আজকাল ওয়েবডেস্ক: বর্তমানে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন তরুণ মহিলাদের একা ভ্রমণের প্রবণতা ক্রমে বেড়েই চলেছে। স্বাধীনতা ও আত্মনির্ভরতার প্রতীক হিসেবে অনেক তরুণী একাই নতুন নতুন জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু পাশাপাশি এর সঙ্গে বাড়ছে এমন কিছু ঘটনা, যা এই সাহসী যাত্রাকে অত্যন্ত ভয়ঙ্কর করে তুলছে। সম্প্রতি এমনই একটি ঘটনা সামনে এসেছে, যা এক তরুণী পর্যটক ন্যাটালির জীবনে এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতার সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনার পর থেকে অনেকেই একা ভ্রমণে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য হচ্ছেন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে, থাইল্যান্ডের বাসিন্দা ন্যাটালি গত মার্চ মাসে একা ভ্রমণে জাপানে যান। গোটা সফর অত্যন্ত সুন্দর ও আনন্দময় ছিল। কিন্তু আচমকা এরপরই ঘটে বিপত্তি। জানা গিয়েছে এরপর তিনি একটি হোটেলে চেক-ইন করতেই ঘটনায় অন্য মোড় নেয়। স্থানীয় সময় অনুযায়ী, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ তিনি হোটেলে পৌঁছান। এরপর ক্লান্ত হয়ে নিজের কক্ষে বিশ্রাম নিতে যান। কিন্তু কক্ষে প্রবেশ করার কিছুক্ষণের মধ্যেই একটি অস্বাভাবিক গন্ধ পান তরুণী। শুরুতে তিনি ভেবেছিলেন এটি বিছানার চাদর থেকে আসছে। কিন্তু তাঁর অন্তর্দৃষ্টি কিছু একটা অস্বাভাবিক ইঙ্গিত দিচ্ছিল। তাই তিনি হোটেল রুম ভালোভাবে পরীক্ষা করতে শুরু করেন।
গন্ধের উৎস খুঁজতে খুঁজতে তিনি বিছানার নিচে তাকান এবং যা দেখেন, তা তাঁর জীবনের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর মুহূর্তে পরিণত হয়। বিছানার নিচে লুকিয়ে ছিল এক অজ্ঞাত ব্যক্তি।
ঘটনাটি এতটাই আতঙ্কের ছিল যে, ন্যাটালি সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করে ওঠেন। তাঁর চিৎকার শুনে সেই ব্যক্তি আতঙ্কিত হয়ে বিছানার নিচ থেকে বের হয়ে দ্রুত রুম থেকে পালিয়ে যায়। হোটেলের সিসিটিভিতে এই ঘটনার কোনও রেকর্ড ছিল না। এমনকি আশেপাশের কর্মীরাও কিছু টের পাননি। পরে জানা যায়, ওই হোটেলটিতে ঘটনার সময় আশেপাশে কোনও নজরদারি ক্যামেরা ছিল না। একমাত্র প্রমাণ হিসেবে পাওয়া যায় ওই ব্যক্তির ফেলে যাওয়া একটি চার্জার ও পাওয়ার ব্যাংক।
ঘটনার পরপরই ন্যাটালি হোটেল ম্যানেজমেন্ট এবং স্থানীয় পুলিশকে পুরো বিষয়টি জানান। কিন্তু পর্যাপ্ত প্রমাণ না থাকায় এবং কোনও ভিডিও ফুটেজ না পাওয়ায় অপরাধীকে এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি, এমনটাই অনুমান করা হয়েছে। ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে ন্যাটালি হোটেলটি ছেড়ে দেন। বদলে অন্য একটি হোটেলে গিয়ে ওঠেন।
এই ঘটনার মানসিক অভিঘাত এতটাই প্রবল ছিল যে, এরপর থেকে তিনি আর কোনও হোটেল রুমে নিজেকে পুরোপুরি নিরাপদ মনে করতে পারেন না। সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, হোটেলটির কাছ থেকে তিনি মানসিক ক্ষতিপূরণ চাইলেও কোম্পানির নীতির অজুহাতে তা ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে তিনি নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে এই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেন। যেন অন্য মহিলা পর্যটকরা বাইরে বেড়াতে গেলে সচেতন থাকেন। তিনি সকলকে অনুরোধ করেন, হোটেল রুমে প্রবেশের পর ভালোভাবে পুরো ঘর পরিদর্শন করতে-বিশেষ করে বিছানার নিচে, আয়নার পেছনে, আলমারির ভেতর এবং গোপন ক্যামেরার সম্ভাব্য স্থানগুলোতে নজর দিতে।
আরও পড়ুনঃ দর্শকের মুখেই প্রস্রাব আরেক পর্যটকের! লোনাভালার বাধে ভাইরাল অশোভন কাণ্ড!...
এই ঘটনার জেরে একা ভ্রমণকারী মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে আলোচনা উস্কে দিয়েছে। বিশেষ করে বাজেট হোটেলগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, যেখানে পর্যাপ্ত নজরদারি কিংবা পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা নেই। এতে বোঝা যাচ্ছে, স্বাধীনতা ও অভিযানের পথে পা বাড়ানোর আগে মহিলাদের এখনও অনেক বেশি সচেতন এবং প্রস্তুত থাকার প্রয়োজন রয়েছে।
