আজকাল ওয়েবডেস্ক: ম্যাচ শেষের পরেই মহম্মদ সিরাজ একাধিকবার তাঁর ফোনের ওয়ালপেপারের কথা উল্লেখ করেছেন। অবশেষে নিজেই সেই ওয়ালপেপার প্রকাশ্যে আনলেন তিনি। ম্যাচের পর সাংবাদিক সম্মেলনে এসে নিজের ফোন বের করে সেই ওয়ালপেপার দেখালেন তিনি। কী রয়েছে সেখানে? ওয়ালপেপারে রয়েছে একটি ছবি যার সামনে লেখা রয়েছে ‘বিলিভ’। পিছনে রয়েছে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে খেলার সময়কার একটি ছবি। সিআরসেভেনের বড় ভক্ত সিরাজ জানিয়েছেন, রোনাল্ডোর এই ছবিই ম্যাচের আগে দেখেছিলেন তিনি যা তাঁকে বিশ্বাস জুগিয়েছিল যে তিনি পারবেন।

সিরাজ পেরেছেন, হ্যারি ব্রুকের ক্যাচ ফেলা থেকে নায়ক হয়ে উঠেছেন তিনিই। তারপর থেকেই একাধিকবার এই ছবির কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো তাঁকে বারবার অনুপ্রাণিত করেছেন, এদিনও তাই হয়েছে। সিরাজ রোনাল্ডোর অন্যতম বড় ভক্ত। সম্প্রতি, ওল্ড ট্র্যাফোর্ড টেস্টের আগে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের ক্যাম্পে গিয়ে সিরাজ রোনাল্ডোর সেলিব্রেশন করেছিলেন। পাশাপাশি, ব্যাটারদের বোল্ড করে রোনাল্ডোর স্টাইলে আইকনিক সেলিব্রেশন করেন তিনি। বিবার রাতে চতুর্থ দিনের খেলা চলাকালীন সিরাজেরই সামান্য ভুলে ম্যাচ পুরোপুরি ঘুরে গিয়েছিল ইংল্যান্ডের দিকে। বাউন্ডারি লাইনে হ্যারি ব্রুকের ক্যাচ ফেলে ছয় করে দিয়েছিলেন। তারপর রুট আর ব্রুক মিলে যেভাবে ধ্বংসলীলা চালালেন আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন সকলেই।

সেই সিরাজই হয়ে উঠলেন পঞ্চম দিনের হিরো। শুধুমাত্র এদিনই ২৮ রান দিয়ে চার উইকেট নিয়েছেন তিনি। পরিসংখ্যান বলছে, গোটা সিরিজে প্রায় ১১০০-কাছাকাছি বল করেছেন তিনি। ‘ওয়ার্কলোড’ শব্দটায় যে সিরাজ কোনওভাবেই বিশ্বাস করেন না তা আরও একবার সাফ হয়ে গেল। ‘ওয়ার্কলোড’ আবার কী? দেশের প্রতিনিধিত্ব করছো, যতক্ষণ দম আছে, সেবা করে যাও, সেই মন্ত্রেই চলেন ভারতের মিঁয়াভাই, হায়দরাবাদের ডিএসপি স্যার। একটানা নিজের ১০০% দিয়ে বল করে গিয়েছেন সিরিজ জুড়ে। উইকেট না পেলেও এক মুহূর্তের জন্যও হাঁপাতে দেখা যায়নি। এই চেষ্টার ফল তিনি পেলেন শেষ টেস্টের শেষ দিনে। চলতি সিরিজের লিডিং উইকেট টেকার হিসেবে শেষ করলেন তিনি।

লর্ডসে শেষ মুহূর্তে আউট হয়ে বসে পড়েছিলেন পিচের মধ্যেই। এদিন তিনি মাঠ ছাড়লেন মাথা উঁচু করে, এক হাতে স্টাম্প আর এক হাতে ফাইফারের বল নিয়ে। ওভালে জেতার জন্য ৩৫ রান দরকার ছিল ইংল্যান্ডের। ভারতের জেতার জন্য প্রযোজন ছিল চার-চারটি উইকেট। ভারতের সুযোগ কম। বরং ইংল্যান্ড অ্যাডভান্টেজে বললেও অত্যুক্তি করা হবে না। কিন্তু মহম্মদ সিরাজ অন্যকিছু হয়তো ভেবে রেখেছিলেন। তিনি বল হাতে ফেরালেন স্মিথকে। তার পরে ওভারটন। অন্যদিকে মরিয়া হয়ে উঠেছেন অ্যাটকিনসন। তিনি মারমুখী। এদিকে কৃষ্ণর ইয়র্কারে উইকেট ভাঙল টংয়ের। অ্যাটকিনসনের উইকেট ভেঙে ব্রিটিশ-ভূমে নতুন এক রূপকথা লিখলেন সিরাজ।