কথায় আছে মাছে-ভাতে বাঙালি। ভাজা হোক বা ঝোল-কালিয়া, পাতে মাছ না পড়লে রসনাতৃপ্তি হয় না অনেকের। তবে মাছ শুধু সুস্বাদুই নয়, স্বাস্থ্যের জন্য উপকারীও বটে। এটি নানা ধরনের পুষ্টিগুনে সমৃদ্ধ। ঘন চুল এবং উজ্জ্বল ত্বক পেতে চাইলে খাদ্যতালিকায় কিছু পুষ্টি উপাদান অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বিশেষ করে প্রোটিন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন ডি এবং বি১২ এর মতো পুষ্টি উপাদান ত্বক এবং চুলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মাছ এমন একটি সুপারফুড যেখানে এই সব ধরনের পুষ্টি উপাদান প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এক মাস যদি ঠিক ধরনের মাছ খান, তাহলে চুলে এবং ত্বক, দুই-ই সুন্দর হবে। কোন কোন মাছ পাতে রাখতে হবে, জেনে নিন।
টুনা মাছ প্রোটিনের একটি চমৎকার উৎস। পাশাপাশি এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি১২ এবং সেলেনিয়াম রয়েছে। এগুলি ত্বকের কোষ এবং ক্ষতিগ্রস্ত চুল মেরামত করতে সাহায্য করে। এটি স্যান্ডউইচ, স্যালাড বা গ্রিল করে খেতে পারেন। স্বাদ ভাল এবং এটি ওজনও নিয়ন্ত্রণে রাখে। অর্থাৎ একটি মাছেই শরীরের অনেকগুলি সমস্যা দূর হয়ে যেতে পারে।
স্যামন সুশি অনেকেরই প্রিয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই মাছ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, উচ্চমানের প্রোটিন, ভিটামিন ডি এবং বায়োটিন সমৃদ্ধ। এই উপাদানগুলি চুলের গোড়া মজবুত করে এবং ত্বকে কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়। যা ত্বককে তরুণ এবং উজ্জ্বল রাখে। স্যামন খাওয়া শরীরে দীর্ঘ সময় ধরে শক্তি সরবরাহ করে এবং এটি বিপাকও উন্নত করে।
ম্যাকেরেল মাছে ওমেগা-৩ এবং কোএনজাইম Q10 পাওয়া যায় যা ত্বককে বার্ধক্য প্রতিরোধী করে তোলে। এটি বলিরেখা কমায় এবং ত্বককে ভিতর থেকে সুস্থ করে তোলে। এই মাছ চুলের দ্রুত বৃদ্ধি বৃদ্ধিতেও কার্যকর। এটি ভাজা বা গ্রিল করে খাওয়া যেতে পারে। ৪০ পেরলেও ত্বক থাকবে টানটান এবং জেল্লাদার।
রুই মাছ কম-বেশি সকলের হেঁসেলেই আসে। বাজারেও এটি সহজে পাওয়া যায়। দামও বিশেষ কিছু নয়। তবে এই মাছ পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। এতে প্রোটিনের পাশাপাশি আয়রন, জিঙ্ক এবং ক্যালসিয়ামের মতো উপাদান রয়েছে। এগুলি চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে এবং ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে। রুই মাছ ভাজা বা ঝোল হিসাবে খাওয়া যেতে পারে।
ইলিশ মাছ ভালবাসেন না, এমন মানুষ খুঁজলেও পাওয়া যাবে না। ইলিশের বিরিয়ানি হোক বা কালো জিরে দিয়ে পাতলা ঝোল বা ভাপা, এই মাছের কদর বাঙালি বাড়িতে আকাশছোঁয়া। ইলিশ মাছে উপস্থিত হেলদি ফ্যাট এবং প্রোটিন চুলের গোড়ায় পুষ্টি জোগায়। শুধু তাই নয়। এই মাছ ত্বকের শুষ্কতা দূর করে। ইলিশে পাওয়া মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টগুলি ত্বককে ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি থেকেও রক্ষা করে। চুল ঘন এবং শক্তিশালী করতে চাইলে ইলিশ খান। ত্বকে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতেও এই মাছের জুরি মেলা ভার।
অর্থাৎ অবশ্যই এই মাছগুলিকে খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন। সপ্তাহে দু'থেকে তিনবার এগুলি খেলে মাত্র এক মাসের মধ্যে পার্থক্য অনুভব করতে পারবেন। মনে রাখবেন, বাজার থেকে বেছে তাজা মাছ কিনতে হবে। এবং সেটিকে ভাল ভাবে পরিষ্কার করে রান্না করা উচিত। যাতে পুষ্টি উপাদানগুলি শরীরে সম্পূর্ণরূপে শোষিত হয়।
