আজকাল ওয়েবডেস্ক: নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ঝলানাথ খানালের স্ত্রী রবি লক্ষ্মী চিত্রকার মারা গেলেন। রাজধানী কাঠমান্ডুর দাল্লু এলাকায় চলা অশান্তির মধ্যে তাঁদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর গুরুতর দগ্ধ হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।


ইন্ডিয়া টুডের খবর অনুযায়ী, পরিবার জানিয়েছে যে চিত্রকারকে গুরুতর অবস্থায় কির্তিপুর বার্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে চিকিৎসকরা তাঁকে আর বাঁচাতে পারেননি। এই হামলার ঘটনা ঘটল এমন সময়ে যখন নেপালে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো সহিংস জেন-জি নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভ চলছিল। সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পরও বিক্ষোভ থামেনি। প্রতিবাদকারীরা প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগ এবং সরকারের অবিলম্বে বরখাস্ত দাবি করছেন। দ্বিতীয় দিনের বিক্ষোভে আরও দুই জন নিহত হওয়ার ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২২-এ পৌঁছেছে এবং আহতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে।

আরও পড়ুন: বাড়িতেই প্লাস্টিকের বাক্সকে নতুনভাবে ব্যবহার করতে পারেন, রইল টিপস


এরই মধ্যে নেপালের প্রধান সরকারি ও রাজনৈতিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানো হয়েছে। দুষ্কৃতীরা অগ্নিসংযোগ করেছে কাঠমান্ডুর সিংহ দরবারে—যা কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক কমপ্লেক্স—এবং শীতল নিবাসে, যা প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন। এছাড়া প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পাওডেল, প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দাহাল ‘প্রচণ্ড’ ও শের বাহাদুর দেউবার বাসভবনেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।


দেউবার বাসভবনে হামলার সময় তিনি ও তাঁর স্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী অর্জু রানা দেউবাও আক্রান্ত হন বলে জানা গেছে। এদিকে, ক্রমবর্ধমান সহিংসতার মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ও বিক্ষোভকারীদের টার্গেটে পরিণত হয়েছে।


অশান্ত নেপাল। সেখানে বসবাসকারী ভারতীয়দের উদ্দেশে ইতিমধ্যেই একগুচ্ছ পরামর্শ জারি করেছে কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রক। এবার Gen-Z-র প্রতিবাদে উত্তাল নেপালে উড়ান পরিষেবা সাসপেন্ড করল একাধিক এয়ারলাইন। ইন্ডিগো ও স্পাইসজেটের তরফে ইতিমধ্যে এই মর্মে বিবৃতি জারি করা হয়েছে। 


এক বিবৃতিতে ইন্ডিগোর তরফে এক্স করে বলা হয়েছে, "কাঠমাণ্ডুর বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে, বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে, কাঠমাণ্ডুতে আসা এবং যাওয়ার সমস্ত ফ্লাইট আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। যদি আপনার ভ্রমণ প্রভাবিত হয়, তাহলে আপনি সুবিধাজনকভাবে বিকল্প ফ্লাইট বেছে নিতে পারেন অথবা আমাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে টাকা ফেরত দাবি করতে পারেন। আমরা ঘটনাস্থলের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রাখছি। গ্রাহকদের সর্বশেষ পরামর্শ এবং আপডেটের জন্য আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলগুলিতে নজর রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।"


বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে নেপাল। Gen-Z-র প্রতিবাদে ছড়িয়ে পড়েছে অশান্তির আগুন। এই পরিস্থিতিতে ইস্তফা দিয়ে সেনার হেলিকপ্টারে কাঠমাণ্ডু ছাড়তে দেখা গিয়েছে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলিকে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গী প্রকাশ শিলওয়াল জানিয়েছেন, "প্রধানমন্ত্রী ইস্তফা দিয়েছেন।" প্রতিবাদের দ্বিতীয় দিনে আরও দুই জনের মৃত্যুর পর, বিক্ষোভের আঁচ বাড়তে থাকে। প্রধানমন্ত্রী ওলির বহিষ্কার ও সরকার বাতিলের দাবিতে সরব হন Gen-Z। এই আবহে Gen-Z-র মধ্যে থেকেই নেপালে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি বেছে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছে Gen-Z।