আজকাল ওয়েবডেস্ক: পহেলগাঁও জঙ্গি হানার পর থেকেই ভারতের একের পর এক পদক্ষেপে রীতিমতো কোণঠাসা পাকিস্তান। নয়াদিল্লির কূটনৈতিক চালে বেসামাল দেশের অস্তিত্বরক্ষায় তাই ভারতকে ক্রমাগত পরমাণু যুদ্ধের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে ইসলামাবাদ। এর মাঝে প্রতিবেশী দেশের অস্ত্রভাণ্ডারের করুণ দশার রিপোর্ট সামনে এসেছে।
সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, পাকিস্তানের সেনাবাহিনীতে কামান এবং গোলাবারুদের তীব্র ঘাটতি চলছে। এর ফলে তাঁদের প্রস্তুতি ব্যাহত হচ্ছে। এমনকি সংক্ষিপ্ত সংঘর্ষে পাক সেনার টিকে থাকার ক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা। একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে এএনআই জানিয়েছে, পাক সেনাবাহিনীর কাছে বর্তমানে মাত্র ৯৬ ঘন্টা যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মতো পর্যাপ্ত গোলাবারুদ রয়েছে।
এই ঘাটতি দেখা দিয়েছে কারণ, গত তিন বছর ধরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে একনাগাড়ে অস্ত্র সরবরাহ করে গিয়েছে পাকিস্তান। বিশেষ করে ১৫৫ মিমি আর্টিলারি শেল। যা পাকিস্তানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বব্যাপী চাহিদা এবং লাভজনক চুক্তির ফাঁদে পড়ে একটানা রপ্তানি বজায় রেখেছিল ইসলামাবাদ। যার ফলে এর শক্তিশালী M109 হাউইৎজার এবং BM-21 রকেট সিস্টেম অস্ত্রভাণ্ডারে অপ্রতুল হয়ে পড়েছে।
এই বিষয়ে এক কর্মকর্তা এএনআই-কে জানিয়েছেন, দেশের প্রধান অস্ত্র উৎপাদনকারী পাকিস্তান অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি (পিওএফ) পুরনো অবকাঠামো এবং সীমিত উৎপাদন ক্ষমতার কারণে পুনরায় চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম নয়। অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে পিওএফের অগ্রাধিকার থাকা সত্ত্বেও, বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা সক্ষম নয়।
পহেলগাঁও হামলার পর গত ২ মে রাওয়ালপিন্ডির সেনা সদর দপ্তরে কোর কমান্ডারদের নিয়ে একটি বিশেষ বৈঠক করে পাক ফৌজ। সূত্রের খবর, সেখানে অস্ত্রসঙ্কটের বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
প্রাক্তন সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া পূর্বে অর্থনৈতিক ও লজিস্টিক উভয়ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধে পাকিস্তানের সীমিত ক্ষমতা সম্পর্কে সতর্ক করেছিলেন।
দেশের অর্থনৈতিক সঙ্কট, আকাশছোঁয়া মুদ্রাস্ফীতি, ক্রমবর্ধমান ঋণ এবং বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার ক্রমশ কমতে থাকার ফলে জ্বালানি ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এমনকি সামরিক বাহিনীকে প্রশিক্ষণ স্থগিত এবং রেশন কমাতে হয়েছে।
নানা গোয়েন্দা রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, সম্ভাব্য যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে পাকিস্তান ভারতীয় সীমান্তের কাছাকাছি নতুন অস্ত্রভাণ্ডার নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। তবে বিশ্লেষকদের যুক্তি, পর্যাপ্ত রসদ না থাকায় এই ধরণের পদক্ষেপের কৌশলগত সম্ভাবনা খুবই কম।
