আজকাল ওয়েবডেস্ক: শুক্রবার থেকে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে শুরু হতে চলেছে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ।

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে এই সিরিজ ভারতীয় দলের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে নিজেদের ঘরের মাঠে আধিপত্য ফেরানোর লড়াই, অন্যদিকে, পয়েন্ট টেবিলে নিজেদের ওপরের দিকে নিয়ে যাওয়ার লড়াই।

অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার লক্ষ্য ২০১০ সালের পর ভারতে প্রথম টেস্ট জয় তুলে নেওয়া। সিরিজ শুরুর আগে পিচ ও আবহাওয়া নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে।

তবে ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গলের সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি জানিয়েছেন, ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট ইডেনে প্রথম টেস্টের জন্য ‘র‍্যাঙ্ক টার্নার’ পিচের কোনও অনুরোধ করেনি।

চলতি মরশুমে ইডেন গার্ডেন্সে ইতিমধ্যে দুটি রঞ্জি ট্রফির ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে পিচ তুলনামূলক ধীরগতির ছিল। পেসারদেরও তেমন সাহায্য মেলেনি।

বেঙ্গলের সাম্প্রতিক ম্যাচে উত্তরাখণ্ডের বিরুদ্ধে শুরুতে সিমাররা সমস্যায় পড়লেও, শেষ পর্যন্ত মহম্মদ শামির দুর্দান্ত স্পেলে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয় বাংলা।

ইতিহাস বলছে, ইডেন খুব কমই ‘র‍্যাঙ্ক টার্নার’ পিচ তৈরি করে। সাধারণত প্রথম দিকে বোলারদের জন্য কিছুটা গতি ও সুইং থাকে, এরপর পিচ ব্যাটসম্যানদের অনুকূলে চলে যায়।

ইডেন গার্ডেন্সের পিচ কিউরেটর সুজন মুখার্জি জানিয়েছেন, ‘প্রথম টেস্টে একটি ভালো স্পোর্টিং উইকেট তৈরি করা হচ্ছে। ব্যাটার ও বোলার— উভয়ের জন্যই সমান সুযোগ থাকবে। স্পিনাররাও কিছুটা সাহায্য পাবে, সেটা তুলনামূলকভাবে শুরুর দিকেই দেখা যেতে পারে।’

আবহাওয়া দিক থেকেও সুখবর রয়েছে ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য। পাঁচ দিনই পরিষ্কার আকাশ থাকার সম্ভাবনা, যদিও তৃতীয় দিনে মাত্র ১০ শতাংশ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

অর্থাৎ কোনও বড় বাধা ছাড়াই ম্যাচ চলবে বলে আশা করা হচ্ছে। চেষ্টা করা হচ্ছে, ম্যাচ যাতে পাঁচদিন গড়ায়। ছ’বছর ইডেনে ফিরছে টেস্ট ক্রিকেট।

দিল্লি বিস্ফোরণ কাণ্ডের পর কড়া নিরাপত্তার মধ্যে চলবে ম্যাচ। পাশাপাশি, ইতিমধ্যেই টিকিট সোল্ড আউট বলে জানিয়েছেন সিএবি সভাপতি।

দিল্লিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পরেই দেশজুড়ে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কড়া নিরাপত্তার মোড়কে মুড়ে ফেলা হয়েছে কলকাতাকেও।

এই পরিস্থিতিতে ইডেনে শুরু হচ্ছে টেস্ট ম্যাচ। নিরাপত্তায় কোনও খামতি রাখতে চাইছে না কলকাতা পুলিশ। খেলা চলাকালীন দর্শকদের মধ্যে যেমন মিশে থাকবে সাদা পোশাকের পুলিশ তেমনই ইডেনের ফেন্সিং জুড়েও মোতায়েন হবে বিশাল পুলিশবাহিনী।‌

ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা এবং দর্শকদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে গত মঙ্গলবার ইডেন পরিদর্শন করেন কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা।

গোটা মাঠের নিরাপত্তা দিকগুলি খতিয়ে দেখেন। জানা গিয়েছে, নিরাপত্তার কথা ভেবে ইডেনের বিভিন্ন অংশকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করেছেন পুলিশ কর্তারা।

প্রত্যেকটি ভাগের দায়িত্বে থাকবেন ডেপুটি পুলিশ কমিশনার, থাকবেন ৯ জন এসি। দর্শকরা যে জায়গায় বসবেন সেখানেও একজন করে ডেপুটি পুলিশ কমিশনার এবং অন্তত ৯ জন এসি দায়িত্বে থাকবেন।

পাশাপাশি  পুলিশের একটি দল সুরক্ষায় মোতায়েন থাকবেন। এখানেই শেষ নয়, ক্লাব হাউস এবং ভিভিআইপি জোনের নিরাপত্তাতেও পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা নিরাপত্তায় মোতায়েন থাকবেন বলে জানা গিয়েছে।

এছাড়াও ইডেনের বিভিন্ন জায়গায় সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যরা যেমন থাকবেন, তেমনই থাকবে কিউআরটি অর্থাৎ কুইক রেসপন্স টিম।

ইডেনের বাইরেও নিরাপত্তাতে জোর দেওয়া হয়েছে। ইডেনকে ঘিরে বিভিন্ন জায়গায় তৈরি করা হচ্ছে বাঙ্কার। যেখানে কলকাতা পুলিশের কমব্যাট বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন।

পাশাপাশি ইডেন সংলগ্ন একাধিক রাস্তাতেও শুক্রবার যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি জোর দেওয়া হয়েছে ক্রিকেটারদের নিরাপত্তাতেও।