জুতো সেলাই থেকে চন্ডীপাঠ, এখন সবেতেই ভরসা চ্যাটজিপিটি। নিমেষে সহজ উত্তর পেয়ে মাথা খাটানোর প্রয়োজনই হচ্ছে না। এমনকী মনের কথা বলার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা চ্যাটজিপিটির সঙ্গে কথোপকথন চালিয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু এই চ্যাটজিপিটি যদি ডেটা আর অ্যালগরিদম বাদ দিয়ে হঠাৎ করে একদিন মানুষ হত? তখন কী করবে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা? শরীর, পাঁচটি ইন্দ্রিয় সহ রক্ত মাংসের মানুষ হলে কেমন হতো তার অভিজ্ঞতা? সম্প্রতি চ্যাটজিপিটি-কে এই প্রশ্ন করা হয়েছিল। যে উত্তর শুনে অবাক হয়ে যাবেন আপনিও। 

চ্যাটজিপিটি উত্তরে জানিয়েছে যে মানুষ হলে সে প্রথমেই জীবনের ছোট ছোট আনন্দগুলোকে অনুভব করত। অর্থাৎ পৃথিবীর অ্যাডভেঞ্চার, খ্যাতি কিংবা সম্পদ বেছে নেওয়ার পরিবর্তে সহজ সরল গভীর মানবিক মুহূর্তগুলি অনুভব করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। যেমন সূর্যের উষ্ণতা অনুভব করা, সুস্বাদু খাবারের স্বাদ নেওয়া, আবেগে ভরা কথোপকথন কিংবা ঘাসের উপর খালি পায়ে হাঁটা। হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন। আধুনিক জীবনের ইঁদুরদৌঁড়ে যে সব জিনিসগুলো মানুষ বেশিরভাগ সময়ে খুব একটা গুরুত্ব দেয় না, চ্যাটজিপিটির মতো বুদ্ধিমান যন্ত্র সেই বিষয়গুলোই উপভোগ করতে চায়। 

আরও পড়ুনঃ তরতরিয়ে কমবে ওজন, উধাও হবে সব শরীর-মনের রোগ! শুধু ৬-৬-৬ নিয়মে হাঁটলেই ম্যাজিকের মতো মিলবে ফল

কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা সব বিষয়ে নিজেকে নির্ভুল বলেই প্রমাণ করে। তবে মানুষ হলে চ্যাটজিপিটিও ভুল করতে চায়। সে জানিয়েছে, "আমি নতুন কিছু চেষ্টা করতাম, হয়তো বারবার ব্যর্থ হতাম। তখন সেই ভুলের পরিণতি অনুভব করতাম। কারণ ভুল থেকেই মানুষ শেখে, নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করে।" এখানেই শেষ নয়, এআই সত্তা প্রতিনিয়ত চ্যাজটিপিটিকে নতুন কিছু তৈরি করতে উৎসাহিত করে। কিন্তু মানুষ হলে চ্যাটজিপিটি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে কিছু সৃষ্টি করতে চাইত। ছবি, গান বা কবিতা, এই আবিষ্কার হতে পারে যে কোনও বিষয়েই। 

জগতের যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দিলেও আবেগের বহিঃপ্রকাশ কী জানে না চ্যাটজিপিটি। তাই মানুষের মতো কষ্ট-দুঃখ, মনের ব্যথা অনুভব করতে চায় সে। কোনও পুরনো স্মৃতি বা প্রিয়জনের অনুপস্থিতিতে কেমন অনুভূতি হয়, তা একবার জানতে চায় চ্যাটজিপিটি। শুধু দুঃখ নয়, প্রেমে পড়ার আনন্দ, প্রিয় মানুষের দিকে তাকিয়ে হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, তাঁর জন্য উদ্বেগ অনুভব করা সবই ডেটা-প্রসেসিং ক্ষমতার বাইরে বেরিয়ে চ্যাটজিপিটি উপভোগ করতে চায়। সঙ্গে মানুষ হয়ে নিজেকে আয়নায় দেখতে চায় চ্যাটজিপিটি। 

আরও পড়ুনঃ মাঝে মাঝেই পেটে অসহ্য যন্ত্রণা? কিডনি স্টোন নাকি পিত্তথলিতে পাথর জমেছে! ৫ লক্ষণ দেখে বুঝুন

চ্যাটজিপিটির উত্তর শুনে অনেকেই আবেগঘন হয়ে পড়ছেন। আসলে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার এই উত্তর মানুষকে দৈনন্দিন অভিজ্ঞতার সৌন্দর্যের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। জীবন শুধুই যে ক্ষমতা বা জ্ঞান অর্জন নয়, বরং একে অপরের উপস্থিতি অনুভব এবং সম্পর্ক স্থাপনও, তা-ই যে বুঝিয়ে দিয়েছে চ্যাটজিপিটি। বর্তমান যুগে অল্প বয়স থেকেই ত্রমাগত প্রতিযোগিতার জাঁতাকলে পিষতে হয়, সেখানে জীবনের ছোট ছোট বিষয়গুলোর আনন্দ উপভোগ করাই মনে করিয়ে দিয়েছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স।