শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে পর্যাপ্ত ঘুমের কোনও বিকল্প নেই। বেশ কয়েক রাতে ঘুম কম হতে থাকলে ক্লান্তিভাব, মনোযোগের অভাব, বিষণ্ণতা, উদ্বেগও বাড়তে পারে। আর যদি এই ঘুম কম হওয়াটা চলতেই থাকে, তাহলে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও ওজন বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। চিকিৎসকদের মতে, প্রতিদিন ৬-৮ ঘণ্টা ঘুম জরুরি। ঘুমের ওষুধের ভরসা করলে আবার শরীরে আরও অনেক জটিলতা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই অনিদ্রার সমস্যার মোক্ষম দাওয়াই হতে পারে ফল। তিনটি ফল নিয়ম করে খেলে রাতে ঘুমের সমস্যার সমাধান হবে।

কলাঃ কলায় রয়েছে উচ্চ মাত্রার ম্যাগনেশিয়াম এবং পটাশিয়াম যা শরীরকে শান্ত করে। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় কলা ব্রেনকে চাপমুক্ত করে ঘুমাতে সাহায্য করে। সঙ্গে রাতের কোনও ব্যথা বাড়লে তা কমিয়ে দেয় এবং সর্বোপরি শরীরকে ঘুমের জন্য প্রস্তুত করে কলা।এছাড়াও এই ফলে অ্যামিনো অ্যাসিড, টাইপোফেনও থাকে। এগুলো মস্তিষ্কের উদ্দীপনা কমিয়ে দিতে পারে এমন হরমোন ক্ষরণে সাহায্য করে। অনেকেরেই রাতে ফল খেলে তা হজমে সমস্যা হয়। এছাড়া গ্যাস-অ্যাসিডিটির মতো সমস্যাও হয়ে থাকে। তাই তাঁদের বুঝশুনে কলা খাওয়া উচিত। 

আরও পড়ুনঃ হেঁশেলেই লুকিয়ে ডায়াবেটিসের মহৌষধ! পেট, ত্বকও রাখে ভাল, কী জানলে রোজ খাবেন

কিউইঃ গবেষণায় উঠে এসেছে,  রোজ রাতে কিউই খেলে অনিদ্রার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। রোজ ঘুমানোর এক ঘণ্টা আগে এই ফল খেলে ভাল ঘুম হয়। তবে কিউই খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যে কাজ হতে শুরু করবে, এমনটা নয়। টানা এক মাস খাওয়ার পরই সুফল পাওয়া যাবে বলে মত গবেষকদের। কিউই ফল হিসেবে খুবই পুষ্টিকর। এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমানে ক্যালোটিনয়েড অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ফোলেট।  এছাড়াও ডোপামিন, সেরোটোনিন, অক্সিটোসিন ও এন্ডোরফিন—এই চার হ্যাপি হরমোনের মধ্যে কিউইতে রয়েছে সেরোটোনিন।  গবেষকদের মতে, এই যৌগগুলি শরীরের স্বাভাবিক ঘুমের চক্রের উপর প্রভাব ফেলে। তাই রোজ নিয়ম করে কিউই খেলেই উপকার পাবেন হাতেনাতে। 

চেরিঃ ঘুমানোর আগে চেরি খেলে তা প্রাকৃতিক মেলাটোনিনের মাত্রা বাড়ায় যা আপনাকে গভীর ঘুমের ঘুমে সাহায্য করে। চেরি হল মেলাটোনিনের সবচেয়ে সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক উৎসগুলির মধ্যে একটি। এই ফল  ঘুমের চক্র নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে  শুলে দ্রুত ঘুমিয়ে পড়া এবং দীর্ঘক্ষণ ঘুমিয়ে থাকার প্রক্রিয়াকে সহজ করে তোলে।যদিও মিষ্টি চেরি খেতে ভালো লাগে, তবে টার্ট চেরিতেই থাকে বেশি পরিমাণে মেলাটোনিন ও অ্যান্থোসায়ানিন। তাই ঘুমের জন্য কার্যকরভাবে এটি এগিয়ে। 

শুধু ঘুমের জন্য নয়, নিয়মিত কলা, কিউই ও চেরি খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। যেমন কিউই সার্বিকভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি ত্বকের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখে, ত্বক ভাল রাখতে কাজে লাগে। কিউইর পুষ্টিকর উপাদান ত্বককে অক্সিডেটিভ ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। কলায় রয়েছে ফাইবারের ভাণ্ডার। তাই নিয়মিত কলা খেলে পেটের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। চেরির অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও অ্যান্থোসায়ানিন ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, বিশেষ করে ব্যায়ামের পর। এমনকী এই ফল খেলে আর্থ্রাইটিস ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও উপকার পেতে পারেন।