আজকাল ওয়েবডেস্ক: এক লিটার জলের জগের দাম ৩২,৯৯৯ টাকা! পাঁচটি স্মার্ট টিভি কিনতে খরচ প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা! ছত্তিশগড়ে আদিবাসী উন্নয়ন দফতরের নামে রাজকীয় কেনাকাটার বহরে রীতিমতো হইচই। আরও তাজ্জব ব্যাপার হল যে, চিকিৎসা সরঞ্জামের অর্ডারে ঢুকে পড়েছে 'সোফা'। দুর্নীতির অভিযোগে তোলপাড় সেই রাজ্য। চাপানউতোর চলছে রাজ্য রাজনীতিতে।
সবচেয়ে চমকপ্রদ অভিযোগ উঠেছে কোরিয়া জেলার আদিবাসী উন্নয়ন দফতরের বিরুদ্ধে। কংগ্রেসের দাবি, অম্বিকাপুরে কমিশনারের দফতর থেকে বাইকুণ্ঠপুরের একটি সংস্থা থেকে পাঁচটি স্মার্ট টিভি কেনা হয়েছে। যেগুলির প্রতিটির দাম ধরা হয়েছে ৯,৯৯,৫০০ টাকা। মোট বিল দাঁড়িয়েছে ৪৯,৯৭,৫০০ টাকা।
তার পরই সামনে আসে বলোদাবাজার জেলার ঘটনা। অভিযোগ, সেখানকার আদিবাসী কল্যাণ দফতর জিইএম পোর্টালের মাধ্যমে কিনেছে ১৬০টি জলের জগ। এক একটি জগের দাম ৩২,৯৯৯.৫০ টাকা। পুরো অর্ডারের মূল্য ৫১.৯৯ লক্ষ টাকারও বেশি।
কংগ্রেস সভাপতি দীপক বৈজ একে সরাসরি দুর্নীতির প্রতিচ্ছবি বলে কটাক্ষ করেছেন। যদিও দফতরের পক্ষ থেকে পালটা দাবি, এই অর্ডার এক প্রাক্তন আধিকারিকের প্রস্তাব অনুযায়ী ছিল এবং ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতেই অতিরিক্ত মূল্য দেখে তা বাতিল করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- মধ্যপ্রদেশে এ কী কাণ্ড, বিজ্ঞাপনে মুরগির নাম ঘিরে জোর বিতর্ক! তুমুল শোরগোল, কেন?
এই নিয়ে ছত্তিওশগড়ের আদিবাসী কল্যাণ মন্ত্রী বলেন, "কেন এত হইচই? আগে প্রমাণ দেখা হোক। যেটা কেনাই হয়নি, সেটাকে ঘিরে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে কংগ্রেস আতঙ্ক ছড়াতে চাইছে।"
তবে এখানেই থেমে নেই বিতর্ক। শাক্তি জেলার সিএমএইচও-র (চিফ মেডিক্যাল অ্যান্ড হেলথ অফিসার) চিকিৎসা সামগ্রীর অর্ডারে উঠে এসেছে এক অদ্ভুত ঘটনা। যেখানে জায়গা পেয়েছে 'সোফা'। অভিযোগ, ক্যালসিয়াম-ডি৩ ট্যাবলেটের নামে যে স্পেসিফিকেশন পাঠানো হয়েছে, তাতে লেখা রয়েছে- 'দুই আসনের সোফা, দৈর্ঘ্য ৬০ ইঞ্চি, প্রস্থ ৬৩৫ ইঞ্চি (!) ও উচ্চতা ৫৫ ইঞ্চি।'
সাপ্লায়ার সংস্থা ভিজে এন্টারপ্রাইজ-এর ম্যানেজার সুকেশ মাখিজা এক সংবাদসংস্থাকে বলেন, "আমরা ওষুধ ব্যবসায়ী। সোফার বিষয়ে কিছু জানি না।"
এই বিতর্কে নড়েচড়ে বসেছে স্বাস্থ্য দফতর। ছত্তিশগড়ের স্বাস্থ্যমন্ত্রী শ্যাম বিহারী জয়সওয়াল বলেছেন, "শক্তির ঘটনার তদন্ত হবে। যার দোষ প্রমাণিত হবে, তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।"
এদিকে ছত্তিশগড় মেডিক্যাল সার্ভিসেস কর্পোরেশনকে ঘিরে আরও বড় দুর্নীতির অভিযোগে তোলপাড় রাজ্য। ৭৫০ কোটির বেশি টাকার প্রতিক্রিয়াশী ও চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনার দুর্নীতির তদন্ত করছে এসিবি এবং ইওডব্লিউ। ইতিমধ্যেই ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কংগ্রেস বলছে, এই সব ঘটনার পিছনে বিজেপির মদতে দুর্নীতির বিস্তার স্পষ্ট। ক্ষমতায় এসেই স্বচ্ছতা নয়, বরং বিলাসী দুর্নীতির রাস্তায় হাঁটছে রাজ্য সরকার।
