দিল্লির মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি(আপ)-কে। ২৭ বছর পর দিল্লিতে ক্ষমতায় ফিরছে বিজেপি।
2
10
নির্বাচনের ফল বলছে বিজেপি ৪৮টি আসনে জয়লাভ করতে চলেছে। আপ মাত্র ২২টিতে। খাতাই খুলতে পারেনি কংগ্রেস। এবার ভোটে পরাজিত হয়েছেন আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল, মনীশ সিসোদিয়া এবং সত্যেন্দ্র জৈনের মতো হেবিওয়েট নেতাকে। মানরক্ষা করেছেন অতিশী মারলেন। কিন্তু কেজরিওয়ালের হারের কারণ কী?
3
10
দিল্লির মসনদে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আবির্ভাবে ঘটেছিল স্বচ্ছ ভাবমূর্তি, দুর্নীতি-বিরোধী নেতা হিসেবে। ২০১১ সালে আন্না হাজারের আন্দোলনে যোগদান। ২০১২ সালে আপ গঠন।
4
10
দিল্লিতে স্বচ্ছ, দুর্নীতিমুক্ত সরকার প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ২০১৩ সালের বিধানসভা ভোটে জয়লাভ করে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেন মাত্র ৪৯ দিনের জন্য।
5
10
২০১৫ সালে ৬৭টি আসনে জিতে দিল্লির ক্ষমতায় ফিরে আসে আপ। ফের মুখ্যমন্ত্রী হন কেজরি। বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, জল, স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষার মাধ্যমে শাসনব্যবস্থাকে সংস্কার করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। যা রাজনৈতিক মহলের পাশপাশি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল সকলের। সেই প্রতিশ্রুতির উপর ভর করে ২০২০তেও অপ্রতিরোধ্য ছিল আপ। ৬২টি আসনে জিতে টানা দ্বিতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেন কেজরীওয়াল।
6
10
দিল্লিতে আপ টানা দু'বার ক্ষমতায় থাকার পরেও দূষণ, জলসঙ্কট এবং নানা বিষয়ে সমস্যার সমাধান হয়নি। কিন্তু কেজরিওয়াল সরকার প্রায়শই এই সমস্যাগুলির জন্য মোদীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারকে দোষারোপ করেছে। এর ফলে দিল্লিবাসীর আশ্বাস উঠে গিয়েছিল আপ সরকারের উপর থেকে।
7
10
এরই মাঝে আবগারি দুর্নীতির অভিযোগ কেজরিওয়ালকে অনেকটাই দুর্বল করে দেয় মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। ২০২৪ সালের ২১ মার্চ আবগারি দুর্নীতি মামলায় কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। মোটা টাকা ঘুষের বিনিময়ে কিছু মানুষকে দিল্লিতে সুরার ব্যবসায় তিনি বিশেষ সুবিধা করে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ তোলা হয়। মণীশ সিসৌদিয়া থেকে সঞ্জয় সিংহের মতো দলের নেতাদেরও জেলে যেতে হয়।
8
10
১৩ সেপ্টেম্বর জামিন পেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন। গ্রেফতারি নিয়ে কেজরিওয়াল কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার তত্ত্ব খাড়া করে মানুষের মনে আবেগের সঞ্চার করা চেষ্টা করেছিলেন।
9
10
এরপরেই সামনে 'শিশমহল' বিতর্ক। বিজেপি অভিযোগ তোলে, জনগণের টাকা মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন সাজাতে কাজে লাগিয়েছেন কেজরি। বিজেপি হিসেব দেয় মোট ৫২ কোটি খরচ করা হয়েছে বাসভবনের সজ্জায়। এমনকি জাতীয় স্তরে জোট 'ইন্ডিয়া' ব্লকের শরিকদল কংগ্রেসও কটাক্ষ করতে ছাড়েনি।
10
10
লোকসভা ভোটে বিজেপির বিরুদ্ধে একত্রে লড়াই করলেও হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস এবং আপ-এর ভেঙে যায়। দিল্লির ভোটেও দুই দল একা লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। এর ফলে বিজেপি বিরোধী ভোটগুলি ভাগ হয়ে যায়। এর মাঝে ভোটে লড়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএসপি, সিপিএম, এনসিপি-র মতেো দল। এর ফলে বিজেপি বিরোধী ভোট আরও ভাগ হয়ে যায়। এই সব কারণই ২৭ বছর পর দিল্লির ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনল বিজেপিকে।