প্রযুক্তির উন্নতিতে চিকিৎসা বিজ্ঞানে আসছে একের পর এক বিপ্লব। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) চালিত স্টেথোস্কোপ। গবেষকদের দাবি, এই স্মার্ট স্টেথোস্কোপ মাত্র ১৫ সেকেন্ডের মধ্যেই শনাক্ত করতে পারবে তিনটি মারাত্মক হৃদরোগ, যা সাধারণত দীর্ঘ সময়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া ধরা যায় না।
বর্তমানে চিকিৎসকেরা যে স্টেথোস্কোপ ব্যবহার করেন তার বয়স প্রায় ২০০ বছর। প্রথাগত এই যন্ত্রের সাহায্যে হৃদযন্ত্রের শব্দ শোনা যায়। হার্টের অবস্থা কেমন অর্থাৎ হৃদযন্ত্রের কলকব্জা ঠিক আছে কিনা তা ওই শব্দ শুনে বুঝতে পারেন চিকিৎসকেরা। যদিও সময়ের সঙ্গে অনেক আধুনিক প্রযুক্তির স্টেথোস্কোপ এসেছে। তবে এবার আরও এক ধাপ এগিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সংযোগ ঘটানো হয়েছে স্টোথোস্কোপের।
আরও পড়ুনঃ ৫০ পেরলেও যৌনসুখে পড়বে না ভাটা! জেনে রাখুন কোন গোপন কৌশলে বজায় থাকবে সম্পর্কের উষ্ণতা
এমনিতেই বর্তমানে জুতো সেলাই থেকে চন্ডীপাঠ সবেতেই এআই-এর দখলদারি। চিকিৎসবিজ্ঞানেও ইতিমধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা জায়গা করে নিয়েছে। এবার এআই স্টেথোস্কোপের সাহায্যে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আগেই সতর্ক হতে পারবেন রোগী।
ঠিক কীভাবে কাজ করে এআই স্টেথোস্কোপ? দেখতে এটি সাধারণ স্টেথোস্কোপের মতো হলেও এর ভেতরে রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালিত বিশেষ সফটওয়্যার। চিকিৎসক যখন রোগীর বুকের ওপর স্টেথোস্কোপ রাখেন, তখন এটি হার্টস্পন্দনের প্রতিটি শব্দ বিশ্লেষণ করে। এআই প্রযুক্তি সেই শব্দ থেকে হার্টের অস্বাভাবিকতা শনাক্ত করে জানিয়ে দেবে রোগের সম্ভাব্য ধরন। যার সময় লাগবে মাত্র ১৫ সেকেন্ড। ব্রিটেনের ইম্পিরিয়াল কলেজ অফ লন্ডন এবং ইম্পিরিয়াল কলেজ হেল্থকেয়ার এনএইচএস-এর গবেষকেরা এআই পরিচালিত বিশেষ এক রকমের স্টেথোস্কোপ বানিয়েছেন।তিনটি প্রাণঘাতী হৃদরোগ শনাক্ত করতে পারবে এই এআই স্টেথোস্কোপ।

১. হার্ট ফেইলিউরঃ এক্ষেত্রে যেখানে হৃদপিণ্ড ঠিকমতো রক্ত পাম্প করতে পারে না।
২. অর্টিক স্টেনোসিসঃ হৃদপিণ্ডের ভালভ সংকুচিত হয়ে রক্তপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে।
৩. মাইট্রাল রিগারজিটেশনঃ এটি হার্টের ভালভের সমস্যা যার কারণে রক্ত উল্টো দিকে চলে যায়।
এই রোগগুলো সময়মতো শনাক্ত না হলে প্রাণঘাতী হতে পারে। সাধারণত এগুলো ধরতে ইকোকার্ডিওগ্রাফি বা জটিল পরীক্ষার প্রয়োজন হয়। কিন্তু এআই স্টেথোস্কোপ সেই কাজকে অনেক সহজ, দ্রুত এবং কার্যকর করে তুলছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই প্রযুক্তি ব্যবহার করলে অল্প সময়ের মধ্যেই গুরুতর হৃদরোগ ধরা পড়বে এবং দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা যাবে। বিশেষ করে গ্রামীণ বা চিকিৎসা সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় যেখানে উন্নত পরীক্ষার সুযোগ নেই, সেখানে এই স্টেথোস্কোপ একটি জীবনরক্ষাকারী সমাধান হতে পারে।
