আবু হায়াত বিশ্বাস, দিল্লি: ভোট প্রচারে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে ‘‌শাহজাদা’‌ বলে কটাক্ষ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর সেই বক্তব্যের পাল্টা দিলেন এবার প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। বিজেপির গড় গুজরাটের মাটি থেকেই আক্রমণ শানিয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী। মোদির মন্তব্যের পাল্টা দিয়ে মোদিকে ‘‌শাহেনশা’‌ বলে কটাক্ষ করলেন প্রিয়াঙ্কা। শনিবার গুজরাটের বনশকাঁঠায় ভোট প্রচারে গিয়ে প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘উনি আমার ভাইকে শাহজাদা বলেন, অথচ নিজে শাহেনশার মতো মহলে বসে থাকেন।’ শুক্রবারই রায়বরেলিতে মনোনয়ন পেশ করেন রাহুল গান্ধী। সেদিনই বাংলায় বিজেপির একটি জনসভা থেকে সোনিয়া পুত্রকে আক্রমণ করেছিলেন মোদি। বলেছিলেন, ‘‌ওয়েনাড়ে হারের ভয়ে ‘‌শাহজাদা’‌ আমেথি না লড়ে রায়বরেলিতে পৌঁছে গেছেন। সে সবাইকে বলে ডরো মাত। আমি বলছি, ডরো মত, ভাগো মাত।’‌ শনিবার মোদির ওই বক্তব্যেরই পাল্টা জবাব দিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা। 
ভিড়ে ঠাসা জনসভা থেকে প্রিয়াঙ্কা শুনিয়েছেন, মোদিজির মতো মহলে বসে নয়, পাঁয়ে হেটে জনগণের কথা শুনেছেন তাঁর ভাই। এজন্য দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছেছেন। এদিন প্রিয়াঙ্কা বলেছেন, ‘শাহেনশা যখন মহলে বসে রয়েছেন তখন এই শাহজাদা কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত ৪ হাজার কিলোমিটার পায়ে হেঁটেছেন। মা- বোনেদের সঙ্গে দেখা করেছেন, কৃষক-শ্রমিকদের সঙ্গে দেখা করে জানতে চেয়েছেন তাঁদের সমস্যা কোথায়? 
অন্যদিকে মোদিজিকে দেখুন, একেবারে বাবু সেজে বসে রয়েছেন। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন পোশাক, এমনকী ওনার মাথার একটি চুলও এদিক থেকে ওদিক হওয়ার জো নেই। উনি আপনাদের সমস্যা বুঝবেন কীভাবে?’ কংগ্রেস নেত্রী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি গুজরাটের মানু্ষকে আর চিনতে পারছেননা। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর গুজরাটের মানুষকে ভুলেছেন। মোদিকে নিশানা করে বলেছেন, ‘মিথ্যা কথা বলতে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর জুড়ি মেলা ভার, এখন দেখছি ফালতু কথা বলতেও ওনার জুড়ি নেই। উনি বলছেন, আপনার কাছে দুটো মহিষ থাকলে একটি কংগ্রেস নিয়ে নেবে। আপনারা বলুন, ৫৫ বছর ধরে আমাদের সরকার কখনও আপনাদের কোনও জিনিস কেড়ে নিয়েছে?’‌ মোদির মন্তব্যের সমালোচনা করে প্রিয়াঙ্কা বলেছেন, নির্বাচন হচ্ছে এই দেশে অথচ উনি কথা বলছেন পাকিস্তান নিয়ে। বিজেপিকে নিশানা করে সোনিয়া কন্যা বলেছেন, ‘বিজেপি আমাদের বদনাম করে অথচ নিজেরা বিশ্বের সব চেয়ে ধনী দল হয়ে বসেছে। ৬০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে নিজেদের দপ্তর তৈরি করেছে।’‌
প্রিয়াঙ্কা বলেছেন, গত ১০ বছরে প্রধানমন্ত্রী শুধু জনগণের অধিকার খর্ব করার কাজ করেছেন। তাঁর কাছে থাকা লোকেরা ভয় পান। তাঁর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে সাহস পায়না। কেউ চেষ্টা করলে তাঁকে দাবিয়ে দেওয়া হয়। বিজেপি সংবিধান বদলাতে চাইছে। যে অধিকার সাধারণ মানুষ পেয়ে চলেছে, সেই অধিকারকে দূর্বল করতে চাইছে। কংগ্রেস নেত্রীর বেকারত্ব নিয়েও মোদি সরকারের বিরুদৃধে সুর চড়িয়েছেন এদিন। বলেছেন, দেশে এখন সবচেয়ে বেশি বেকারি। দেশের কোটি কোটি যুবক বেকার হয়ে বসে আছে। স্থায়ী নিয়োগের বদলে সেনাবাহিনীতে নিয়োগে স্বল্পমেয়াদের ‘‌অগ্নিবীর’‌ যোজনা এনেছে সরকার। যুবকরা এই প্রকল্পে যোগদান করতে চায়না। কেননা পাঁচ বছর চাকরির পর বেকার হয়ে যাবেন তারা। দেশে সবকিছুই হচ্ছে কেবল পুঁজিপতিদের জন্য।