আজকাল ওয়েবডেস্ক: একজন মহিলা সবসময় তার ভাইবোনদের থেকে আলাদা বোধ করতেন, তিনি কৌতূহলবশত ডিএনএ পরীক্ষা করেছিলেন। কিন্তু পারিবারিক গোপন রহস্য উন্মোচিত হতেই তার পরিচয় পরিবর্তন হয়ে গেল। একটি নতুন সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেলেন তিনি।

ফ্রান্সের বাসিন্দা কেট-এর সবসময় মনে হত তিনি পর্তুগিজ বংশোদ্ভূত। কিন্তু তাঁর চেহারা আদল, গাঢ় গায়ের রং, সানবার্ন না হওয়ার কারণে অনেকে তাঁকে দেখে মধ্যপ্রাচ্য বা ইউরোপীয় বলে গুলিয়ে ফেলতেন। কিন্তু তাঁর ভাইবোনের সঙ্গে তাঁর চেহারার কোনও মিল ছিল না। তাঁর ভাইবোনদের গায়ের রং ফর্সা, নীল চোখ।

ছোটবেলা থেকেই কেট প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার প্রতি মুগ্ধ ছিলেন। তাঁর মা তাঁকে 'ছোট ক্লিওপেট্রা' বলে ডাকতেন। কিন্তু তাঁর সন্দেহ থেকেই যেত। ২০১৯ সালে, তিনি ডিএনএ পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেন। আশা করেছিলেন, ডিএনএ রেজাল্ট আশাপ্রদই হবে। এবং তাঁর মা-বাবার সঙ্গে মিলে যাবে।

পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গিয়েছে, কেট ৫৮.৪% মিশরীয়, ২২.৯% পর্তুগিজ, ১৪.১% দক্ষিণ ইতালীয় এবং ৪.৬% আলজেরীয়। এই ফলাফল দেখে হতবাক হয়ে তিনি তাঁর মায়ের মুখোমুখি হন। মায়ের থেকে নিজের পরিচয় সম্পর্কে অস্পষ্ট, দর্শনমূলক উত্তর পেয়েছিলেন।

আরও পড়ুন: অ্যাপলের শীর্ষ পদে বসলেন এক ভারতীয়, ৩০ বছর ধরে নানা পদ সামলে সিওও হতে চলেছেন সাবিহ

আরও অনেক কিছু অপেক্ষা করছিল কেটের জন্য। ২০২২ সালে কেট একজন অপরিচিত ব্যক্তির কাছ থেকে একটি চিঠি পান। সেখানে ওই ব্যক্তি কেটের জৈবিক পিতা হিসেবে দাবি করেন। আবারও তাঁর মায়ের মুখোমুখি হয়ে কেট জানতে পারেন, যিনি তাঁকে মানুষ করেছেন তিনি তাঁর জৈবিক পিতা নন। তাঁর আসল বাবা একজন মিশরীয় ব্যক্তি, যিনি মারা গিয়েছেন।

এই কথা শুনে ভেঙে পড়েন কেট। তিনি বলেন, "যার সঙ্গে আমি কখনও দেখা করতে পারিনি তাঁর জন্য শোক করা আমার জন্য সবচেয়ে কঠিন অভিজ্ঞতা ছিল।"

এতকিছুর পরেও খুশির খবর অপেক্ষা করছিল কেটের জন্য। মিশরে তিনি তাঁর তিন ভাইবোনের খোঁজ পান। তাঁদের সঙ্গে ফের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে তাঁর। 

কেট এখন অন্যদের ডিএনএ পরীক্ষা করার আগে চিন্তাভাবনা করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, "যদি আপনি পরীক্ষার ফলাফল মোকাবিলা করার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত না হন, তাহলে পরীক্ষা না করানোই ভাল। ফলাফল আপনার পরিচয়, সম্পর্ক বদলে দিতে পারে।"