আজকাল ওয়েবডেস্ক : ভোররাতে হঠাৎ লোডশেডিং। গরমে নাজেহাল ছেলে-বউমা বাইরে বেরিয়ে এলেন। তাঁরা দেখলেন, মায়ের ঘরে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। আগুন নেভানোর পর ঘর থেকে উদ্ধার হল বৃদ্ধার নিথর দেহ। রবিবার ভোররাতে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া থানার দক্ষিণ হাবড়া এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত বৃদ্ধার নাম মিলনরানি কর। বয়স ৮০ বছর। দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। 

 

 

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধা ঘরে একাই ঘুমোতেন। পাশের ঘরে থাকতেন ছেলে-বউমা। রাত দুটো নাগাদ হঠাৎ বাড়ির বিদ্যুৎ চলে যায়। গরমে ঘুম ভেঙে যায় ছেলে-বউমার। দরজা খুলতেই ওই দম্পতি দেখেন, বৃদ্ধা মায়ের ঘরে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। কিন্তু মায়ের কোনও সাড়া নেই। তড়িঘড়ি তাঁরা নিজেরাই জল দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। চিৎকার-চেঁচামেচিতে ছুটে আসেন পড়শিরাও। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন দমকল কর্মীরা। পৌছয় পুলিশও। দমকল কর্মীদের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তখন দেখা যায়, খাটের ওপরে বৃদ্ধার অগ্নিদগ্ধ নিথর দেহ পড়ে রয়েছে। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। 

 

 

পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, বয়স হলেও বৃদ্ধা হাঁটাচলা করতে পারতেন। দুর্গাপুজোর অষ্টমীতে পুজো মণ্ডপে তিনি অঞ্জলি দিয়েছেন। ছেলে-বউমার সঙ্গে ঠাকুর দেখতেও বেরিয়েছিলেন। ঘরে আগুন লাগার পর ওই বৃদ্ধা ছেলে-বউমাকে কেন ডাকাডাকি করলেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বৃদ্ধার ঘরে কীভাবে আগুন লাগল পুলিশ ও দমকল কর্মীরা তা খতিয়ে দেখছেন। প্রাথমিক তদন্তে দমকলের অনুমান, বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের ঘটনা ঘটতে পারে। তদন্তকারী এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আগুন দেখে অনেক সময় কেউ কেউ বাকরুদ্ধ হয়ে যায়। কথা বলতে পারে না। কারও ক্ষেত্রে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। আগুন লাগার পর ওই বৃদ্ধার সে রকমই কিছু হয়েছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

 

 

দশমী পুজোর ভোররাতে ঘরের ভিতরে অগ্নিগদ্ধ হয়ে বৃদ্ধার মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মৃত বৃদ্ধার বাড়ির কাছেই বড় একটি দুর্গাপুজো হয়। উদ্যোক্তারা এই পরিস্থিতিতে পুজোর মাইক বন্ধ করে দিয়েছেন।