চিরদীপ ভট্টাচার্য: ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফ্যাশন টেকনোলজি। এনআইএফটি। এই নামটা শুনলেই বিশেষত ফ্যাশন টেকনোলজি নিয়ে পড়তে আগ্রহী পড়ুয়াদের রক্ত যেন চঞ্চল হয় ওঠে। আর হবে না–‌ই বা কেন?‌ ১৯৮৬–‌তে ভারত সরকারের টেক্সটাইল মন্ত্রকের অধীনে গড়ে ওঠা এই প্রতিষ্ঠান বর্তমানে দেশ–‌বিদেশের নামী–দামি ফ্যাশন বিশেষজ্ঞদের কর্মস্থলের পাশাপাশি শিক্ষানবিশদের কাছে মন্দিরতুল্য, পীঠস্থান। বর্তমানে দেশে এনআইএফটি–র ১৮টি ক্যাম্পাস— বেঙ্গালুরু, ভূপাল‌, চেন্নাই, দমন, গান্ধীনগর‌, হায়দরাবাদ, কান্নুর‌, কলকাতা, মুম্বই, নয়া দিল্লি, পাটনা, পঞ্চকুলা, রায়বরেলি‌, শিলং‌, কাংড়া‌, যোধপুর‌, ভুবনেশ্বর, শ্রীনগর।
নামী প্রতিষ্ঠানের ‌দামি কোর্স
এনআইএফটি–র কোর্স:‌
• ৪ বছরের ব্যাচেলর অফ ডিজাইন (‌বি ডিজ) [‌বন্ধনীতে আসন সংখ্যা]‌‌— ৬টি বিষয়ে স্পেশালাইজেশনের সুযোগ রয়েছে:‌ ফ্যাশন ডিজাইন (‌৭৪২)‌, লেদার ডিজাইন (‌১৭২)‌, অ্যাক্সেসরি ডিজাইন (‌৬৫৪)‌, টেক্সটাইল ডিজাইন (‌৭৪৩)‌, নিটওয়্যার ডিজাইন (‌৩৪৬)‌ এবং ফ্যাশন কমিউনিকেশন (‌৭৪২)‌। যে কোনও শাখার ১০+‌২ বোর্ড পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থী আবেদন করতে পারে। ১৮টি শাখায় মোট আসন ৩,৩৯৯টি।
• ৪ বছরের ব্যাচেলর অফ ফ্যাশন টেকনোলজি (‌বি এফ টেক):‌ এখানে কেবলমাত্র অ্যাপারেল প্রোডাকশনে স্পেশালাইজেশন করা যায়। ১০+‌২ স্তরে ফিজিক্স এবং ম্যাথস থাকলে এই কোর্সের জন্য আবেদন করা যায়। সবগুলো শাখায় মোট আসন ৬৫২টি।
২০২৪–এর ব্যাচেলর্স ডিগ্রি কোর্সে আবেদনের প্রাথমিক শর্ত হিসেবে ওপরে লেখা শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি ১ আগস্ট, ২০২৪–এ‌র ভিত্তিতে প্রার্থীর বয়স ২৪ বছরের বেশি হওয়া চলবে না। তফসিলি, প্রতিবন্ধীরা বয়সের ঊর্ধ্বসীমায় ৫ বছরের ছাড় পাবেন।
• মাস্টার অফ ডিজাইন (‌এম ডিজ)‌:‌ যে কোনও শাখার গ্র‌্যাজুয়েটদের পাশাপাশি এনআইএফটি বা এনআইডি (‌ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ডিজাইন)‌-‌এর সমতুল কোনও স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে কমপক্ষে ৩ বছরের ডিগ্রি বা ডিপ্লোমাধারীরা এই কোর্সে আবেদন করতে পারে। আসন ৩০৪।
• মাস্টার অফ ফ্যাশন ম্যানেজমেন্ট (‌এমএফএম)‌:‌ যোগ্যতামান এম ডিজ কোর্সের মতোই। আসন ৭৮৬।
• মাস্টার অফ ফ্যাশন টেকনোলজি (‌এমএফ টেক)‌:‌ যে কোনও স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে বিটেক বা বিএফ টেক উত্তীর্ণরাই এই কোর্সে ভর্তির জন্য আবেদনের যোগ্য। আসন ১৪৮টি।
মাস্টার্স কোর্সের ক্ষেত্রে বয়সের কোনও ঊর্ধ্বসীমা নেই।

খরচ কেমন
২০২৪ থেকে শুরু হতে চলা শিক্ষাবর্ষে চার বছরের কোর্সে (‌৮টি সেমেস্টারে বিভক্ত)‌ সব মিলিয়ে মোট খরচ প্রায় সাড়ে ১৩ লক্ষ টাকা।

ভর্তির উপায়
সর্বভারতীয় প্রবেশিকার মাধ্যমে। ২০২৪–এ‌র পরীক্ষা ৫ ফেব্রুয়ারি। ‌সর্বভারতীয় ৬০টি পরীক্ষাকেন্দ্রের মধ্যে এরাজ্যে একমাত্র কলকাতা। এখানে শুধুমাত্র ব্যাচেলর্স কোর্সে ভর্তির বিষয়ে আলোচনা করা হল।
প্রার্থীবাছাইয়ে রয়েছে দুটি ধাপ। প্রথমে লিখিত পরীক্ষা। বি ডিজ কোর্সে ভর্তিতে দুটি পরীক্ষা— প্রথমে সকাল ৯টা থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত কম্পিউটার বেসড টেস্ট ‘‌গ্যাট’‌ (‌GAT‌ বা জেনারেল এবিলিটি টেস্ট) এবং এর পরে দুপুর আড়াইটে থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত পেপার বেসড টেস্ট ‘‌ক্যাট’‌ (‌CAT‌ বা ক্রিয়েটিভ এবিলিটি টেস্ট)‌। বি এফ টেক কোর্সে ভর্তির ক্ষেত্রে গ্যাট স্কোর বিবেচ্য হবে। ‘‌ক্যাট’‌ এবং/‌বা ‘‌গ্যাট’ পরীক্ষায় নির্ধারিত কাট অফ মার্কের বেশি স্কোর করতে পারলে সিচ্যুয়েশন টেস্টে (‌এসটি) বসার ছাড়পত্র মিলবে। চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রার্থীরা ভর্তির জন্য কাউন্সেলিংয়ে অংশ নিতে পারবে।

আবেদনের পদ্ধতি
অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। www.nta.ac.in‌ বা https://exams.nta.ac.in‌/‌NIFT‌ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করা যাচ্ছে। শেষ তারিখ ৩ জানুয়ারি। পরীক্ষার ফি বাবদ লাগছে ৩ হাজার টাকা (‌তফসিলি, প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে ১৫০০ টাকা)‌। এর পরেও ৪ থেকে ৮ জানুয়ারি লেট ফি বাবদ অতিরিক্ত ৫ হাজার টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ থাকবে। যে কোনও সহায়তার প্রয়োজনে কথা বলা যেতে পারে এই হেল্পলাইন নম্বরে:‌ ০১১–৪০৭৫৯০০০।
বিশদ তথ্য পাওয়া যাবে এই ওয়েবসাইটে:‌ www.nift.ac.in‌।