আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতীয় ক্রিকেটের দুই তারকা বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন করলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে।
শনিবার বিশাখাপত্তনমে সিরিজের শেষ ম্যাচে দুই ভারতীয় কিংবদন্তির ঝলমলে ব্যাটিং এবং যশস্বী জয়সওয়ালের শতরানের ওপর ভর করেই সিরিজ জিতে নিল টিম ইন্ডিয়া।
এই ম্যাচের মধ্য দিয়েই চলতি বছরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শেষবারের মতো মাঠে নামলেন কোহলি ও রোহিত। পুরো সিরিজেই দুই তারকাকে দেখা গেছে দারুণ ছন্দে।
সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে টানা দুটি শতরান করেন বিরাট ১৩৫ ও ১০২। অন্যদিকে রোহিত প্রথম ম্যাচে করেন ৫৭, দ্বিতীয় ম্যাচে ১৪ এবং সিরিজের নির্ধারক ম্যাচে খেলেন গুরুত্বপূর্ণ ৭৫ রানের ইনিংস।
এই সিরিজের পর ভারত ঘরের মাঠে মুখোমুখি হবে নিউজিল্যান্ডের। ২০২৬ সালে জানুয়ারি মাসের ১১ তারিখ থেকে শুরু হবে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ, যার প্রথম ম্যাচ হবে ভাদোদরায়।
পরের দুটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে রাজকট ও ইন্দোরে। তবে জানা গিয়েছে, বিরাট কোহলি এবং রোহিত শর্মা বিজয় হাজারে ট্রফি খেলতে পারেন।
সেক্ষেত্রে, চলতি বছরের শেষে ফের দুই তারকাকে ব্যাট হাতে দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও, দিল্লি ও মুম্বইয়ের দল এখনও ঘোষণা হয়নি।
তবে সূত্রের খবর, চলতি মাসের শেষেই শুরু হতে চলা বিজয় হজারে ট্রফিতে খেলতে দেখা যেতে পারে কোহলি ও রোহিতকে। চলতি বছরের শুরু থেকেই বিসিসিআই নিয়ম জারি করেছে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টিকে থাকতে হলে ক্রিকেটারদের ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক। এর পরিপ্রেক্ষিতে বছরের শুরুতে রঞ্জি ট্রফিতে দিল্লির হয়ে খেলেছিলেন কোহলি এবং মুম্বইয়ের হয়ে মাঠে নেমেছিলেন রোহিত।
২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলতে চান দুই তারকাই। তাই বিজয় হাজারে ট্রফিতে অংশ নেওয়া প্রায় নিশ্চিতই বলা যায়।
কোহলির খেলা নিশ্চিত হয়েছে, আর রোহিতও মুম্বইয়ের হয়ে নামতে পারেন। আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষা মাত্র। উল্লেখ্য, এদিন দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজ ডিসাইডারে বাজিমাত করল ভারতীয় দল।
তৃতীয় একদিনের ম্যাচে একপেশে জয় ভারতের। ম্যাচের নায়ক যশস্বী জয়সওয়াল হলেও ভারতের ইনিংস জুড়ে তাঁকে আগলে রেখে খেলিয়ে গেলেন রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলি।
ম্যাচে ভারতের ইনিংস একটু খুঁটিয়ে দেখলেই সেটা বোঝা যাবে। যশস্বীর সঙ্গে ওপেনে নেমেছিলেন রোহিত শর্মা। ইনিংসের শুরুতে জয়সওয়ালের ব্যাটে সেভাবে বল লাগছিল না।
আস্তে আস্তে সিঙ্গেল খেলে রান তুলছিলেন। অপরদিকে, মেরে খেলছিলেন রোহিত। একবারের জন্যও চাপ ফেলেননি যশস্বীর ওপরে। জয়সওয়াল মেরে খেলা শুরু করলেন অর্ধশতরান হওয়ার পরে।
ততক্ষণে তিনি পুরোপুরি সেট হয়ে গিয়েছেন রোহিতের ছত্রছায়ায় থেকে। তাঁর ইনিংসের দ্বিতীয় ভাগের চাপ সামলে দিলেন বিরাট কোহলি। যশস্বী তখন নার্ভাস নাইন্টিজে।
কিন্তু ক্রিজে যে তাঁর সঙ্গে রয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম 'প্রেসার কুকার' বিরাট কোহলি। মাথা ঠাণ্ডা রেখে যশস্বী সম্পূর্ণ করলেন একদিনের ক্রিকেটে তাঁর কেরিয়ারের প্রথম শতরান। অ
পরদিকে, দুই কিংবদন্তি কোহলি এবং রোহিত শতরান না করতে পারলেও ব্যাটে বুঝিয়ে দিলেন তাঁরা থাকছেন, কোথাও যাচ্ছেন না।
ধারাভাষ্যকাররা তখন বলছেন, আবার কবে খেলতে দেখা যাবে রোহিত-কোহলিকে। ইরফান পাঠান বলছিলেন, অস্ট্রেলিয়া সিরিজ যদি রোহিতের হয়, দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ তাহলে বিরাটের।
ঘরের মাঠে হলে কী হবে, এই প্রোটিয়া দলটাই তো টেস্টে গম্ভীরদের নাকানিচোবানি খাইয়েছে। এই দুই ভিন্টেজ ব্যাটার না হলে ফল অন্যরকম হতেই পারত কে বলতে পারে।
তবে সেসব এখন অতীত। রোহিত শর্মার ৭৫ এবং বিরাটের ৬৫ রান সিরিজ ডিসাইডারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল এদিন। রোহিত যেমন শুরুর দিকে চাপ সামলালেন, কোহলি নেমে মারমুখী ভঙ্গিতে ব্যাট চালালেন।
নো লুক শটে ছক্কা, পুল, কভার ড্রাইভ সবদিকে রান করেছেন এদিন। রোহিতও সামনের পায়ে পুল মেরে ছয় হাঁকিয়েছেন এদিন। ফলে, ২৭১ রানের লক্ষ্যমাত্রা ছুুঁতে এদিন বিশেষ বেগ পেতে হল না টিম ইন্ডিয়াকে।
