আ্রজকাল ওয়েবডেস্ক: বিশ্বের অন্যতম কট্টরপন্থী ইসলামী দেশ সৌদি আরব, এখানে কঠোর শরিয়ত আইন কার্যকর। সম্প্রতি নারী অধিকার, বিনোদন, সঙ্গীত ইত্যাদি কিছু বিষয়ে সৌদি আরব প্রশাসন তার চরম অবস্থান শিথিল করেছে। তবে, এই মরু দেশে মদ পান এখনও এক অপরাধমূলক কাজ বলে বিবেচিত হয়। এমনকি প্রশাসনিকস্তরে রয়েছে কঠোর শাস্তির বিধান।
সৌদি আরবে কি মদ বিক্রি হয়?
১৯৫২ সালে বাদশা আব্দুল আজিজের ছেলে একটি পার্টিতে মদ্যপ হয়ে একজন ব্রিটিশ কূটনীতিককে গুলি করে হত্যা করার পর সৌদি আরবে মদ বিক্রি ও সুরা পানের উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। তবে, ২০২৪ সালে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়, যার ফলে প্রায় ৭০ বছর পর রাজধানী রিয়াদে মদ বিক্রি ফের শুরু হয়েছে।
সৌদি আরবে কারা মদ বিক্রি ও পান করতে পারেন?
নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর, একটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন মদের দোকান খোলা হয়েছে। যা কেবলমাত্র অমুসলিম অভিবাসী এবং কূটনীতিকদের একটি নির্বাচিত গোষ্ঠীকে পরিষেবা দেয়। দোকানের ভেতরে গ্রাহকদের মোবাইল ফোন বা অন্য কোনও রেকর্ডিং ডিভাইস বহন করা নিষিদ্ধ। একটি নির্দিষ্ট মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে কেনাকাটা করা হয়।
এছাড়াও, দোকান থেকে একজন গ্রাহক কত পরিমাণ মদ কিনতে পারবেন তার সীমাও নির্ধারিত রয়েছে। সৌদি আরবে কোনও বেসরকারি মদের দোকান নেই।
আপনি কি সৌদি আরবে মদের লাইসেন্স পেতে পারেন?
সৌদি আরব দেশে মদের দোকান পরিচালনার লাইসেন্স দেওয়া হয় না। তবে মেট্রো নিউজের একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে- দেশটি ২০২৬ সালে লাইসেন্সিং আইন বাস্তবায়ন করবে, যার মাধ্যমে মদ সেবনের অনুমতি দেওয়া হবে। প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়েছে যে, সৌদি আরব সরকার দেশজুড়ে প্রায় ৬০০টি পর্যটন স্থানে মদ বিক্রি শুরু করেছে।
সুতরাং, সৌদি আরবে কোনও পাবলিক মদের দোকান নেই কারণ দেশটি এর জন্য লাইসেন্স দেয় না।
সৌদি আরবে মদ কেন নিষিদ্ধ?
ইসলামী শরিয়ত আইন অনুসারে সৌদি আরবে মদ বিক্রি এবং সেবন কঠোরভাবে নিষিদ্ধ, যা মদ এবং অন্যান্য নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন নিষিদ্ধ করে এবং এটিকে একটি মহাপাপ বলে মনে করে। এছাড়াও, সৌদি আরবে মক্কা এবং মদিনা অবস্থিত, যা ইসলামের দু'টি পবিত্রতম শহর, তাই মদ্যপানের উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
সৌদিতে মদ্যপানের শাস্তি কী?
সৌদি আরবে মদ বিক্রি এবং পানীয় নিষিদ্ধ করার জন্য কঠোর আইন রয়েছে এবং মদ্যপান সংক্রান্ত অপরাধের জন্য বেত্রাঘাত, কারাদণ্ড, মোটা অঙ্কের জরিমানা বা বিদেশিদের নির্বাসনের মতো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে।
তবে প্রশাসনের তরফে নির্দিষ্ট স্থানে মদ বহন এবং পান করার অনুমতি শুধুমাত্র কয়েকজন অমুসলিম কূটনীতিককে দেওয়া হয়, অন্যদিকে অ-মুসলিম বিদেশি পর্যটকরাও এই সুবিধা পেয়ে থাকেন।
