আজকাল ওয়েবডেস্কঃ শারীরিক হোক কিংবা মানসিক, এক কাপ ধোঁয়া ওঠা চা-কফিতে চুমুক দিলেই চাঙ্গা লাগে। সমস্ত ক্লান্তি দূর হয়ে বেশ ফুরফুরে থাকে মনও। আজকাল স্বাস্থ্য সচেতনতা বেড়েছে। অনেকেই ‘নো সুগার’ ডায়েটের দিকে ঝুঁকেছেন। দুধ ছেড়ে ব্ল্যাক কফি কিংবা লিকার চায়ে চুমুক দেন। কিন্তু তাতেও মিষ্টি ছাড়তে পারেন না। এদিকে চিনি যে শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর তা বর্তমানে কম-বেশি সকলেরই জানা। চিনি খাওয়ার অভ্যাসে শরীরে জাঁকিয়ে বসে ডায়াবেটিস, চড়চড়িয়ে বাড়ে ওজন, হানা দেয় একাধিক জটিল রোগ। এমনকী বিশেষজ্ঞদের মতে, অ্যালকোহল ও তামাকের মতো চিনিও আসক্তিকর। গবেষণায় প্রমাণিত, অতিরিক্ত চিনি খেলে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। কিন্তু চিনি 'বিষ' জেনেও ক'জনই বা লোভ সামলাতে পারেন! আসলে রোজকার জীবনের খাদ্যতালিকায় কোনও না কোনওভাবে চিনি থাকেই। বিশেষ করে মিষ্টি ছাড়া চা-কফি খাওয়া ভাবতেই পারেন না অনেকে। এদিকে স্বাস্থ্যের কথা ভেবে চিনি খাওয়াও চলবে না। তাহলে উপায়? মিষ্টির স্বাদ আনতে চিনির বিকল্প কী কী ব্যবহার করতে পারেন, রইল হদিশ-

* গুড়- চিনির বদলে গুড় খেতেও অনেকে পছন্দ করেন। এটি একটি অপরিশোধিত চিনি, যা ক্যালশিয়াম এবং আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম, পটাশিয়াম সমৃদ্ধ। এই খনিজগুলি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। বিভিন্ন সংক্রমণ থেকেও রক্ষা করে। গুড় খেলে হজমশক্তিও ভাল হয়। গুড়ের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং ফোলেট রয়েছে যা শরীরে হিমোগ্লোবিনের চাহিদা মেটায়। ফলে গুড় খেলে অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতার সমস্যা দেখা দেয় না। 

 

আরও পড়ুনঃ চেনা মশলার পানীয়ই কমাবে ঋতুস্রাবের অসহ্য যন্ত্রণা! ওষুধ ছাড়ুন, এই ঘরোয়া টোটকার জাদুতে পাবেন স্বস্তি

 

* ম্যাপল সিরাপ- চিনির অন্যতম বিকল্প হল ম্যাপল সিরাপে। স্বাদে তো বটেই, স্বাস্থ্যগুণেও ম্যাপল সিরাপ বেশ এগিয়ে। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদানে ভরপুর ম্যাপল সিরাম যা শরীরের প্রদাহ দূর করে। একই সঙ্গে প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়িয়ে তোলে। চিনির বদলে চা-কফিতে ম্যাপল সিরাপ মেশাতে পারেন।

* মধু- অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং ইনফ্লেমেটরি উপাদান সমৃদ্ধ মধুও চা-কফিতে মেশাতে পারেন। এটি মিষ্টির ছোঁয়া আনা ছাড়াও শরীর সুস্থ রাখতেও সাহায্য করবে। মধুতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ঠান্ডা, কাশি, জ্বরের মতো বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়ক মধু। 

* স্টেভিয়া- একটি গাছের পাতা হল স্টেভিয়া। এর অনেকগুলো পাতা একসঙ্গে মেশালে তা চিনির থেকেও মিষ্টি হয়। এই পাতায় ক্যালোরি নেই আর স্বাদে মিষ্টি। বাজারে এই স্টেভিয়ার ট্যাবলেট বা পাউডার আকারে পাওয়া যায়।  চা, কফি, মিষ্টি, দই, বেকারি ফুড, আইসক্রিম, কোমল পানীয়সহ এ জাতীয় নানা খাদ্যপণ্য তৈরিতে স্টেভিয়া ব্যবহার করা যায়। এর কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। অনেকেই আজকাল চিনির বিকল্প হিসেবে এই পাতা ব্যবহার করেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, দেহের ওজন অনুযায়ী আপনি প্রতিদিন ৪ মিলিগ্রাম স্টেভিয়া গ্রহণ করতে পারেন। কিন্তু উপকারিতা থাকলেও চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া স্টেভিয়াকে রোজের ডায়েটে যোগ করা উচিত নয়।

* কোকোনাট সুগার- নারকেল থেকে তৈরি কোকোনাট সুগারে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। ফলে ডায়াবেটিস থাকলে চিনির অন্যতম বিকল্প হল কোকোনাট সুগার। চিনির বদলে সামান্য পরিমাণে এই সুগার ব্যবহার করলেই চা-কফি মিষ্টি হয়।