আজকাল ওয়েবডেস্ক: বৃহস্পতিবার পরিত্যক্ত হল ইস্টবেঙ্গল-ডায়মন্ড হারবার ম্যাচ। সময় মতো ঠিক দুপুর দুটোয় মাঠে নামে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু অনুপস্থিত ছিল ডায়মন্ড হারবার। ক্লাবের পক্ষ থেকে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তাঁরা মাঠে দল নামাবে না। সেই সিদ্ধান্তেই অনড়। নিয়ম অনুযায়ী আধ ঘণ্টা অপেক্ষা করা হয়। বল নিয়ে নিজেদের মধ্যেই গা ঝালিয়ে নিতে দেখা লাল হলুদের ফুটবলারদের। মাঠে ছিলেন বিষ্ণু, ডেভিড, জেসিন, হিরারা। গ্যালারিতে গুটিকয়েক লাল হলুদ সমর্থক হাজির ছিল। ঠিক আড়াইটেয় মাঠে নামেন রেফারি এবং সহকারী রেফারিরা। ম্যাচ পরিতক্তি ঘোষণা করা হয়। ম্যাচ কমিশনার সুব্রত দাস বলেন, 'খেলার সূচি অনুযায়ী ইস্টবেঙ্গল এসেছে, রেফারিরা এসেছিল। ম্যাচ আয়োজনের সমস্ত ব্যবস্থা ছিল। অ্যাম্বুলেন্সও ছিল। কিন্তু ডায়মন্ড হারবার এফসি আসেনি। যা ঘটেছে আমি তার রিপোর্ট জমা দেব। আইএফএ বাংলার ফুটবল নিয়ামক সংস্থা। আমার রিপোর্টের ভিত্তিতে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবে কী করবে। রিপোর্টে ম্যাচটা পরিত্যক্ত লেখা থাকবে। এরপর আইএফএর শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে।' এবার বল আইএফএর কোর্টে। আইএফএর নিয়ম অনুযায়ী শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি এবং লিগের সাব কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে। তবে নিয়ম অনুয়ায়ী, তিন পয়েন্ট এবং তিন গোল পাওয়া উচিত ইস্টবেঙ্গলের। আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা না হলেও, এদিন ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ায় কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেল ইস্টবেঙ্গল। সাত বছর পর ঘরোয়া লিগ জিতল লাল হলুদ। ২০১৭ সালের পর প্রথম। মোট ৪০ বার। 

ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা হওয়ার পর মাঠেই হালকা সেলিব্রেশনে‌ মাতেন ফুটবলাররা। তার রেশ চলে ড্রেসিংরুমেও। এইভাবে লিগ জিততে চাননি, তবে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে খুশি কোচ বিনো জর্জ। জানান, তাঁরা আইএফএকে সম্মান করেন। তাই কথা মতো মাঠে এসেছিলেন। বাকিটা তাঁদের হাতে নেই। বিনো জর্জ বলেন, 'আমরা আইএফএকে সম্মান করি। আগে থেকেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল ১৩ ফেব্রুয়ারি ম্যাচ। আমরা ম্যাচটা খেলার জন্যই এসেছিলাম। কোনও ম্যাচ না হেরে চ্যাম্পিয়ন হওয়া আমার লক্ষ্য ছিল। পয়েন্ট অনুযায়ী আমরা চ্যাম্পিয়ন। ধরুন এখন যদি খেলা বন্ধ হয়ে যেত, আর যদি খেলা না হত, তাহলেও আমরাই চ্যাম্পিয়ন হতাম। কারণ আমাদের পয়েন্ট সবচেয়ে বেশি। দেশের ঘরোয়া লিগগুলোর মধ্যে কলকাতা লিগ সবচেয়ে কঠিন। সেটা জিততে পেরে আমি খুশি।' এদিন অধিনায়কের আর্মব্যান্ড ছিল আদিত্য পাত্রের হাতে। সাত বছর পর চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় খুশি লাল হলুদের জুনিয়র গোলকিপারও। কলকাতা লিগে নয় ম্যাচে ক্লিনশিট রয়েছে। এবার আইএসএলের খেলাই লক্ষ্য আদিত্যের। 

১৫ ম্যাচে ৪১ পয়েন্ট ছিল ইস্টবেঙ্গলের। সমসংখ্যক ম্যাচে ৩৯ পয়েন্ট ডায়মন্ড হারবারের। ক্রীড়াসূচি অনুযায়ী, ইস্টবেঙ্গলের খেলা বাকি ছিল ডায়মন্ড হারবার এবং ভবানীপুরের বিরুদ্ধে। ডায়মন্ড হারবারের খেলা বাকি ছিল ইস্টবেঙ্গল এবং মহমেডানের বিরুদ্ধে। কিন্তু ভবানীপুর ক্লাব আগেই ওয়াকওভার দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়ায়, ইস্টবেঙ্গলের শুধুমাত্র ডায়মন্ড হারবারের সঙ্গে খেলা বাকি ছিল। সুতরাং, আদতে দুই নয়, দু'দলের মধ্যে পয়েন্টের পার্থক্য ছিল পাঁচ। ডায়মন্ড হারবার দল না নামানোয় ৪৭ পয়েন্ট নিয়ে অঘোষিত লিগ চ্যাম্পিয়ন ইস্টবেঙ্গল। কারণ শেষ ম্যাচে মহমেডানকে হারালেও ডায়মন্ড হারবার শেষ করবে ৪২ পয়েন্টে। লিগ জেতার সুযোগ থাকলেও ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে দল নামায়নি ডায়মন্ড হারবার। আইএফএকে চিঠি দিয়ে আগেই তাঁরা জানিয়ে দেয়, পরপর ম্যাচ থাকায় ১৩ ফেব্রুয়ারি খেলা সম্ভব নয়। সেই অনুযায়ী, ১৪ ফেব্রুয়ারি আরএফডিএলে ডায়মন্ড হারবারের ম্যাচ পিছিয়ে দেয় আইএফএ। কিন্তু সেটা বুধবার সন্ধেয় জানানো হয়। তাই নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে ক্লাবকর্তারা। আইনি পরামর্শ নেওয়ার কথা জানান ডায়মন্ড হারবারের শীর্ষকর্তা আকাশ ব্যানার্জি।