প্যাচপ্যাচে গরমের পর বর্ষাকাল স্বস্তি নিয়ে আসে বটে! কিন্তু বৃষ্টির হাত ধরেই হাজির হয় একগুচ্ছ সমস্যা। বর্ষাকালে সব কিছুরই বাড়তি যত্ন নিতে হয়। শরীর-স্বাস্থ্যও এর ব্যতিক্রম নয়। বর্ষায় সক্রিয় হয়ে ওঠে কিছু ভাইরাস। বিশেষত সিজনাল ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপ বেশি থাকে। আর এই ধরনের ভাইরাসের খপ্পরে পড়ে জ্বর, সর্দি, কাশির মতো সমস্যা ভোগায়। তাই বর্ষাকালে স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে শিশুদের বিষয়ে মা-বাবার সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। বর্ষাকালে আর্দ্রতা ও ছত্রাকের কারণে শিশুদের অ্যাজমা ও অ্যালার্জির সমস্যা বেড়ে যায়। এই সময় হাঁচি, কাশি, শ্বাসকষ্ট বা বুকের ভেতর শোঁ শোঁ শব্দ শোনা—এসব লক্ষণ সাধারণ। সেক্ষেত্রে ঘরে সামান্য কিছু সতর্কতা নিলেই শিশুর শ্বাসকষ্ট অনেকটাই কমানো সম্ভব।


* লক্ষণ বুঝে পদক্ষেপ নিন: কখন সমস্যা বাড়ছে, কোন কারণে হচ্ছে এগুলো নজরে রাখুন। অর্থাৎ সারাদিন কাশি হচ্ছে বাকি রাতে বাড়ছে এসব কিছুই চিকিৎসার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। 


* পুষ্টিকর খাবার দিন: ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার প্রদাহ কমায়। তাই শিশকে নিয়মিত এই সব খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করুন।

 

আরও পড়ুনঃ সন্তান সারাদিন একা থাকে? কীভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে শেখাবেন, জানুন বিশিষ্ট মনোবিদের পরামর্শ


* ঘরে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখুন: ভেন্টিলেশন ভাল হলে ছত্রাক ও ধুলো জমে না। সেক্ষেত্রে ঘরে রোদ, বাতাস ঢোকার জন্য দরজা, জানলা খোলা রাখুন। 


* বিছানা, পর্দা পরিষ্কার রাখুন: বিছানার চাদর হোক না পর্দায় ধুলো,  অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী সূক্ষ্মকণা জমতে পারে। তাই গরম জলে পর্দা, চাদর ভাল করে ধুয়ে নিন। এতে অ্যালার্জির আশঙ্কা কমবে। 


•    এয়ার ফিল্টার ব্যবহার করুনঃ ঘরের ভেজা আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণে ডিহিউমিডিফায়ার বা এয়ার পিউরিফায়ার কাজে আসে।এতে শুদ্ধ বাতাস থাকবে। 

* ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুনঃ ঘরে ধুলো জমতে দেওয়া না। এতে শিশুর অ্যালার্জির আশঙ্কা বেড়ে যায়। 


•    পর্যাপ্ত জল পান করানঃ শরীর আর্দ্র থাকলে শ্বাস নিতে সুবিধা হয়। এছাড়াও পর্যাপ্ত জল শরীর কফ বার করে দিতেও সাহায্য করে। 


* স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাঃ  সংক্রমণ ঠেকানোর প্রধান দাওয়াই হল স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা। যার জন্য মাঝেমধ্যেই হাত ধুতে হবে। আর হাত ধোওয়ার সঠিক কৌশল সন্তানকে ভাল ভাবে বোঝাতে হবে।


•    ডাক্তারের দেওয়া ওষুধ ঠিকমতো দিনঃ চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে সময় মতো শিশুকে ইনহেলার, অ্যান্টিহিস্টামিন বা অন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ দিন।


•    পোষ্যর থেকে সাবধানঃ বাড়িতে কোনও পোষ্য থাকলে শিশুর খেলার সঙ্গী হয়। তবে বর্ষাকালে যদি শিশুর অ্যালার্জির সমস্যা বাড়ে তাহলে কিছুদিন অন্তত পোষ্যর থেকে দূরে রাখুন। 


•    শিশুর কাছে ধূমপান নয়ঃ শিশুদের কাছাকাছি কোনও ভাবেই ধূমপান করা উচিত নয়। এমনকি অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় হবু মায়ের কাছেও ধূমপান না করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। 


•    মশা থেকে সুরক্ষাঃ বর্ষাকালে জমা জলে ডিম পারে মশা। ফলে বাড়ির আশপাশে টায়ার, ডাবের খোলায় জমতে দেবেন না। নচেৎ মশার কামড়ে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। মশাবাহিত রোগের হাত থেকে বাঁচতে ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টাঙান।