আজকাল ওয়েবডেস্ক: সূর্যের সবচেয়ে সক্রিয় অঞ্চল, সানস্পট AR4087, একটি শক্তিশালী X2.7-শ্রেণীর সৌর অগ্নিশিখা বিকিরণ করার পর, একটি বিশাল সৌর ঝড় পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে। যা এখন পর্যন্ত ২০২৫ সালের সবচেয়ে শক্তিশালী সৌরঝড় হতে চলেছে।
এরপরেই মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক মহাকাশ আবহাওয়া সংস্থাগুলি জরুরি সতর্কতা জারি করেছে। তারা জানিয়েছে, এর ফলে আর্কটিক সার্কেলের বাইরের অঞ্চলে রেডিও ব্ল্যাকআউট, জিপিএস ব্যবস্থায় ব্যাঘাত ঘটতে পারে। এছাড়াও মেরুজ্যোতি দেখা যেতে পারে।
আমেরিকা ন্যাশনাল ওশিয়ানিক অ্যান্ড অ্যামস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (NOAA) অনুসারে, X2.7-শ্রেণীর অগ্নিতরঙ্গটি সৌর অগ্নিতরঙ্গের সবচেয়ে ভয়াবহ শ্রেণীর। এটি মধ্যপ্রাচ্যে অস্থায়ী রেডিও ব্ল্যাকআউটের জন্য যথেষ্ট। এই উচ্চশক্তির বিস্ফোরণগুলি আলোর গতিতে ভ্রমণ করে, মাত্র আট মিনিটের মধ্যে পৃথিবীতে পৌঁছয় এবং পৃথিবীর আয়নোস্ফিয়ারের সংস্পর্শে এসে উচ্চ-ফ্রিকোয়েন্সি যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিমান সংকেত এবং উপগ্রহ কার্যক্ষমতাকে প্রভাবিত করে।
সূর্য বর্তমানে তার ১১ বছরের সৌর চক্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। যা সোলার ম্যাক্সিমাম নামে পরিচিত। এই সময়কালে সূর্যের চৌম্বকীয় মেরুগুলি উল্টে যায়। যা সানস্পটের কার্যকলাপ এবং সৌর ঝড়ের তীব্রতা বৃদ্ধি করে। ২০১৪ সাল থেকে শুরু হওয়া চক্রটি ২০২৫ সালে এসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই চক্রটির তীব্রতা ২০১৪ সালের আগের চক্রটির থেকেও বেশি।
A massive solar storm is heading toward Earth, threatening to disrupt communications, navigation systems, and power grids around the world.
— Keira Connolly (@keira_con)
NASA issued the warning after a powerful burst of energy from the sun last week, which measured as an X2.7-class solar flare, the highest… pic.twitter.com/DfKyKKXLwBTweet by @keira_con
এই সৌরঝড়ের ফলে সৌর প্লাজমার বিশাল মেঘ পৃথিবীতে আছড়ে পড়বে। যা ভূ-চৌম্বকীয় ঝড় সৃষ্টি করতে সক্ষম। এর ফলে পাওয়ার গ্রিড, নেভিগেশন সিস্টেমকে ব্যাহত হতে পারে। এমনকি পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা মহাকাশচারীদের জন্যও ক্ষতিকর হতে পারে।
নাসা সতর্ক করে দিয়েছে যে যদি AR4087 অথবা অন্য চারটি সক্রিয় সানস্পটের যে কোনও একটিতে আবার বিস্ফোরণ ঘটে তাহলে বিশ্বব্যাপী উপগ্রহ ব্যবস্থায় ত্রুটি, GPS-এ নেভিগেশন ত্রুটি এবং রেডিও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হতে পারে, বিশেষ করে পৃথিবীর সূর্যালোকিত দিকে।
বিমান সংস্থা এবং সামুদ্রিক শিল্পগুলিকে সতর্কতা অবলম্বণ করতে হবে। কারণ, সৌর বিকিরণ দীর্ঘ দূরত্বের যোগাযোগ এবং এমনকি বিমানের ইলেকট্রনিক্সেও প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে দুই মেরুর রুটে। যদিও বেশিরভাগ মানুষের উপর বড় কোনও প্রভাব পড়বে না। বিশেষজ্ঞরা ছোটখাটো বিভ্রাট বা নেভিগেশন এবং যোগাযোগে ব্যবস্থা সামান্য বিঘ্নের জন্য প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
এই সৌরঝড়ের ভাল দিকও রয়েছে। ২২ মে নাগাদ স্কটল্যান্ড, ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড এবং সম্ভবত উত্তর ফ্রান্সে মেরুজ্যোতি বা নর্দার্ন লাইটস (অরোরা বোরেলিস) দেখা যেতে পারে বলে জানিয়েছে ব্রিটেনের আবহাওয়া দপ্তর।
