আজকাল ওয়েবডেস্ক: তিনি ক্রিকেট ঈশ্বর। তিনি ব্যাট হাতে নামা মানেই দেশে নেমে আসত অঘোষিত লকডাউন। সেই শচীন তেণ্ডুলকর কিন্তু ব্যাটের পাশাপাশি বল হাতেও ভেল্কি দেখিয়েছেন। 

শারজায় মরু ঝড় তুলেছেন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। আবার কোচিতে তাঁর ঘূর্ণিতে কুপোকাত হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। পাঁচটি উইকেট নিয়েছিলেন মাস্টার ব্লাস্টার। ইডেন গার্ডেন্সে অনুষ্ঠিত হিরো কাপে দক্ষিণ আফ্রিকার (সেমিফাইনাল) বিরুদ্ধে শেষ ওভার করেছিলেন শচীন। এক ওভারে জয়ের জন্য প্রোটিয়া ব্রিগেডের দরকার ছিল ৬ রান। কিন্তু শচীন বল হাতে ওই ছ'রান তুলতে দেননি দক্ষিণ আফ্রিকাকে। বলের গতিতে বৈচিত্র্য এনে দক্ষিণ আফ্রিকাকে থামিয়ে দিয়েছিলেন মাস্টার ব্লাস্টার। ম্যাচ হেরে দক্ষিণ আফ্রিকার তারকা পেসার অ্যালান ডোনাল্ড বলেছিলেন, ''শচীনের বল তো ব্যাটেই আসছিল না।'' সেই সেমিফাইনালে শেষ ওভার করার জন্য কেউই বল করার সাহস দেখাচ্ছিলেন না। দূরপ্রান্তে বাউন্ডারি লাইনে ফিল্ডিং করছিলেন অজয় জাদেজা। তাঁকে বল করার জন্য ডাকা হয়। তিনি হাত তুলে জানিয়ে দেন বল করবেন না। আজহার ও কপিল দীর্ঘক্ষণ আলোচনার পরে শচীনের হাতে বল তুলে দেওয়া হয়েছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার হাতে ২ উইকেট। আর জেতার জন্য ৬ উইকেট। সেটাও শচীনের জন্য তুলতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। 

আরও পড়ুন: বাবাকে দেখে ভারোত্তোলনে আসা, বিশ্বরেকর্ডের হ্যাটট্রিক করে জোড়া সোনা হাওড়ার কোয়েলের ...

এহেন শচীন কিন্তু এই সব উইকেটের কথা বলছেন না। তাঁর সেরা শিকার মইন খান। মাস্টারকে এনিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তার উত্তরে কিংবদন্তি বলেন, ''মইন খান..দিনের শেষ বল।'' 

.

২০০৪ মুলতান টেস্ট। বীরেন্দ্র শেহবাগের ৩০৯ রানের জন্য বিখ্যাত ছিল সেই টেস্ট ম্যাচ। টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম ত্রিশত রানের মালিক হন শেহবাগ। তাঁর নাম হয়ে যায়, 'মুলতান কা সুলতান'। ১৯৪ রানে শচীন ব্যাট করার সময়ে ভারত অধিনায়ক রাহুল দ্রাবিড় ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা করে দেন। সেটা অবশ্য ছিল অন্য গল্প। ভারত ৫ উইকেটে ৬৭৫ রান করেছিল। পাঁচ উইকেট হারানো পাকিস্তানের হয়ে লড়ছিলেন আবদুল রজ্জাক ও মইন খান। তৃতীয় দিনের শেষ ওভার করার জন্য বল তুলে দেওয়া হয়েছিল শচীনকে। 
 মাস্টার কৌশল করে রজ্জাককে সিঙ্গল নিতে দেন। যাতে মইন তাঁর মুখোমুখি হন। তেণ্ডুলকর গুগলি দেন। সেই গুগলি ধরতেই পারেননি পাকিস্তানের উইকেট কিপার। মইনের ডিফেন্স ভেঙে সেই গুগলি উইকেট ভেঙে দেয়। শচীনের গুগলিতে অবাক হয়ে যান মইন। শেষমেশ মুলতান টেস্ট ভারত জিতে নিয়েছিল  এক ইনিংস ও ৫২ রানে। মইনকে ফেরানোর স্মৃতি এখনও শচীনের হৃদয়ে টাটকা। পাক উইকেট কিপারকে আউট করাই তাঁর সেরা টেস্ট উইকেট। টেস্টে শচীনের উইকেট সংখ্যা ৪৬। ওয়ানডেতে ১৫৪। তার মধ্যে থেকে শচীন বেছে নিয়েছেন মইনের উইকেটটি। 

একটা সময় ছিল, যখন উইকেট পড়ছে না, তখন শচীনের হাতে বল তুলে দেওয়া হত। পার্টনারশিপ ভাঙার কাজ খুব ভাল করতেন। ব্যাটের পাশাপাশি বল হাতেও ম্যাচ জিতিয়েছেন তিনি। কিন্তু অতিরিক্ত চাপ পড়ে যাওয়ার জন্য পরের দিকে শচীনকে আর হাত ঘোরাতে দেখা যায়নি। 

আরও পড়ুন: এক বলে ২০ রান নিয়ে চমক আরসিবির তারকার, আইপিএলে ১৪ বলে করেছিলেন হাফসেঞ্চুরি