আজকাল ওয়েবডেস্ক: অতুল কুমার, উত্তরাখণ্ডের রুদ্রপ্রয়াগে এক খচ্চর-চালকের ছেলে। ছোটবেলা থেকেই পড়ালেখার পাশাপাশি অতুল-ও বাবার মতো খচ্চরের পীঠে বসিয়ে তীর্থযাত্রীদের কেদারনাথ ধামের খাড়া পাহাড়ি পথে আনা-নেওয়া করতেন। সেই অতুলই তাক লাগিয়েছেন। আইআইটি প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন অতুল। এবার শুরু হবে তাঁর জীবনের নতুন অধ্যায়। আইআইটি মাদ্রাজে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন খচ্চর চালকের ছেলে অতুল কুমার।
কীভাবে এলো এমন সাফল্য?
এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অতুল বলেছেন, "আমি দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত আইআইটি সম্পর্কে জানতাম না। কিন্তু তারপর শিক্ষক এবং বন্ধুরা আমাকে উৎসাহিত করেছিলেন। তখনই আমি জানতে পারি যে, আমি আইআইটি থেকে মাস্টার্স করতে পারি। এরপর শুরু করি প্রস্তুতি।"
আইআইটি সম্পর্কে জানতে পেরেই নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে অতুল জীবনে বড় স্বপ্ন দেখেছিলেন। শুরু করেছিলেন স্বপ্ন বাস্তবে রূপায়ণের কাজও। চলে কঠিন অনুশীলন। এ জন্য গতবছর দুন-জুলাই মাসে কেদারনাথ থেকে ফিরে আসে সে। শুরু করেন পড়ালেখার কাজ। অতুলের কতায়, "আমি রুদ্রপ্রয়াগের একটি ছোট্ট গ্রামের বাসিন্দা। আমাদের বাড়িতে কোনও ইন্টারনেটের তেমন নেটওয়ার্ক ছিল না। আমরা তাঁবুতে থাকতাম, তাই আমি পড়াশোনা বিশেষ করতে পারিনি।"
প্রস্তুতি প্রসঙ্গে এক বন্ধুর প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছেন অতুল। তার কথায়, এক বন্ধু, যে আগে আইআইটি এন্ট্রাস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিল, সেই তাকে পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য নোট দিয়ে সাহায্য করেছিল। অতুল ফেব্রুয়ারিতে পরীক্ষার আগ পর্যন্ত প্রায় সাত মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে পড়াশোনা করেছিল। অতু বলেছে, "আমার বন্ধু মহাবীর তাঁর নোটসগুলি আমায় দিয়েছিল এবং জুলাই মাস থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত আমি নিয়মিতভাবে পড়াশোনা করি। পরীক্ষা হয়েছিল ফেব্রুয়ারি মাসে।"
সাফল্যের প্রেরণা
সবচেয়ে বড় প্রেরণা ছিল সীমাবদ্ধতা ভেঙে বেরিয়ে আসা। অতুলের কথায়, "আমার সবথেকে বড় প্রেরণা ছিল জীবনে এগিয়ে যাওয়া, সেই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসা এবং নিজের জন্য আরও ভাল কিছু তৈরি করা।"
অতুলের বাবা এখনও ঘোড়া চালক হিসেবে কাজ করেন রুদ্রপ্রয়াগে। ছুটির দিনে অতুল নিষ্ঠার সঙ্গে তাঁর বাবাকে সাহায্য করেন। এই কাজ থেকেই তাদের পরিবারের আয় হয়। তাঁর দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে এবং তাঁর ছোট বোন এখন পড়াশোনা করছে।
আরও পড়ুন- "দেশের প্রতি আনুগত্য প্রথম, দল পরে", কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে বিরোধের মাঝেই বড় মন্তব্য শশী থারুরের
এখন যখন সে দেশের সেরা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে একটিতে ভর্তি হতে পেরেছে সে, তখন পুরো গ্রাম অনন্দে মেতেছে। ভাল লাগছে অতুলেরও। এই কৃতী ছাত্রের কথায়, "যাঁরা আমাকে কখনও পড়াননি, তাঁরাও আজ আমাকে অভিনন্দন জানাতে ফোন করছেন।" এ কাহিনী সত্যিই অনুপ্রেরণার।
#WATCH | Pauri Garhwal, Uttarakhand | Atul Kumar, who used to carry pilgrims to Kedarnath Dham on a horse or mule, cleared the IIT-JAM 2025 and has been selected for IIT Madras to the MSc Mathematics programme.
— ANI (@ANI)
Speaking to ANI, he says, "I am from a small village in… pic.twitter.com/PgewIf9rSETweet by @ANI
