আজকাল ওয়েবডেস্ক: একবার নয়, দু'বার নয় পর পর তিন বার! হ্যাঁ টানা তিনবার কিডনি প্রতিস্থাপনের পরেও বহাল তবিয়তে আছেন ৪৭ বছর বয়সী বিজ্ঞানী দেবেন্দ্র বার্লেওয়ার। দিল্লিতে চিকিৎসা ক্ষেত্রে যুগান্তকারী সাফল্যের ঘটনা ঘটেছে। মনের জোর এবং উন্নত চিকিৎসাবিজ্ঞানের কারণে নতুন জীবন পেয়েছেন কিডনির জটিল অসুখে ভুগতে থাকা  দেবেন্দ্র। তাঁর শেষ কিডনিটি নেওয়া হয়েছে একজন ব্যক্তি মৃত্যুর পর দান করে যাওয়ার পর। তাঁর দেহে এখন মোট পাঁচটি কিডনি রয়েছে। যাঁর মধ্যে কেবল একটিই সচল।

কোনও রোগীর দেহে তৃতীয়বার কিডনি প্রতিস্থাপন করা বিরল ঘটনা। কারণ, উপযুক্ত দাতা খুঁজে বার করা, অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ঝুঁকি নির্ধারণ করা এবং নতুন কিডনির জন্য জায়াগা তৈরি করা। এসব সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় চিকিৎসকদের। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফরিদাবাদের অমৃতা হসপিটালের ডাক্তাররা সফলভাবে সেই সকল বাধা অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছেন। 

পেশায় ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও)-এর বিজ্ঞানী দেবেন্দ্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন,  ২০০৮ সাল থেকে জটিল কিডনির অসুখে ভুগতে শুরু করেন তিনি। সপ্তাহে তিন বার ডায়ালিসিস করাতে হাসপাতালে যেতে হত। এর ফলে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন, শরীরের পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রেও প্রভাব পড়ছিল। ২০১০ সালে প্রথমবার কিডনি প্রতিস্থাপন হয় তাঁর। ২০১২ সালে দ্বিতীয়বার প্রতিস্থাপন হয়। ২০২২ সালে কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর দ্বিতীয়বার প্রতিস্থাপন করা কিডনিটি কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এর ফলে তাঁকে আবার ডায়ালিসিস শুরু করতে হয়। 

দেবেন্দ্র তৃতীয়বার কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন ডা. অনিল শর্মা এবং ডা. আহমেদ কামাল। অনিল বলেন, ''দু'বার ব্যর্থ কিডনি প্রতিস্থাপনের পরেও তৃতীয় প্রতিস্থাপন রোগীর স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। এর ফলে রোগী অনেক দিন সুস্থ জীবনযাপন করতে পারবেন। ২০২৩ সালে হাসপাতালে দাতার খোঁজে নাম লিখিয়ে যান দেবেন্দ্র। ২০২৫ সালের ৭ জানুয়ারি দাতার খোঁজ মেলে। জাতীয় অঙ্গ ও টিস্যু প্রতিস্থাপন সংগঠন (নোট্টো) দেবেন্দ্রর স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে তাঁকে অগ্রাধিকার দেয়। ৮ জানুয়ারি তাঁর কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। তাঁকে অস্ত্রোপচারের জন্য তৈরি করার জন্য ডাক্তারদের হাতে অল্প কয়েক ঘণ্টার সময় ছিল।''

কিন্তু দেবেন্দ্রর শরীর থেকে পুরনো কিডনিগুলি সরানো হল না কেন? এ বিষয়ে বেঙ্গালুরুর কাবেরী হাসপাতালের কিডনি প্রতিস্থাপন বিশেষজ্ঞ ডা. নিশ্চয় ভানুপ্রক্ষ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানান, কিডনি প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে, গ্রহীতার আসল এবং অকার্যকর কিডনি যথাস্থানে রেখে দেওয়া একটি সাধারণ অভ্যাস। জটিলতা এড়াতে নতুন কিডনি সাধারণত তলপেটে (ইলিয়াক ফোসা) স্থাপন করা হয়। আসল কিডনি সরিয়ে ফেললে রক্তপাত, সংক্রমণ এবং অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচারের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।