আজকাল ওয়েবডেস্ক: তাঁর জন্য ক্রিকেট নয়। এমনটা মনে করে একদিন ক্রিকেট ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন। ভুল করে নিলামে তাঁকেই কিনেছিল পাঞ্জাব কিংস।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে তাঁর রান আউটের পরে ম্যাচ হারার আশঙ্কা ঢুকে গিয়েছিল পাঞ্জাব শিবিরে। শ্রেয়স আইয়ার অবিশ্বাস্য এক ইনিংস খেলে পাঞ্জাবকে নিয়ে গিয়েছিলেন ফাইনালে। খেলার শেষে শশাঙ্ককে তীব্র ভর্ৎসনা করেন কিংসের ক্যাপ্টেন শ্রেয়স আইয়ার।
ফাইনালে শ্রেয়স আইয়ার ব্যর্থ হন। ভুল করে পাঞ্জাবে ঢুকে পড়া শশাঙ্ক একাই অসম্ভবকে সম্ভব করে ফেলেছিলেন। মাত্র ৩০ বলে ৬১ রান করেন শশাঙ্ক।
শেষপর্যন্ত অবশ্য শশাঙ্ক জিততে পারেননি। বিরাট আলোয় ঢাকা পড়ে যান তিনি। চোখের জল ফেলতে ফেলতে মাঠ ছাড়েন। শেষ ওভারে প্রথম বলটাই ছিল ফুলটস। সেটায় ছক্কা মারতে না পেরে হতাশা গোপন করেননি শশাঙ্ক। শেষ ওভারে একাধিক ছক্কা মারলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।
বিরাট কোহলি সব আলো শুষে নিয়েছেন। ১৮ বছরের অপেক্ষার শেষ হল মঙ্গলরাতে। এক সুপারস্টারকে রাজবেশে দেখতে চেয়েছিল গোটা দেশ। সেই আশা পূরণ হয়েছে।
কিন্তু ওই বিরাট-অধ্যায়ের মধ্যেও ছোট ছোট অধ্যায় থেকে যায়। তাঁদের জীবনেও রয়েছে গল্পের মতো মশলা। রয়েছে ট্র্যাজেডি। ভাগ্যদেবী হয়তো অনেক আগেই লিখে দিয়েছিলেন, তুমি নজর কাড়বে, লড়ে যাবে নিজের সর্বশক্তি দিয়ে কিন্তু কোনওদিন নায়ক হতে পারবে না। শশাঙ্ক সেরকমই একজন অনুচ্চারিত, ভাগ্যের মার খাওয়া ক্রিকেটার। যিনি আলোর দেখা পাবেন না।
বিরাট মঞ্চে তিনি লড়লেন, যখন তাঁর দলের সুপারস্টাররা একে একে হার মেনে বেরিয়ে গেলেন, তখন তিনি একাই অক্সিজেন জোগাচ্ছিলেন।
আইপিএলের নিলামে শশাঙ্ককে তাঁর বেস প্রাইস ২০ লক্ষ টাকায় দলে নিয়েছিল পাঞ্জাব। এর ঠিক পরেই পাঞ্জাবের পক্ষ থেকে নিলাম সঞ্চালনাকারীকে জানানো হয়,তারা তাঁকে নিতে আগ্রহী নয়। দলের মালিকিন প্রীতি জিন্টাও সেই ইঙ্গিতই করেন। বেশ অস্বস্তিকর এক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। কয়েক মিনিট আগে শশাঙ্ক সিং নামে বাংলার আরেক ক্রিকেটারকে নিলামে তোলা হয়েছিল। সেই কারণেই ভুল করে ফেলেছিল পাঞ্জাব।
পরে পাঞ্জাব জানায়, এই শশাঙ্ককেই কিনতে চেয়েছিল তারা। একই নামের ক্রিকেটারা তালিকায় থাকার জন্যই সমস্যা তৈরি হয়।
এই শশাঙ্কের জন্য়ই পাঞ্জাবের স্কোরবোর্ডকে ভদ্রস্থ দেখাচ্ছে। ধারাভাষ্যকাররাও বলছিলেন, পাঞ্জাবের কাজ ক্রমশ কঠিন হয়ে যাচ্ছে। শশাঙ্ক যদি কিছু করতে পারে।
শশাঙ্ক পারেননি। বিরাট কোহলি যদি আসল নায়ক হন। শশাঙ্ক তাহলে ট্র্যাজিক নায়ক। দুই নায়কই গতকাল রাতে কাঁদলেন আবেগে। কোহলি খুশিতে। তাঁর পাশে তখন সবাই। শশাঙ্কও কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে গেলেন মাঠ থেকে। তাঁর পাশে তখন কেউ নেই।
আইপিএল ফাইনাল শশাঙ্ককে জীবনের শিক্ষা হয়তো দিয়ে গেল। সাফল্যের দিনে পাশে থাকে সবাই। কিন্তু ব্যর্থদের পাশে থাকে না কেউই।
