আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতের অন্যতম নদী হল গঙ্গা। এই নদীকে যেমন একাধারে পবিত্র মনে করা হয়, তেমনই দেশের কৃষিকাজে এই নদীর অবদান ব্যাপক। নাসার মহাকাশচারী ডন পেটিট তাঁর অভিযানের সময় আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) থেকে তোলা গঙ্গা নদীর ব-দ্বীপের একটি সুন্দর ইনফ্রারেড ছবি শেয়ার করেছেন। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ছবিটি পোস্ট করেছেন, যেখানে বিশ্বের বৃহত্তম নদী ব-দ্বীপের একটি বিরল এবং আকর্ষণীয় রূপ দেখা যাচ্ছে। 

ছবিটিতে স্পষ্টভাবে পূর্ব ভারত এবং বাংলাদেশের কিছু অংশ জুড়ে বিস্তৃত ব-দ্বীপের বিশাল, উর্বর জমি দেখা যাচ্ছে। গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র বদ্বীপ, যাকে বেঙ্গল বদ্বীপ বা সুন্দরবন বদ্বীপও বলা হয়, এটি ১০০,০০০ বর্গকিলোমিটারেরও বেশি এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এবং বঙ্গোপসাগরে প্রবাহিত হয়।

এই এলাকা লক্ষ লক্ষ মানুষের আবাসস্থল। সমৃদ্ধ কৃষিজমি এবং বিভিন্ন ধরণের উদ্ভিদ ও প্রাণীর আবাসস্থল। এখানে বিখ্যাত সুন্দরবন ম্যানগ্রোভ বনও রয়েছে, যা ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবেও পরিচিত।

আরও পড়ুন: ‘বাংলা ভাষা এবং বাঙালির অপমান আমরা সহ্য করব না’, বললেন ‘গুজরাটি’ ইউসুফ

ডন পেটিট গঙ্গা নদীর ব-দ্বীপকে এমন সৌন্দর্য তুলে ধরার জন্য নিয়ার-ইনফ্রারেড ফটোগ্রাফি ব্যবহার করেছেন। যা এর সবুজ ভূদৃশ্য এবং নদীগুলিকে আকর্ষণীয় বিবরণের সঙ্গে তুলে ধরেছে।

ছবিটি অনলাইনে শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, “ভারত ও বাংলাদেশের উপর গঙ্গা নদীর বদ্বীপ, আইএসএস থেকে নিয়ার-ইনফ্রারেডে তোলা। এটি পৃথিবীর বৃহত্তম নদী বদ্বীপ।” এই কৌশলটি কেবল একটি দৃশ্যত অত্যাশ্চর্য ছবি তৈরি করে না বরং বিজ্ঞানীদের উদ্ভিদের স্বাস্থ্য, জলপ্রবাহ এবং ভূমির পরিবর্তনগুলি ট্র্যাক করতেও সাহায্য করে - যা এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাস্তুতন্ত্র অধ্যয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পোস্টটি দ্রুত সোশ্যাল মিডিয়া এবং বিজ্ঞান প্ল্যাটফর্মে প্রশংসা কুড়িয়েছে, অনেকেই ছবির পিছনের দক্ষতা এবং সৌন্দর্য উভয়েরই প্রশংসা করেছেন। পেটিট, তার অত্যাশ্চর্য মহাকাশ ফটোগ্রাফির জন্য সুপরিচিত, প্রায়শই পৃথিবীর ভূদৃশ্যের প্রশংসা করতে এবং পরিবেশের যত্ন নিতে মানুষকে উৎসাহিত করার জন্য তাঁর কাজ শেয়ার করেন ইন্টারনেটে।

?ref_src=twsrc%5Etfw">August 7, 2025

গঙ্গা ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী এবং হিন্দু ধর্মের একটি পবিত্র নদী। এটি হিমালয় থেকে উৎপন্ন হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। গঙ্গা নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ২,৭০৪ কিলোমিটার (১,৬৮০ মাইল)। এটি ভারতের জাতীয় নদীও বটে। গঙ্গার উৎপত্তি হিমালয় পর্বতমালার গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেকে। গঙ্গা নদীর অববাহিকা অঞ্চলটি কৃষি ও শিল্পের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গঙ্গা নদীর প্রধান উপনদীগুলি হল যমুনা, রামগঙ্গা, গোমতী, ঘর্ঘরা, সোন, ও কোসি। গঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত বিভিন্ন স্থান, যেমন বারাণসী, হরিদ্বার, প্রয়াগরাজ হিন্দুদের কাছে তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত। 

জলপ্রবাহের ক্ষমতা অনুযায়ী গঙ্গা বিশ্বের প্রথম ২০টি নদীর একটি গাঙ্গেয় অববাহিকার জনসংখ্যা ৪০ কোটি এবং জনঘনত্ব ১,০০০ জন/বর্গমাইল (৩৯০ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার)। এটিই বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল নদী অববাহিকা। 

গঙ্গা হিন্দুদের কাছে পবিত্র নদী। তারা এই নদীকে গঙ্গা দেবীজ্ঞানে পূজা করেন। গঙ্গার ঐতিহাসিক গুরুত্বও অপরিসীম। একাধিক পূর্বতন প্রাদেশিক ও সাম্রাজ্যিক রাজধানী (যেমন পাটলিপুত্র, কনৌজ, কাশী, এলাহাবাদ, মুর্শিদাবাদ, মুঙ্গের, নবদ্বীপ ও কলকাতা) এই নদীর তীরেই অবস্থিত।