ভারত - ০
বাংলাদেশ - ১ (মোরসালিন)
আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতীয় ফুটবলে আরও একটি লজ্জায় রাত। বাংলাদেশের কাছেও হার। মঙ্গলবার ঢাকা ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে এএফসি এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ারের নিয়মরক্ষার ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে ০-১ গোলে হেরে গেল ভারত। ঢাকায় ২২ বছর পর ভারতকে হারাল বাংলাদেশ। মোট চার বার। গ্রুপের পাঁচ ম্যাচে একটিতেও জয় নেই খালিদ জামিলের দলের। অন্যদিকে এএফসি এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ারের প্রথম জয় পেল বাংলাদেশ। প্রথমার্ধের শেষে ০-১ গোলে পিছিয়ে ছিল ভারত। নব্বই মিনিটের শেষেও একই রেজাল্ট। বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে এই দিনটি স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। অন্যদিকে ভারতীয় ফুটবল আরও অন্ধকারে। দেশের সেরা লিগ আইএসএলের ভবিষ্যৎ বিশ বাঁও জলে। আদৌ হবে কিনা এখনও জানা নেই। এখনও পর্যন্ত কোনও বিডার পাওয়া যায়নি। এদিকে জাতীয় দলের লজ্জার হার। তাও আবার ফিফা ক্রমতালিকায় তাঁদের থেকে ৪৭ ধাপ নীচে থাকা দলের কাছে। ভারতীয় ফুটবল ক্রমশ তলিয়ে যাচ্ছে।
ম্যাচ শেষে উৎসবে মাতেন হামজারা। বিপক্ষের ডেরায় শুরুতেই কিছুটা পিছিয়ে পড়ে খালিদ জামিলের দল। কাফা নেশনস কাপে আশা জাগান ভারতীয় কোচ। তাজাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয় দিয়ে জাতীয় দলের কোচ হিসেবে অভিষেক হয়। ১৭ বছরের ইতিহাসে যা প্রথম। ব্রোঞ্জ জেতে ভারত। কিন্তু তারপর থেকেই আবার পতন। সিঙ্গাপুরের কাছে হারে এএফসি এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ারে আশা আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে। ৪ ম্যাচে মাত্র ২ পয়েন্ট ছিল ভারতের। পাঁচ ম্যাচের পরও পয়েন্ট ২। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশ ম্যাচ নিয়ে বাকি সব ম্যাচ জিতলেও ৮ পয়েন্টে পৌঁছতে পারত ভারতীয় দল। যা ইতিমধ্যেই সিঙ্গাপুর এবং হংকং সংগ্রহ করে ফেলেছে। তাই ম্যাচটা শুধুই নিয়মরক্ষার ছিল। কিন্তু সম্মান রক্ষার ম্যাচেও ব্যর্থ সন্দেশরা। প্রথমার্ধে আক্রমণের ধারে-ভারে বাংলাদেশের থেকে বেশ কিছুটা পিছিয়ে ছিল ভারত। অনেক বেশি আগ্রাসী ফুটবল খেলে হোম টিম।
ম্যাচের ১১ মিনিটে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। কাউন্টার অ্যাটাক থেকে গোল। আকাশ, আনোয়ার, সন্দেশের মধ্যে কোনও তালমিল ছিল না। বাঁ প্রান্ত ধরে বল নিয়ে এগিয়ে যান রাকিব হোসেন। নিখুঁত মাইনাস থেকে ডান পায়ের আলতো টোকায় সামনে একা গুরপ্রীতকে কাটিয়ে বল জালে রাখেন শেখ মোরসালিন। মাত্র ১৯ বছর বয়স। জাতীয় দলের জার্সিতে চতুর্থ ম্যাচ। কিন্তু ইতিমধ্যেই নজর কেড়েছেন। গোল হওয়া মাত্র উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে স্টেডিয়াম। এগিয়ে যাওয়ার পর আরও চাপ বাড়াতে শুরু করে বাংলাদেশ। কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায় ভারতীয় দল। ম্যাচের ৩১ মিনিটে সমতা ফেরাতে পারত ভারত। কিন্তু ছাংতের ডান পায়ের দূরপাল্লার শট হেড করে বিপদমুক্ত করেন হামজা চৌধুরী। গোলকিপার গোল ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিল। সেই যাত্রায় বাঁচিয়ে দেন বাংলাদেশের মিডফিল্ডার। ম্যাচের ৪৪ মিনিটে আবার সুযোগ বাংলাদেশের। চেস্ট ট্র্যাপ করে বল নামিয়ে হামজার বাঁ পায়ের দূরপাল্লার শট একটুর জন্য বাইরে যায়। প্রথমার্ধের শেষদিকে ম্যাচের রাশ কিছুটা ধরার চেষ্টা করে ভারত। কিন্তু দুই দলের মধ্যে আধিপত্য ছিল বাংলাদেশের।
ফিফা ব়্যাঙ্কিংয়ে অনেকটাই এগিয়ে ভারত। ১৩৬ এর তুলনায় বাংলাদেশের ১৮৩। তাসত্ত্বেও এদিন বিপক্ষের ঘরের মাঠে প্রথমার্ধে কিছুটা ব্যাকফুটে ছিল সন্দেশরা। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুটা ভাল করে ভারত। বিরতির পর দুটো হাফ চান্স। কিন্তু জালে রাখতে পারেননি রাহুল বেকে এবং নাওরেম মহেশ। সিনিয়র দলের জার্সিতে অভিষক হয় মহম্মদ সাননের। প্রথমার্ধের তুলনায় বিরতির পর লড়াকু ফুটবল খেলে খালিদের দল। কিন্তু সেই পুরোনো রোগ। গোলমুখ খুলতে ব্যর্থ। সানন নামার পর ভারতের আক্রমণ বাড়ে। গোলের সুযোগও তৈরি হয়। কিন্তু ফিনিশিংয়ের অভাব। সাননের একটি শট তালুবন্দি করেন বাংলাদেশ কিপার। দ্বিতীয়ার্ধে অন্তত সমতা ফেরানোর মতো জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিল ব্লু টাইগাররা। কিন্তু পারেনি বিক্রম প্রতাপ, রহিম নবিরা।অবশ্য ব্যবধান বাড়ানোরও সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশের সামনে। কিন্তু স্কোরলাইনে কোনও পরিবর্তন হয়নি।
