আজকাল ওয়েবডেস্ক: দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে খেলাধুলার প্রসারে বিরাট প্রতিশ্রুতি দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুক্রবার স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে তিনি ঘোষণা করেন, নতুন স্পোর্টস বিল দেশের ক্রীড়াক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নেবে। শুক্রবার লালকেল্লা থেকে ৭৯তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে মোদি বলেন, ‘আমরা দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় খেলাধুলার প্রসার ঘটাতে চাই। নতুন স্পোর্টস বিল এই ক্ষেত্রে সহায়ক হবে’। গত মাসে প্রধানমন্ত্রী মোদির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এই বিলকে অনুমোদন দিয়েছে। এটি দেশের ক্রীড়া ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ন্যাশনাল স্পোর্টস বিল ভারতের ক্রীড়াক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এবং ২০৩৬ সালের অলিম্পিক গেমসে সাফল্য অর্জনের পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এই বিল ২০০১ সালের বিদ্যমান জাতীয় ক্রীড়া নীতিকে বাতিল করে নতুন লক্ষ্য এবং কৌশলগত রোডম্যাপ উপস্থাপন করছে, যা ভারতকে বিশ্বে অন্যতম ক্রীড়া শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্য নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাবা-মায়েরা সন্তানদের খেলাধুলায় উৎসাহ দিলে তিনি খুশি হন। মোদির কথায়, ‘খেলাধুলা একটি জাতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আজ যখন সন্তানরা খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ দেখায়, তখন বাবা-মা গর্ববোধ করেন। আমি এটিকে দেশের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক সংকেত হিসেবে দেখি’।
তিনি আরও জানান, সরকারের ‘খেলো ভারত নীতি’ ক্রীড়াক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন নিশ্চিত করছে। মোদির ভাষায়, ‘খেলাধূলাকে আরও শক্তিশালী করতে আমরা বহু দশক পর ‘খেলো ভারত নীতি’ চালু করেছি। স্কুল-স্তরের খেলা থেকে শুরু করে অলিম্পিক পর্যন্ত—আমাদের লক্ষ্য একটি পূর্ণাঙ্গ ও শক্তিশালী ক্রীড়া পরিবেশ তৈরি করা’। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী সতর্ক করেছেন দেশজুড়ে বাড়তে থাকা ফ্যাট সংক্রান্ত সমস্যার বিষয়ে। তিনি বলেন, ‘ফ্যাট আমাদের দেশের জন্য একটি বড় সঙ্কটে পরিণত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী কয়েক বছরে প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন এই সমস্যায় ভুগবেন। আমাদের এখনই এর বিরুদ্ধে সচেতন হতে হবে’।
পাশাপাশি, দেশের প্রতিরক্ষা নিয়ে লালকেল্লায় স্বাধীনতা দিবস উদযাপন মঞ্চ থেকে বড় ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেছেন যে দেশের প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং ভবিষ্যতের প্রযুক্তি-ভিত্তিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য ২০৩৫ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা 'সুদর্শন চক্র' নামে একটি জাতীয় সুরক্ষা ঢাল প্রস্তুত করা হবে। প্রধানমন্ত্রী মোদি সুদর্শন চক্র মিশনকে একটি শক্তিশালী, বহু-স্তরীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসাবে বর্ণনা করেছেন যা ‘কেবল আমাদের দেশকে রক্ষা করবে না, বরং সেই শত্রু দেশকে উপযুক্ত জবাব দেবে। ’মিশন 'সুদর্শন চক্র' ভগবান কৃষ্ণের সুদর্শন চক্র দ্বারা অনুপ্রাণিত বলে জানিয়েছেন মোদি।
প্রধানমন্ত্রী আরও স্পষ্ট করেছেন যে, এই উন্নয়নের সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্ত গবেষণা, উন্নয়ন এবং উৎপাদন ভারতেই করা হবে এবং এটি দেশের তরুণ প্রজন্মের হাতেই হাতেই প্রস্তুত করা হবে। মহাভারতের উদাহরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, কীভাবে শ্রী কৃষ্ণ তাঁর সুদর্শন চক্র দিয়ে সূর্যকে ঢেকে দিনকে অন্ধকার করে দিয়েছিলেন, যাতে অর্জুন তাঁর প্রতিজ্ঞা পূরণ করতে সক্ষম হন। একইভাবে, ভারতের 'সুদর্শন চক্র'ও শত্রুদের প্রতিটি আক্রমণকে নিষ্ক্রিয় করতে এবং তাদের চেয়ে বহুগুণ বেশি শক্তি দিয়ে প্রতিশোধ নিতে সক্ষম হবে। মোদির কথায়, সুদর্শন চক্র মিশন শুরু করার জন্য কিছু মৌলিক পদক্ষেপের পরিকল্পনা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আগামী দশ বছরে, আমরা এই অভিযানকে পূর্ণ শক্তির সঙ্গে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্য রাখি। সমগ্র আধুনিক ব্যবস্থা, এর গবেষণা, উন্নয়ন এবং উৎপাদন আমাদের দেশের মধ্যেই করা হবে, আমাদের যুবসমাজের প্রতিভা এবং আমাদের জনগণের দক্ষতা ব্যবহার করে’।
