আজকাল ওয়েবডেস্ক: দেখা মিলল ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসবাদী, জৈশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজহারকে। বাহাওয়ালপুরে রয়েছে মাসুদের শক্ত ঘাঁটি। সেই এলাকা থেকেই ১,০০০ কিলোমিটারের সামান্য় বেশি দূরে পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের গিলগিট-বালতিস্তান অঞ্চলে মাসুদ আজহারকে দেখা গিয়েছে।
সম্প্রতি আজহারকে স্কার্দুতে দেখা গিয়েছে, বিশেষ করে সাদপাড়া রোড এলাকার আশেপাশে। এই এলাকায় কমপক্ষে দু'টি মসজিদ, অনুমোদিত মাদ্রাসা এবং একাধিক বেসরকারি ও সরকারি অতিথিশালা রয়েছে।
এই অ়্চল আকর্ষণীয় হ্রদ এবং প্রকৃতি উদ্যান-সহ একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত। একানের বেশিরভাগ সময়ে থাকেন রাষ্ট্রসংঘের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের প্রধান আজহার।
পাকিস্তানের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি সম্প্রতি দাবি করেছিলেন যে, আজহার আফগানিস্তানে থাকতে পারে। এমনকি তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন যে- পাকিস্তানের মাটিতে পাওয়া গেলে ইসলামাবাদ তাঁকে ভারতের হাতে তুলে দেবে। ভুট্টো সম্প্রতি আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, "যদি ভারত সরকার আমাদের সঙ্গে তথ্য ভাগ করে নেয় যে, সে পাকিস্তানের মাটিতে আছে, তাহলে আমরা তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পেরে খুশি হব।"
আজহার ভারতে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী, যার মধ্যে রয়েছে ২০১৬ সালের পাঠানকোট বিমানঘাঁটি আক্রমণ এবং ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলাষ সেই হামলায় ৪০ জনেরও বেশি সৈন্য নিহত হয়েছিল।
ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি আজহারের গতিবিধি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে, এমনকি জৈশের অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলি ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য প্রচার করছে, তার বক্তৃতার পুরানো অডিও ক্লিপগুলি ফের ব্যবহার করছে যাতে বোঝা যায় যে সে তাঁর দীর্ঘদিনের বাহাওয়ালপুর ঘাঁটিতে ছিল।
আজহারের দু'টি পরিচিত প্রতিষ্ঠান রয়েছে - জামিয়া সুবহান আল্লাহ। এগুলিকে অপারেশন সিঁদুরের সময় ভারত নিশানা করেছিল। জৈশের সদর দপ্তর এবং জামিয়া উসমান ও আলী, শহরের ঘনবসতিপূর্ণ অংশে অবস্থিত একটি মসজিদ যেখানে মাসুদের পুরানো বাসস্থানও একটি হাসপাতালের কাছে অবস্থিত।
আরও পড়ুন- জলের জগের দাম ৩২,৯৯৯ টাকা, স্মার্ট টিভি ৯,৯৯,৫০০! ছত্তিশগড়ে সরকারি কেনাকাটায় ভয়ঙ্কর দুর্নীতির অভিযোগ
রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, জামিয়া সুবহান আল্লাহে ভারতের হামলায় আজহারের পরিবারের ১০ জন সদস্য নিহত হয়েছেন।
ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রসংঘের নিষেধাজ্ঞার কারণে আজহার ভারতে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসবাদী হামলার জন্য দায়ী বলে মনে করা হয়, যার মধ্যে ২০০১ সালে সংসদে হামলাও অন্তর্ভুক্ত।
মাসুদের সহযোগীরা বিমান ছিনতাই করে এবং যাত্রীদের মুক্তির জন্য আজহারের মুক্তির দাবি করেছিল। তার আগে মাসুদ আজহার একবার ভারতীয় হেফাজতে ছিলেন। মুক্তি পাওয়ার পরপরই আজহার জইশ-ই-মহম্মদ প্রতিষ্ঠা করেন।
সেটিই প্রথমবার নয় যে আজহারকে বাহাওয়ালপুর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ২০১৯ সালের বালাকোট বিমান হামলার পর, তাঁকে বাহাওয়ালপুর থেকে পেশোয়ারের একটি গোপন আশ্রয়ে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল।
আজহারই একমাত্র সন্ত্রাসবাদী নেতা নন যিনি পাকিস্তানে নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছেন। আরেকজন সন্ত্রাসবাদী এবং জঙ্গি সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিনের প্রধান সৈয়দ সালাহউদ্দিন ইসলামাবাদের একটি অভিজাত এলাকা থেকে কাজ করছেন বলে মনে করা হচ্ছে। বার্মা টাউনের আরেকটি ঘনবসতিপূর্ণ শহরতলির এলাকায় তাঁর একটি অফিস রয়েছে, যেখানে তাঁকে প্রায়শই বন্দুকধারীদের সঙ্গে দেখা যায়।
