তিনিই? সুকান্তর 'বিশ্বস্ত সূত্রের' খবরের জবাব দিলেন অভিষেক

গ্রাফিক: আজকাল ডট ইন।

আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভোট এখনও দূরে। তবে খুব বেশি দূরে নয়, তা একপ্রকার বোঝা যাচ্ছে রাজনৈতিক চর্চা দেখেই। একদিকে এসআইআর। অন্যদিকে, এখন থেকেই চূড়ান্ত জল্পনা, কে কোথায় প্রার্থী হবেন তা নিয়ে। এক দলের নেতা নিজের মতামত জানাচ্ছেন, এক দলের নেতা জবাব দিচ্ছেন।

এসবের মাঝেই নিজের বিশ্বস্ত সূত্রের খবর প্রকাশ্যে এনেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি, সুকান্ত মজুমদার। অভিষেকের উদ্দেশে সুকান্ত মজুমদার বলেন, অভিষেক ব্যানার্জির বিধানসভা নির্বাচনে দাঁড়ানোর 'শখ' রয়েছে। আর ঠিক সেই কারণেই  পছন্দের পুলিশ অফিসারদের নন্দীগ্রামে বদলি  করছেন অভিষেক। তাঁর ইচ্ছা রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী হওয়া। 

সুকান্তর এই মন্তব্যের পর, শুরু হয় জোর জল্পনা। অপেক্ষা ছিল অভিষেকের উত্তরের। সোমবার সুকান্তর কথার জবাব দিয়েছেন অভিষেক। সোমবার তাঁকে সংবাদ মাধ্যমের পক্ষ থেকে জিজ্ঞাসা করা  হয়, তিনি কি শুভেন্দুর বিপরীতে দাঁড়াচ্ছেন নন্দীগ্রাম থেকে? জবাবে অভিষেক জানান, 'আমাকে দল যেখানে, যেভাবে কাজে লাগাবে, আমি সেখানে সেভাবে কাজ করব। আমাকে যদি বলে নন্দীগ্রামে দাঁড়াও, আমি দাঁড়াব। আমাকে যদি বলে দার্জিলিংয়ে দাঁড়াও, দাঁড়াব।'  তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত তৃণমূলই নেবে, এদিন তাও সাফ জানিয়ে দেন অভিষেক। 

 

এদিন পয়েন্ট ধরে ধরে, কেন্দ্রকেও একহাত নেন অভিষেক। নিন্দা করেন প্রধানমন্ত্রীর 'ড্রামা' মন্তব্যেরও। সোমবার, সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরুর আগে, প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংসদের শীতকালীন অধিবেশনকে নাটক করে যেন যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করা না হয়। কটাক্ষের সুরে মোদি জানিয়েছেন, প্রয়োজনে তিনি বিরোধীদের জনপ্রতিনিধি হিসাবে দায়িত্ব পালন করার ক্ষেত্রে পরামর্শ দিতে পারেন। তার কয়েকঘণ্টাতেই তীব্র জবাব সাংসদ অভিষেকের। একের পর এক পয়েন্ট তুলে তিনি মনে করালেন, এই দেশের প্রতিটি মানুষ কেন্দ্রের প্রতিটি পদক্ষেপের জবাব চাইতেই পারেন। 

তিনি বলেন, 'বিরোধীরা কী দাবি করছে সংসদে? এসআইআর নিয়ে একদিন আলোচনা চাইছে, এটা কি নাটক? যদি বিজেপি মনে করে মানুষের জন্য সত্যি প্রশ্ন করা 'ড্রামা', তাহলে দেশের মানুষ দেখুন, পরের নির্বাচনে উত্তর পাবেন। জনগণ আগামী নির্বাচনে তাদের জবাব দেবে।' 

 

অভিষেক বলেন, 'BLO-সহ ৪০ জন মারা গিয়েছেন। তারা ECI কে দোষারোপ করেছেন। সরকারের জবাব কোথায়?' তিনি বলেন, 'ইসি বিএলও'দের প্রশিক্ষণ দেয়নি, তারা ত্রুটি দূর করেনি, ভোটার তালিকা আপডেট করা হয়নি এবং আমরা যখন আলোচনা চাইছি তখন প্রধানমন্ত্রী বলছেন এটা নাটক!'

এসআইআর-এ সাতদিন সময় বাড়ানো নিয়েও এদিন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ বলেন, 'আমরা আগে থেকেই বলছিলাম, দু'মাসে SIR সম্ভব নয়। কাল দেখলেন সাতদিন বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে কী দেখা গেল? তৃণমূল যা বলছিল, বিরোধীরা যা বলছিল, তাই করা হচ্ছে। তাহলে ইগো কীসের? ছ'মাস, এক বছর ধরে করা  হোক, অসুবিধে নেই।' তারপরেই অভিষেক এদিন স্পষ্ট মনে করান, 'আমরা SIR-এর বিরুদ্ধে নই কিন্তু এটি যে পদ্ধতিতে কার্যকর করা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে।' বিএলও'দের চরম সমস্যা নিয়ে এদিন সুর চড়ান তিনি। 

 

এছাড়াও পরপর অভিষেক প্রশ্ন করেন- 

১০ বছর আগে নোটবন্দির সময় মানুষ লাইনে দাঁড়িয়েছিল। কালো টাকার পরিমাণ বেড়েছে। জবাব কোথায়?

বিস্ফোরণ ঘটছে এবং সন্ত্রাসীরা আমাদের দেশে প্রবেশ করছে, যেটা কেন্দ্র সরকারের নিয়ন্ত্রণ করার কথা, তার জবাব কোথায়?

অপরিকল্পিত SIR-এর কারণে ৪০ জন মারা গিয়েছে। জবাব কোথায়?

বিরোধীরা আইনি কাঠামোর মধ্যে থেকে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করছে। একইসঙ্গে তিনি এদিন মনে করান, যদি বিজেপি ভাবে, কেবল কয়েকটি রাজ্য জিতেছে বলেই তারা জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য নয়,  তাহলে যারা ক্ষমতায় বসানোর ক্ষমতা রাখে, তারা ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ারও ক্ষমতা রাখে।