আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর থেকে নানা কারণে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। সেই দ্বন্দ্বের মাঝেই প্রথমবার সাক্ষাৎ হল দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের। থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে বিমস্টেক সম্মেলনে সাক্ষাৎ হল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূসের। করমর্দনও করলেন দুই দেশের প্রধান। সূত্রের খবর, বৈঠকও সারতে পারেন মোদি এবং ইউনূস। বেইজিংয়ের সাথে ঢাকার ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতার মধ্যে এই বৈঠকটি তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে হচ্ছে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে দিল্লি।

দেশব্যাপী আন্দোলনের পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লিগ সরকার উৎখাত হওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হয় বাংলাদেশে। এরপর থেকে দিল্লি ও ঢাকার মধ্যে সম্পর্ক ক্রমশ শীতল হয়ে ওঠে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ভারতে পালিয়ে যান। ক্ষমতা পরিবর্তনের পরের মাসগুলিতে, ভারত বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করে। ঢাকা জোর দিয়ে বলেছে, "বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা বাংলাদেশের সমস্যা"। এরই মাঝে চীনের সঙ্গে সখ্যতা বজার রাখতে গিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারত নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন ইউনূস। চীনা লগ্নি টানতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, 'ভারতের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত সাতটি রাজ্য, যাকে সাত বোন রাজ্য বলা হয়, সেগুলি সম্পূর্ণরূপে স্থলবেষ্টিত। তাদের সমুদ্রে পৌঁছনোর কোনও উপায় নেই। আমরা (বাংলাদেশ) সমগ্র অঞ্চলের (উত্তর-পূর্ব ভারত) সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক।' শুধু এখানেই শেষ নয়, চীনা অর্থনীতর সম্প্রসারণের সুযোগ হিসেবে উত্তর পূর্ব ভারতকে দেখা উচিত বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা ইউনূসের মন্তব্যের তীব্র বিরোধীতা করেছিলেন। এর আগে গত ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে মোদি চিঠি লিখেছিলেন ইউনূসকে। 

বৃহস্পতিবার বিমসটেক (বে অফ বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন) শীর্ষ সম্মেলনের আগে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পায়েটোংটার্ন সিনাওয়াত্রার আয়োজিত এক সরকারি নৈশভোজে প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসকে পাশাপাশি বসে থাকতে দেখা গিয়েছিল। মোদি ছাড়াও, বিমসটেক সম্মেলনে থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মায়ানমার এবং ভুটানের নেতারা অংশগ্রহণ করেন।