মিল্টন সেন, হুগলি,২৪ জুলাই: চিকিৎসায় গাফিলতি। এই অভিযোগে হাসপাতালে ভাঙচুর। হাসপাতালে রোগীর পরিবারের ভাঙচুর নতুন ঘটনা নয়। এর আগেও বারে বারে একই ঘটনা ঘটেছে রাজক্যের নানা জায়গায়, দেশেও। কখনও অভিযোগ চিকিৎসায় গাফিলতির, কখনও প্রসূতি মৃত্যু, রোগী মৃত্যু। রোগীর পরিবার চড়াও হয়ে ভাঙচুর করেছেন হাসপাতালে, মারধোর করেছেন চিকিৎসকদের।
ফের একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। এবার একেবারে হাসপাতালের আই সি ইউ। সেখানেই চলল ব্যাপক ভাঙচুর। ডাক্তারদের উপর চড়াও রোগীর আত্মীয় পরিজনরা। বিজেপি নেতার উদ্যোগে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হল সেই ভিডিও। উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে হাসপাতালকে বদনাম করার চেষ্টা চালিয়েছেন ওই নেতা, অভিযোগ হাসপাতাল কতৃপক্ষের।
আরও পড়ুন: পালটা আঘাত, থাইল্যান্ডের হাসপাতালে হামলা কম্বোডিয়ার, দু’ দেশের লড়াইয়ে তরতরিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা...
ঠিক কি ঘটেছে? বেশকিছু ছবি ইতিমধ্যে সামনে এসেছে। তাতে দেখা গিয়েছে, আইসিইউর ভিতরে ভাঙচুর চালিয়েছে রোগীর পরিবার। সরঞ্জাম ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে রোগীর পরিবারের বিরুদ্ধে। কিন্তু আচমাক কেন এই ঘটনা? কী জানাচ্ছে রোগীর পরিবার? রোগীর পরিবারের অভিযোগ, গত ২০ শে জুলাই শ্বাসকষ্ট জনিত কারণ নিয়ে শ্রমজীবী হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বিমলা দেবীকে। জানা যায় মৃতের বাড়ি শ্রীরামপুর প্রভাসনগর এলাকায়। পরিবারের অভিযোগ বুধবার হাসপাতালের তরফে রোগীর শারীরিক অবস্থা ভালো আছে, জানানো হয়। বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতাল থেকে ফোন করে বলা হয় বিমলা দেবীর অবস্থা খারাপ ভেন্টিলেশনে দেওয়া হলো। পরিবারের অভিযোগ তারা হাসপাতালে এসে দেখেন রোগী আইসিইউতে আছেন তার কোনও প্রকার সাড় নেই। কিছুক্ষণ পরেই চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে জানায়।

এই খবর শুনেই হাসপাতালের ওপর ক্ষোভে ফেটে পড়ে রোগীর পরিজনরা। আই সি ইউতে ঢুকে ডাক্তারদের ওপর চড়াও হয়। ক্ষোভ প্রকাশ করেন রোগীর বাড়ির লোক। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়া লাইভে দেখান রোগীর সঙ্গে আসা এক ব্যক্তি তথা বিজেপি নেতা। হাসপাতাল চত্বরে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতালে পৌঁছয় শ্রীরামপুর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। মৃত দেহ নিতে অস্বীকার করে এবং বিক্ষোভ দেখাতে থেকে রোগীর পরিজনরা।
যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি রোগীর অবস্থা ভর্তির দিন থেকেই খারাপ ছিল। তা পরিবারকে একাধিকবার জানানো হয়েছে। পরে অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউতে দেওয়া হয়। সে কথা পরিবারকেও জানানো হয়, তারা কোনও রকম আপত্তি করেনি। তারপর রোগীর মৃত্যুর কথা জানানো হলে হঠাৎই ক্ষোভে ফেটে পড়ে। আইসির ভেতর ঢুকে চিকিৎসা সরঞ্জাম ভাঙচুর করে। এক তথাকথিত বিজেপি নেতা সেটি সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ করে দেখায়। এভাবে হাসপাতালের নাম বদনাম করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
