আজকাল ওয়েবডেস্ক: ওভালে মহম্মদ সিরাজের ইয়র্কার মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে হয়েছিল গাস অ্যাটকিনসনের কাছে। দুর্দান্ত ইয়র্কার ইংরেজ ব্যাটারের উইকেট উপড়ে নিয়েছিল।
খুব সামনে থেকে সিরাজের ওই নিক্ষিপ্ত মিসাইল দেখে অভিভূত ওই ম্যাচের আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা। সিরাজ যখন বল করছিলেন, তখন সেই প্রান্তের আম্পায়ার ছিলেন শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন অফস্পিনার। সিরাজের ডেলিভারি থেকে বোল্ড হচ্ছেন অ্যাটকিনসন, সেই দৃশ্য দেখার পরে আর স্থির থাকতে পারেননি ধর্মসেনা। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ''সো লাকি টু উইটনেস দিস বল ফ্রম দ্য বেস্ট সিট ইন দ্য হাউজ।''
আরও পড়ুন: চোট সারিয়ে এশিয়া কাপে খেলতে পারবেন সুর্য, হার্দিকরা? এল বড় আপডেট
অর্থাৎ ঘরের সব থেকে ভাল জায়গায় বসে এই দৃশ্য দেখেছি। হায়দরাবাদির ওই ইয়র্কার সবার মন জিতে নেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। ওই ইয়র্কারের জবাব ছিল না অ্যাটকিনসনের কাছে। ওই ইয়র্কার ওভালে ঐতিহাসিক জয় এনে দেয়। ওরকম ইয়র্কারে উইকেট উড়ে যাচ্ছে, ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে এমন স্বর্গীয় দৃশ্য দেখার সুযোগ খুবই কম আসে। তাই সিরাজের ওই দুর্দান্ত ইয়র্কারের প্রশংসা করেছেন ধর্মসেনা। ইয়র্কারে উড়ে যাচ্ছে স্টাম্প। ব্যাটসম্যানের কাজে জবাব থাকে না। সিরাজ ডেলিভারিরও উত্তর ছিল না অ্যাটকিনসনের কাছে। ব্যাট নামাতে নামাতেই ওই তীব্র গতির ডেলিভারি অ্যাটকিনসনকে ফাঁকি দিয়ে উইকেট ভেঙে দেয়। সিরাজের ফিরে আসে কল্পকাহিনিকেও হার মানায়।
চতুর্থ দিনে হ্যারি ব্রুকের ক্যাচ ফেলেছিলেন সিরাজ। সমালোচনা ধেয়ে এসেছিল তাঁর দিকে। প্রাক্তনদের তীব্র সমালোচনায় ক্ষতবিক্ষত হয়েছিলেন সিরাজ। সেই সিরাজ এদিন প্রায়শ্চিত্ত করলেন। ক্রিকেট বারবার সুযোগ দেয় না। এক বলের খেলা ক্রিকেট। সেখানে ক্রিকেট আরও একটা সুযোগ দিয়েছিল সিরাজকে। হায়দরাবাদি তারকা সেই সুযোগ দু'হাতে লুফে নেন। ওভালে নিজেকে নিংড়ে দিলেন। তিরিশ ওভার হাত ঘুরিয়ে পাঁচ-পাঁচটি উইকেট নিলেন। পঞ্চম দিনের শুরুতে উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের সাজঘরে জোরালো ধাক্কা দিয়েছিলেন তিনি। ইংল্যান্ডের শেষটাও হয় তাঁরই হাতে।
ওভালে জেতার জন্য ৩৫ রান দরকার ছিল ইংল্যান্ডের। ভারতের জেতার জন্য প্রয়োজন ছিল চার-চারটি উইকেট। ভারতের সুযোগ কম। বরং ইংল্যান্ড অ্যাডভান্টেজে বললেও অত্যুক্তি করা হবে না। কিন্তু মহম্মদ সিরাজ অন্যকিছু হয়তো ভেবে রেখেছিলেন। দিনটা তাঁর। ওভাল টেস্টে লেখা থাকবে তাঁর নাম। প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা শুরুতেই রান দিয়ে দিলেন একগাদা। চাপ বাড়ল ভারতের উপরে। সিরাজ বল হাতে প্রথমে ফেরালেন স্মিথকে। তার পরে ওভারটন। অন্যদিকে মরিয়া হয়ে উঠেছেন অ্যাটকিনসন। তিনি মারমুখী। এদিকে কৃষ্ণর ইয়র্কারে উইকেট ভাঙল টংয়ের। অ্যাটকিনসনের উইকেট ভেঙে ব্রিটিশ-ভূমে নতুন এক রূপকথা লিখলেন সিরাজ।
কাজটা খুবই কঠিন ছিল ভারতের জন্য। ২-১-এ পিছিয়ে থেকে ওভালে খেলতে এসেছিল শুভমান গিলের অপেক্ষাকৃত নবীন দল। তার উপরে মোক্ষম সময়ে সরে যান জশপ্রীত বুমরাহ। রক্তাল্পতা ভারতের বোলিং লাইন আপে। সেই বোলিংয়ের লাইটহাউজ একজনই। তিনি মহম্মদ সিরাজ। এই সিরিজ হেরে গেলে গৌতম গম্ভীরের উপরে প্রবল চাপ তৈরি হয়ে যেত। সিরাজ একইসঙ্গে ভারতকে সমতায় ফেরালেন, অন্যদিকে গম্ভীরকেও বিড়ম্বনার হাত থেকে বাঁচালেন। রানির দেশ থেকে সিরিজ ২-২ করে দেশে ফিরল ভারত।
আরও পড়ুন: এশিয়া কাপেও ভারতীয় দলে বিরাট পরিবর্তন, মিলছে ছাঁটাইয়ের ইঙ্গিতও, কারা বাদ পড়তে পারেন জানেন কি?...
