রিয়া পাত্র


বাঙালির বারো মাসের চতুর্দশ পার্বণে রয়েছে দুই গুরুত্বপূর্ন নিয়ম, একেবারে সময় মেনে করা হয়। ঠিক যেমন সরস্বতী পুজোর অঞ্জলি, যার নড়চড় হওয়ার নেই, ঠিক তেমনটা আর কী। ভিড় বাড়বে, বই বিক্রি বাড়বে, কিন্তু সেসব একদিকে রেখেএই নিয়ম দু'টির কোনও অন্যথা নেই বইমেলায়। 

জানেন সেগুলি কী কী?

কলকাতা বইমেলার উদ্বোধনে হাতুড়ি পেটানো।

অনেকে ব্যাপারটাকে নিয়ে নানা মজার কথা বলে থাকলেও, তার পিছনে  রয়েছে নির্দিষ্ট কারণ। এই নির্দিষ্ট নিয়মের খোঁজ করতে গেলে, যেতেই হবে ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায়। এই বইমেলা বিশ্বের প্রথম বইমেলা। আর এই হাতুড়ি পেটানোর ইতিহাস আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় এসেছে এর হাত ধরেই। তবে কাহিনী একটু আলাদা। বিশ্বের প্রথম বইমেলা হলেও, ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা  সাধারণের জন্য নয়। ওই বইমেলায় মূলত কেনাবেচা হয় প্রকাশক এবং পাইকারি খুচরো বিক্রেতাদের। সাধারণ মানুষ কেবল দেখতে পারেন। সেখানে বই, সত্ব-সহ যে কোনও  বিষয়ে যে দর ওঠে, এবং এক জায়গায়  গিয়ে সেই দর থেমে যায়, সহজ ভাষায় যাকে অকশন বলা হয়, ওই দর থেকে যাওয়ার পর হাতুড়ি পেটানো হয়। সেখান থেকেই বইমেলার শুরুতে হাতুড়ি পেটানোর বিষয়টি এসেছে বলে মনে করা হয়।

এই তো গেল হাতুড়ি পেটানোর কথা। যাঁরা বইমেলাপ্রেমী, তাঁরা জানেন, বইমেলা শেষের ঠিক কয়েক মুহূর্তে আগের ওই ঘণ্টাধ্বনি। যে শব্দ নিশ্চিত করে দেয়, সে বছরের মতো আনুষ্ঠানিক বইমেলার সমাপ্তি সেখানেই। গিল্ড হাউসের সামনে ওই ঘণ্টাধ্বনি শুনে অনেকেই কেঁদে ফেলেন আবেগে, মনখারাপ নিয়ে করুণাময়ী ছাড়েন। কিন্তু কেন এই রীতি?

ওই ঘণ্টা ধ্বনি মূলত বিগ বেনের ঘণ্টাধ্বনি। ময়দান থেকেই এই নিয়ম চলে আসছে বলে জানা যায়। বিগ বেন থেকেই এই ঘণ্টাধ্বনি রেকর্ড করে আনা হয়েছে, তেমনটাই জানাচ্ছে গিল্ড।