আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভয়ানক দুর্ঘটনার স্মৃতি কাটিয়ে বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম আবারও আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ক্রিকেট আয়োজনের পথে।
শুক্রবার এক নির্দেশিকা সূত্রে খবর মিলছে, কর্ণাটক মন্ত্রিসভা একাধিক শর্তসাপেক্ষে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনের অনুমোদন দিয়েছে।
তবে শর্ত বেঁধে দেওয়া হয়েছে, জাস্টিস ডি’কুনহা কমিশনের সব সুপারিশ পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে হবে। সরকারি সূত্র জানিয়েছে, স্বরাষ্ট্র দপ্তরকে চূড়ান্ত অনুমোদনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা নিরাপত্তা ও কাঠামোগত নির্দেশিকা বাস্তবায়ন হলেই ম্যাচ আয়োজনের অনুমতি মিলবে।
ইএসপিএন ক্রিকইনফোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডি’কুনহা কমিশনের জুলাই মাসের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ১৯৭৪ সালে নির্মিত স্টেডিয়ামটিতে আধুনিক নিরাপত্তা কাঠামোর ঘাটতি রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৪ জুন আইপিএলে আরসিবির জয়ের উদযাপনে মর্মান্তিক পদপিষ্টের ঘটনায় ১১ জনের মৃত্যু হয়। এই ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত শেষে কমিশনের পর্যবেক্ষণ ছিল স্টেডিয়ামের নকশা, পরিকাঠামো ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় একাধিক ফাঁক রয়েছে।
ফলে, সেখানে ম্যাচ আয়োজনে ব্যাপক ‘ঝুঁকি’-র আশঙ্কা রয়েছে। এরপর থেকেই চিন্নাস্বামীতে পুরোপুরি ম্যাচ আযোজন বন্ধ রাখা হয়।
কর্ণাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী ডি.কে.শিবকুমার আগেই ঘোষণা করেছিলেন, ২০২৬ সালে আইপিএলের ম্যাচগুলো বেঙ্গালুরু থেকে সরানো হবে না।
ভোট দেওয়ার পর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি আইপিএল ম্যাচ সরতে দেব না। এটা বেঙ্গালুরু ও কর্ণাটকের মর্যাদার প্রশ্ন।’
তিনি আরও বলেন, সরকার নিশ্চিত করবে ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা আর কখনও না ঘটে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে নতুন স্টেডিয়াম নির্মাণের পরিকল্পনাও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
কর্ণাটক ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত সভাপতি ভেঙ্কটেশ প্রসাদের নেতৃত্বে নতুন কমিটি ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া ও শিবকুমারের সঙ্গে বেলাগাভিতে বৈঠক করেছে।
তাদের লক্ষ্য চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে আবারও শীর্ষস্তরের ক্রিকেট ফিরিয়ে আনা। গত জুন মাসে পদপিষ্টের ঘটনার পর থেকে চিন্নাস্বামীতে কোনও বড় ম্যাচ হয়নি।
মহিলাদের বিশ্বকাপের নির্ধারিত ম্যাচগুলোও শেষ মুহূর্তে সরিয়ে নেওয়া হয়, ফলে ইতিহাসের সাক্ষী হওয়ার সুযোগ হারান বেঙ্গালুরুর ক্রিকেটপ্রেমীরা।
মুম্বাইয়ের ডিওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে শিরোপা জেতে ভারত। আগামী বছর ফেব্রুয়ারি–মার্চে পুরুষদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের পাঁচ ভেন্যুর তালিকাতেও নেই চিন্নাস্বামী।
দক্ষিণে একমাত্র ভেন্যু হিসেবে চেন্নাইকে নির্বাচন করা হয়েছে। অন্য চারটি হচ্ছে কলকাতা, মুম্বাই, দিল্লি ও আহমেদাবাদ। শ্রীলঙ্কার তিনটি ভেন্যুও যৌথ আয়োজক হিসেবে যুক্ত রয়েছে।
তবে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের ২২ গজে ক্রিকেটের প্রত্যাবর্তন বর্তমানে পুরোপুরি নির্ভর করছে নিরাপত্তা সংক্রান্ত রিপোর্ট বাস্তবায়নের ওপর। সব শর্ত পূরণ হলে তবে ক্রিকেট ফিরবে বেঙ্গালুরুর এই ঐতিহাসিক ভেন্যুতে।
