অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন কিনা জানতে আজকাল বেশিরভাগ মহিলাই প্রাথমিকভাবে প্রেগন্যান্সি কিট ব্যবহার করেন। এই যন্ত্রের ব্যবহারও সহজ। নিজের প্রস্রাব পরীক্ষার মাধ্যমে সুখবর জেনে নিতে পারেন হবু মায়েরা। সাধারণত স্ট্রিপে একটি রঙিন রেখা বা লাইন এলে প্রেগন্যান্সি নেগেটিভ, স্ট্রিপে পাশাপাশি দুটি রঙিন রেখা বা লাইন দেখা গেলে পজিটিভ, এমনকী হালকা রেখা হলেও পজিটিভ বলে গণ্য করা হয়। কিন্তু জানেন কি একইভাবে পুরুষদের প্রেগন্যান্সি টেস্টের ফলও পজিটিভ হতে পারে। শুনতে যতই অবিশ্বাস্য লাগুক, প্রেগন্যান্সি টেস্টের কিটে দুটি রেখা আসতে পারে পুরুষদেরও। তবে গর্ভধারণ নয়, চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে, এটি আসলে গুরুতর শারীরিক রোগের ইঙ্গিত বহন করে।
গর্ভধারণ করলে শরীরে বিটা এইচসিজি (হিউম্যান কোরিওনিক গোনাডোট্রপিন)নামে একটি হরমোন তৈরি হয়, যার উপস্থিতি প্রস্রাবেও নির্ণয় করা যায়। প্রেগন্যান্সি টেস্ট মূলত প্রস্রাবে উপস্থিত এই হরমোন শনাক্ত করে। সাধারণত এইচসিজি কেবল গর্ভবতী মহিলাদের শরীরে উৎপন্ন হয়। কিন্তু কিছু পুরুষের শরীরেও এই হরমোন অস্বাভাবিকভাবে তৈরি হতে পারে। যার ফলে প্রেগন্যান্সি টেস্টের ফলাফল পজিটিভ আসে।
আরও পড়ুনঃ অল্প সময়েই উধাও দামি পারফিউমের সুগন্ধ? শুধু ৫ কৌশল মেনে চলুন, ঘেমেনেয়ে একসা হলেও হবে না দুর্গন্ধ
চিকিৎসকদের মতে, পুরুষের শরীরে যদি এইচসিজি হরমোন পাওয়া যায়, তবে তা অনেক সময় বৃক্ক, অণ্ডকোষ বা অন্যান্য ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। বিশেষ করে টেস্টিকুলার ক্যানসারের ক্ষেত্রে এই হরমোন অস্বাভাবিকভাবে তৈরি হয়। তাই কোনও পুরুষ যদি মজার ছলে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করেন এবং ফলাফল পজিটিভ হয় তাহলে তা কখনওই হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। শরীরের অন্য কোনও অংশের টিউমার থেকেও এইচসিজি নিঃসৃত হতে পারে।

বেশ কয়েকবার এমন ঘটনা সামনে এসেছে যেখানে কোনও পুরুষ গর্ভধারণ পরীক্ষার কিট ব্যবহার করে ফলাফল পজিটিভ আসায় চমকে গিয়েছেন। পরে চিকিৎসকের থেকে জানতে পারেন যে তাঁর শরীরে টেস্টিকুলার ক্যানসার ধরা পড়েছে।
পুরুষের প্রেগন্যান্সি টেস্টে পজিটিভ ফল আসা আসলে এক ভয়ংকর রোগের প্রাথমিক সতর্কবার্তা হতে পারে। তাই এই ধরনের ফলকে গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রেগন্যান্সি টেস্ট পুরুষদের জন্য কোনও নির্ভরযোগ্য পরীক্ষার পদ্ধতি নয়। তবে কোনও পুরুষের ক্ষেত্রে যদি টেস্টে পজিটিভ ফল আসে, তাহলে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে গিয়ে সঠিক পরীক্ষা করানো জরুরি।
